‘এমফিল ও পিএইচডির ক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটির ভূমিকা ন্যক্কারজনক’

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৪৪ পিএম

বর্তমানে এমফিল ও পিএইচডির ক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটির ভূমিকা ন্যক্কারজনক বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী প্রফেসর এম আমিনুল ইসলাম। তিনি আরও বলেছেন, ছাত্রছাত্রীরা জ্ঞানবিজ্ঞানে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। রোববার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে (আমাই) অডিটোরিয়ামে আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস-২০২৫ উপলক্ষ্যে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আমিনুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গণিত ও বিজ্ঞানের ওপর জোর দিতে হবে। গণিত ও বিজ্ঞানের বিভিন্ন গবেষণায় শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করতে হবে। তাদেরকে গণিত ও বিজ্ঞান অলিম্পিয়ার্ড প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণে সুযোগ তৈরি করতে হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী বলেন, সমগ্র পৃথিবীজুড়ে এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে হৈচৈ পড়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উদ্ভাবন ও বহুমাত্রিক প্রয়োগ নিয়ে বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় আগামী দিনে বিশ্বকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য আমাদের বিশ্বিবদ্যালয়গুলোকে এআইয়ের উপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে। যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ওপর মৌলিক, তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক গবেষণা করে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে গড়ে তোলা যায়।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিককালে ছাত্রছাত্রীরা বইপড়া থেকে দূরে চলে এসেছে। তারা বইপড়ে জ্ঞান অর্জন করে অ্যাসাইনমেন্ট তৈরি ও প্রশ্নের উত্তর প্রদান না করে ছাত্রছাত্রীরা চ্যাটজিপিটির মাধ্যমে অ্যাসাইনমেন্ট তৈরি ও প্রশ্নপত্রের উত্তর প্রদানে খুব বেশি ঝুঁকে পড়েছে। এটা তাদের চিন্তা ও চেতনাকে নিয়ন্ত্রণ করে ফেলছে। তারা জ্ঞানবিজ্ঞানে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, বর্তমানে এমফিল ও পিএইচডির ক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটির ভূমিকা ন্যক্কারজনক। এসব কারণে আমাদের দেশের উচ্চশিক্ষায় ডিগ্রিধারী বেকারের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী বলেন, অসাধারণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হচ্ছে যে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ছাত্রছাত্রীরা চার বছরের অনার্স কোর্সের মধ্যে তিনবছর অনার্স পড়াশুনা এবং একবছর ডিপ্লোমা পড়াশোনা করবে। এক্ষেত্রে তাদের দুটি সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। একটি হলো অনার্স ও অন্যটি ডিপ্লোমা সার্টিফিকেট। আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের কর্মেক্ষেত্র তৈরির জন্য কারিগরি ও পলিটেকনিক শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করতে হবে।
সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন- গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশন (বিএনসিইউ) এবং ইউনেস্কো ঢাকা অফিসের যৌথ উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাইদুর রহমান। আলোচক ছিলেন- কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলাম, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
এছাড়া সম্মানিত অতিথি ছিলেন- হেড অব অফিস অ্যান্ড ইউনেস্কো রিপ্রেজেন্টেটিভ টু বাংলাদেশ সুজান ভাইজ। সভায় সভাপতিত্ব করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব ও বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের সেক্রেটারি জেনারেল সিদ্দিক জোবায়ের।