সাংবাদিক সমাজ ভালো কাজে জনমত গঠনে ভূমিকা রাখবে: ঢাকা জেলা প্রশাসক

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:৪৪ পিএম

সাংবাদিক সমাজ ভালো কাজে জনমত গঠনে ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ঢাকা জেলা প্রশাসক মো. তানভীর আহমেদ।
সোমবার বিকালে কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির (সিআরইউ) কার্যালয়ে সংগঠনের নতুন কার্যনির্বাহী কমিটির অভিষেক ও বিদায়ী কমিটির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আশা ব্যক্ত করেন।
জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ বলেন, ‘সাংবাদিকরা সমাজের দর্পণ। সাংবাদিকদের নিউজগুলো আমি সুশাসন ও নানা অভিযানে কাজে লাগিয়েছি। তাদের তথ্যের মাধ্যমে অনেক অ্যাকশন নিয়েছি। এজন্য রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায়ে মিডিয়া উইংস থাকে। কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। আমাদের কাজে সহযোগিতা করেন।’
জেলা প্রশাসক তার কিছু পরিকল্পনার কথাও জানান। এবিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার কিছু পরিকল্পনা আছে, এর ভেতর দ্রব্য মূল্যহ্রাস। ঢাকার বিভিন্ন খাস জমিতে জনতার বাজার হবে। আমাদের উদ্দেশ্য হলো বাজার কন্ট্রোল করা। চাইলেই কোনো সিন্ডিকেট যেন পণ্যের দাম বৃদ্ধি করতে না পারে। আমরা ঢাকার ২১টা খাল উদ্ধারের জন্য পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। বাউনিয়া খালের মাধ্যমে আমরা এ কার্যক্রম শুরু করেছি। সাংবাদিক সমাজ ভালো কাজে জনমত গঠনে ভূমিকা রাখবে এ প্রত্যাশা করছি।’
পুরান ঢাকায় আসতে অনেক সমস্যা হয়। অনেক সময় লাগে। সচিবালয় থেকে সদরঘাট পর্যন্ত যেন ফ্লাইওভার করা যায় সেটার জন্য আমরা প্রস্তাবনা দেওয়ার কথা জানান তিনি।
এছাড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নতুন ভবন করে জায়গা মেনেজমেন্ট করার পরিকল্পনা আছেও বলে জানান তানভীর আহমেদ। তিনি বলেন, ‘তখন বিশৃঙ্খলভাবে ছড়িয়ে থাকা ভেন্ডার (দলিল লেখক) ও কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির জন্য আলাদা বড় পরিসরে অফিস করার পরিকল্পনা আমরা নেব।’
ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, ‘ওয়ান ইলেভেনের সময় থেকেই আদালত পাড়ায় সাংবাদিকদের উপস্থিতি বেড়েছে। সে সময় দেখেছি বসার জায়গা না থাকায় সাংবাদিকরা সারা দিন গাছতলায় অতিবাহিত করলেও নিরপেক্ষতার জন্য কখনো আইনজীবীদের থেকে সুবিধা নিতেন না। তখন থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত কোর্টে কী হচ্ছে তা জাতির কাছে তুলে ধরেন। সাংবাদিকদের মাধ্যমে রাষ্ট্রে বার্তা যায়। ছাত্র আন্দোলনেও সাংবাদিকদের ভূমিকাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফ্যাসিস্ট আসামিদের আদালতে আনা হলে সাংবাদিকরা তাদের অবস্থা সম্পর্কে তুলে ধরছেন। কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। তাদের রুমের স্পেস বড় করাসহ অফিসের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির বিষয়টি জেলা প্রশাসক মহোদয় দেখবেন বলে প্রত্যাশা রাখছি।’
ঢাকা আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটির সভাপতি খোরশেদ মিয়া আলম বলেন, ‘আদালত পাড়ার নিউজ আপনারা (সাংবাদিক) কাভার করেন। যার যে দলই হোক, সবাই সত্য প্রকাশ করবেন। ঢাকা আইনজীবীদের সঙ্গে সাংবাদিকদের সমন্বয় থাকবে বলে আশা করি। কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির সংগঠনটি আরও বড় হবে। অফিস রুম যেন আরও বড় হয় সেজন্য আমরা ঢাকা আইনজীবী সমিতি আপনাদের পাশে থাকব। ছাত্র-জনতাদের নতুন বাংলাদেশের যে আশা আকাঙ্ক্ষা তা আপনারা বজায় রাখবেন প্রত্যাশা করছি।’
কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট প্রশান্ত কুমার কর্মকার বলেন, ‘হাঁটি হাঁটি পা পা করে ৪ বছর অতিবাহিত করল কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটি। প্রথমে ১২ জন দিয়ে শুরু। এখন প্রায় শতাধিক সাংবাদিক এ সংগঠনে। এ সংগঠনে পেশাদার মেইনস্ট্রিম গণমাধ্যমের সাংবাদিকরাই কাজ করেন। সবাই নিরপেক্ষ জায়গা থেকে পেশাদারিত্ব বজায় রাখেন। কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির সাংবাদিকরা জাতীয় পর্যায়ে অনেক বড় বড় সংবাদ প্রকাশ করেন। আমি প্রত্যাশা করব- জেলা প্রশাসক যেন পেশাদার এ সংগঠনের জায়গার পরিধি বৃদ্ধি করেন। এছাড়া ডিসি প্রসিকিউশন বিভাগের প্রতি অনুরোধ জানাব- আদালতে সংবাদকর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টা দেখবেন।’
সংগঠনের সদ্য বিদায়ী সভাপতি হাসিব বিন শহিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম, কোষাধক্ষ্য আব্দুর রশিদ মোল্লা, পুলিশের অপরাধ ও প্রসিকিউশন বিভাগের এডিসি নাসির উদ্দিন, বর্তমান সভাপতি লিটন মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক মামুন খানসহ নেতারা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা।