Logo
Logo
×

জাতীয়

সংস্কার কমিশনের অপেক্ষায় থাকবে ইসি

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪:৩০ এএম

সংস্কার কমিশনের অপেক্ষায় থাকবে ইসি

‘জাতীয় সংসদের নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন’ এবং ‘ভোটার তালিকা আইন’র খসড়া আরও যাচাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। আইন দুটি সংশোধনের জন্য নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

তবে সীমানা নির্ধারণ আইনের ‘৮’ ধারায় নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা কমানোর বিদ্যমান বিধান সংশোধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের তৃতীয় সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে নির্বাচন ভবনে এ সভা হয়। সভায় নির্বাচন কমিশনার ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অংশ নেন।

বৈঠকের সিদ্ধান্তের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, ভোটার তালিকা আইন পর্যালোচনা হয়েছে। এটা অধিকতর পর্যালোচনা দরকার। কমিটিকে পর্যালোচনার জন্য সময় দেওয়া হয়েছে। এছাড়া জাতীয় নির্বাচনে সীমানা নির্ধারণ আইন পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই আইনের দুটি বিষয় সমস্যার সৃষ্টি করছে। বর্তমানে জনসংখ্যার ভিত্তিতে সীমানা নির্ধারণ হচ্ছে। আমরা এটাকে জনসংখ্যার পাশাপাশি ভৌগোলিক অবস্থা ও অবস্থান, সর্বশেষ জনশুমারি ও ভোটার সংখ্যার সামঞ্জস্য রেখে সীমানা নির্ধারণ করতে চাচ্ছি। এর যৌক্তিকতা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমাদের দেশে মানুষের শহরমুখী একটি প্রবণতা রয়েছে। শুধু জনসংখ্যার ভিত্তিতে সীমানা নির্ধারণ করা হলে শহরের আসন বাড়তে থাকবে এবং গ্রামে কমতে থাকবে। তাহলে এটা অংশগ্রহণমূলক হবে না বলে কমিশন মনে করে। এছাড়া আইনের ‘৮(৩)’ উপধারায় একটি টাইপিং মিসটেক আছে বলে আমরা মনে করি। আমরা এটা সংশোধনের জন্য সরকারের কাছে পাঠাব। তিনি বলেন, আমাদের কাছে এই মুহূর্তে সীমানা নির্ধারণের জন্য ৪১টি আসনের ২৪৮টি আবেদন পড়েছে। সংস্কার কমিশন থেকে কী ধরনের প্রস্তাব আসে এবং আমাদের কী সিদ্ধান্ত আসে তারপরে এগুলো সমাধান হবে। এই মুহূর্তে এগুলো পেন্ডিং রয়েছে।


প্রবাসীদের ভোটাধিকার ও জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা : ইসির বৈঠকে প্রবাসীদের জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা সহজ ও প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত জানিয়ে কমিশনার সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, প্রবাসীদের ভোটার করার ক্ষেত্রে আমরা অনেক ধরনের ডকুমেন্ট চেয়ে থাকি। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, পাসপোর্ট এবং জন্ম নিবন্ধনের ওপর ভিত্তি করে ভোটার করা যাবে। বাকি কাগজপত্র ঐচ্ছিক। তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রবাসীদের ভোটিং পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি তিনটি পদ্ধতি আমাদের সামনে আছে। একটি হলো পোস্টাল ব্যালট, যদিও ওটা খুব একটা কার্যকরী নয়। দ্বিতীয়টা হচ্ছে প্রক্সি ভোটিং। এই বিধান বিভিন্ন দেশে আছে। আর তৃতীয় অপশন হচ্ছে অনলাইনে ভোটার ব্যবস্থা। কিন্তু অনলাইনের এই ভোটের ব্যবস্থাটি খুব সহজ নয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলাপ করেছি। তারাও এর প্রয়োগ সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমরা প্রথম দুটো উপায়কে উন্নত করব এবং অনলাইন ভোটিং আমরা আরও পর্যালোচনা করব। পরে অনলাইন ভোটিংয়ের ওপর একটা পাইলটিং করব, যে এটা সম্ভব কিনা।


সংস্কার কমিশনের সঙ্গে মতপার্থক্য নেই : সংস্কার কমিশনের সুপারিশের মধ্যে ইসির সীমানা নির্ধারণ এবং ভোটার তালিকা আইন সংশোধন প্রস্তাব কোনো ধরনের জটিলতা তৈরি করবে না বলে মনে করে ইসি। এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার সানাউল্লাহ বলেন, এখানে কোনো ডুপ্লিকেশন অব এফার্ট রয়েছে বলে মনে হয় না। এটা আমরা নিজেরা এক্সারসাইজ করছি। আমি মনে করি, আমাদের এখান থেকেও কোনো ইনপুট দেওয়া হলে ইট উইল বি ফারদার ইনফোর্স। এটার সঙ্গে কনট্রাডিকশনের কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, সব বিষয় বিভিন্ন কমিটিতে রিভিউর জন্য দিয়েছি। যাতে আমরাও যেন প্রস্তুত থাকতে পারি। যাতে আমাদের কাছে মতামত চাওয়া হলে তাৎক্ষণিকভাবে বলতে পারি। সংস্কার কমিশনের সুপারিশ পেন্ডিং রয়েছে। এটার ওপর কী সিদ্ধান্ত আসে দেখতে হবে। তারপরে এক্সারসাইজটা শুরু করব। সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো কী আসে ইসিকে সে পর্যন্ত ওয়েট করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা পরিবর্তিত পরিস্থিতির মধ্যে আছি। জাতির চাহিদা সংস্কার। আমরা এর বাইরে নয়।

নির্বাচন কমিশনের সুপারিশ ইসির স্বাধীনতা খর্ব করবে-সিইসির ওই বক্তব্যের বিষয়ে আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ জানান, সংস্কার কমিশনকে চিঠি দেওয়ার কিছু নেই। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অফিসের মাধ্যমে ইসি অবজারভেশন জানাবে। তিনি বলেন, সরকারের কাছে আমাদের চ্যানেলে আমাদের অবজারভেশন (সারাংশের ওপর) দেব। এ বিষয়ে কমিশন সিদ্ধান্ত নেব, খুব শিগগির।

১৭২ টাকা দরে স্মার্ট কার্ড কিনবে ইসি : ইসির বৈঠকে ১৭২ টাকা দরে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার সানাউল্লাহ বলেন, সেনাবাহিনী ১৭২ টাকা করে কার্ড দিতে রাজি হয়েছে। সে অনুযায়ী কমিশনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৪০৬ কোটি টাকায় যত কার্ড হয়, সেগুলো তাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম