Logo
Logo
×

জাতীয়

রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী

আ.লীগের দোসরদের সঙ্গে আপস শহিদদের সঙ্গে বেইমানি

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৩২ পিএম

আ.লীগের দোসরদের সঙ্গে আপস শহিদদের সঙ্গে বেইমানি

সিনিয়র সচিব পদমর্যাদার বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী বলেছেন, আওয়ামী দোসরদের সঙ্গে আপোস হলে জুলাই বিপ্লবের শহিদদের সঙ্গে বেইমানি করা হবে। এদেশের ছাত্র-জনতা তা কোনোভাবেই মেনে নেবে না। বাংলাদেশের মাটিতে আর কোনো ফ্যাসিবাদের  জায়গা হবে না।  

রোববার সিলেট সার্কিট হাউসে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

সিলেট জেলা প্রশাসনের আয়োজনে মতবিনিময় সভায় সিলেটের বিভিন্ন প্রশাসন, রাজনৈতিক, পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদের সভাপতিত্বে বক্তব্যে আনসারী আরও বলেন, ‘অনেকে অভিযোগ করেন-অনেক গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এখনো ফ্যাসিবাদের দোসররা ঘাপটিমেরে বসে আছে। তবে অসংখ্য মীর মদন এবং মোহনলালের মধ্যে কিছু জগতশেট ও মীর জাফরের আনাগোনা কোনো প্রভাব ফেলতে পারবে না। সচিবালয়ে আগুনের ঘটনায় কারা জড়িত সে বিষয়ে সুচারুরূপে তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘সচিবালয়ের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। যেখানে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা থাকার কথা। সেখানে আগুনে সবকিছু পুড়ে যাবে তাতে মানুষের মধ্যে প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক। বিষয়গুলো যথাযথভাবে চিহ্নিত করতে হবে।’

বাংলাদেশের সরকার প্রধান হয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনুসের বাড়তি পাওনা কিছু নেই উল্লেখ করে মুশফিক বলেন, ‘সমগ্র দুনিয়ার কেন্দ্রবিন্দুতে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুস। জাতির প্রয়োজনে তিনি সামনে এসে দেশের সরকারপ্রধানের দায়িত্ব নিয়েছেন।’

ড. ইউনুস প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘কিছুদিন আগে নিউইয়র্ক টাইমস তাকে নিয়ে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। নিউইয়র্কের প্রেসিডেন্ট বা প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের নিয়ে এ ধরনের অনুষ্ঠান হয়। তাকে প্রশ্ন করতে গিয়ে ঘাম ঝরাতে হয়েছে সেই সেলিব্রেটি সাংবাদিককে।

মুহাম্মদ ইউনুসের থ্রি-জিরো থিওরি সারা দুনিয়া গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে মুশফিকুল বলেন, ‘জাতিসংঘে তার বক্তৃতা সারা পৃথিবীর নেতারা মনোযোগ দিয়ে শুনেন। জাতিসংঘের সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল এই থ্রি-জিরো থিওরি গ্রহণ করেছে। দক্ষিণ কোরিয়া, ফ্রান্স এই পদ্ধতিকে নিজেদের উন্নয়নের রূপরেখায় যুক্ত করেছে। কিন্তু অতীতের ফ্যাসিবাদী  সরকার তাতে পাত্তা না দিয়ে বিদেশের মিশনগুলোকে-বঙ্গমাতা-বঙ্গভ্রাতা দিবস পালনে ব্যস্ত রেখেছিল।

জুলাই বিপ্লবে শহিদদের স্মরণ করে বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের ফলে বিপ্লব পরবর্তী সময়ে মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নিতে পারছেন। সুতরাং তাদেরকে স্মরণ করতে হবে, মূল্যায়ন করতে হবে।’

মুশফিকুল ফজল আক্ষেপ করে বলেন, ‘জাতিকে ফ্যাসিবাদের করদ থেকে মুক্ত করার জন্য যারা জীবন দিতে পিছপা হয়নি। জাতীয় বিপ্লবে গিয়ে তারা পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, সেসব ছাত্র-জনতা এখনো তাদের চিকিৎসার জন্য আকুতি জানাতে হবে কেন? তারা আমাদের জাতীয় বীর।’ বিষয়টি যাতে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয় সে জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।  

নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সবাই জানেন এটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। জনগণের আমানতদারী হাতে তুলে দেওয়া পবিত্র দায়িত্ব তারা কাঁধে নিয়েছেন। ১৫ বছরের জঞ্জাল এবং পচাগলা নির্বাচনি ব্যবস্থা থেকে তুলে আনতে যে সময় টুকু প্রয়োজন সে সময় সরকারকে দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন আন্তর্জাতিক পরিসরে ইতোমধ্যে আলোচিত এই কূটনীতিক।

সভায় সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মোহাম্মদ রেজাউন নবী, মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ রেজাউল করিম, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মো. মুশফেকুর রহমান, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর সাইফুল

সিলেট মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী, জেলা জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, মহানগর নায়েবে আমির ড. নুরুল ইসলাম বাবুল, সিলেটের অন্যতম ছাত্র সমন্বয়কারী দেলওয়ার হোসেন শিশির, বাচিক শিল্পী সালেহ আহমদ খসরু, অ্যাডভোকেট আব্দুল মুকিত অপি, তাহসিন শারমিন তামান্না প্রমুখ।

 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম