তফসিলের সময় নিবন্ধিত দলগুলো নির্বাচনে অংশ নেবে: ইসি সানাউল্লাহ
রংপুর ব্যুরো
প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৪৪ পিএম
বিচারিক এবং রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। ওই সময় যে নিবন্ধিত দল থাকবে, সেই দল নিয়েই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তার আগে বলা যাবে না কারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে আর কারা পারবে না। এটি একটি বিচারিক প্রক্রিয়া ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞার বিষয়, সিদ্ধান্তের বিষয়। এখানে একটা ঐকমত্যের বিষয়ও আছে।
রংপুরে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
এ সময় তিনি আরও বলেছেন, অতীতে প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের কারণে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। আর সেখান থেকে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনে উঠে আসার জন্য যা যা করা দরকার বর্তমান নির্বাচন কমিশন সেটা করবে। এজন্য সব উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।
রোববার রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ভোটার হালনাগাদ বিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ও সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আজিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ সময় বক্তব্য রাখেন- রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল ও পুলিশ সুপার আবু সাইম।
মতবিনিময় সভায় যোগ দিয়ে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, জুন মাসের মধ্যেই ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হবে। আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে নতুন ভোটাররা তালিকাভুক্ত হবেন; তবে এর মাঝে কোনো আইন দ্বারা তাদের তালিকাভুক্ত করার বিষয় থাকলে সেটাও করতে হবে। ভোটার হালনাগাদ প্রক্রিয়া একটি স্বচ্ছ নির্বাচন করার অংশ। একটি সুষ্ঠু অবাধ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সবাইকে স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করারও নির্দেশনা দেন তিনি।
পরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন নির্বাচন কমিশনার সানাউল্লাহ। তিনি বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা যা করা প্রয়োজন তাই করা হবে। যাতে নির্বাচনের সময়ে নিবন্ধিত সব দলই সমভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে। কারো দৃষ্টিতে কোনো দলকে বিশেষ সুযোগ দেওয়ার কোনো সুযোগ নাই।
তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠান হিসেবে শুধু পুলিশ নয়, সব প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। এর নেপথ্য কারণ প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন। সেটা নির্বাচন কমিশন থেকে শুরু করে সবাই আমরা উপলব্ধি করছি। আমাদের সরবার ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করতে হবে। এটাই এখন আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছি। সেটার একমাত্র উপায় হচ্ছে সুষ্ঠু নির্বাচন। আমি নিশ্চিত সেটা সবাই আমরা করতে বদ্ধপরিকর। এর বিকল্প কোনো কিছু নেই।
নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, তফসিল ঘোষণার সময় পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। দেখতে হবে সার্বিক রাজনৈতিক ও বিচারিক প্রক্রিয়া কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়। সেই সময় যারা নিবন্ধনভুক্ত থাকবে তাদের নিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সুতরাং আগে থেকে কোন কিছু বলা যাবে না, কারা নির্বাচন করতে পারবেন। কারা নির্বাচন করতে পারবে না।
তিনি বলেন, আমরা নিশ্চিত করব, আমাদের যেসব অফিসার আছেন তাদের মধ্যে থেকে বেছে যারা নিরপেক্ষ এবং কাজ করার মতো সাহসী তাদেরই আমরা নির্বাচনে যুক্ত করব। শুধু নির্বাচনে যুক্ত করাই না, তাদের সম্পূর্ণ ক্ষমতায়ন করব। যাতে তারা স্বচ্ছভাবে নির্বাচনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে যদি সরকার আগে বা পরে কিছু সংখ্যক স্থানীয় সরকার নির্বাচন করতে চায়। তাহলে আমরা সরকারকে সহায়তা করব। আমরা আগেই বলেছি জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইভিএমএ হবে না। তবে অন্যান্য নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার হবে কিনা সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
পরে তিনি রংপুর মহানগরীর লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভোটার তালিকা হালনাগাদ প্রক্রিয়া কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। এরপর তিনি কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও নীলফামারীতে মতবিনিময় সভা এবং ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।