ব্যাংক হিসাব জব্দ ও সরকারের অসহযোগিতার অভিযোগ
চট্টগ্রামে এস আলমের ৯ কারখানা বন্ধ
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:২৬ পিএম
চট্টগ্রামে এস আলম গ্রুপের ৯টি কারখানা অনির্দষ্টিকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে কারখানা বন্ধের নোটিশ টাঙানো হলে শত শত শ্রমিক বিক্ষোভ করেন। কর্তৃপক্ষ বলছে, ব্যাংক হিসাব জব্দ করায় তারা শিল্পের কাঁচামাল আমদানি করতে পারছেন না। এছাড়া পদে পদে সরকারের অসহযোগিতার কারণে তারা কারখানা চালু রাখতে পারছেন না।
বন্ধ ঘোষিত কারখানাগুলোর মধ্যে
উল্লেখযোগ্য হলো এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ,
এস আলম পাওয়ার প্ল্যান্ট লিমিটেড, এস আলম কোল্ড রোল স্টিলস লিমিটেড, এস আলম পাওয়ার
জেনারেশন লিমিটেড, ইনফিনিটি সি আর স্ট্রিপস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, এস আলম ব্যাগ ও চেমন
ইস্পাত লিমিটেড। চট্টগ্রামের কর্ণফুলী, আনোয়ারা ও বাঁশখালী উপজেলায় এসব কারখানা অবস্থিত।
কারখানার সামনে টাঙানো এস আলম
গ্রুপের মানবসম্পদ ও প্রশাসনের প্রধান মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিনের স্বাক্ষরিত নোটিশে
বলা হয়, কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে অনিবার্য কারণবশত বুধবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না
দেওয়া পর্যন্ত কারখানাগুলো বন্ধ থাকবে। তবে কারখানার নিরাপত্তা, সরবরাহ ও জরুরি বিভাগ
খোলা থাকবে।'
নোটিশের বিষয়ে জানার জন্য এস
আলম কর্তৃপক্ষের একাধিক কর্মকর্তাকে ফোন করা হলেও কেউই আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলতে অপরাগতা
প্রকাশ করেন। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, গ্রুপের বিভিন্ন
ব্যাংক অ্যাকাউন্ড জব্দ করা হয়েছে। ব্যাংকগুলো সহযোগিতা করছে না। বিশেষ করে নভেম্বর
থেকে নতুন করে এলসি করা বা ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনায় অসহযোগিতা করে আসছে সব ব্যাংক।
এ কারণে তারা শিল্পের কাঁচামাল আমদানি করতে পারছেন না। উত্পাদন অব্যাহত রাখা সম্ভব
হচ্ছে না। তাই নিরুপায় হয়ে কারখানাগুলো বন্ধ ঘোষণা করতে হয়েছে।
কর্ণফুলী থানার এক কর্মকর্তা
যুগান্তরকে বলেন, এস আলমের ৯টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কয়েকটি কারখানায় শ্রমিক
বিক্ষোভ হয়েছে। কারখানা খোলার আশ্বাস দিয়ে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে শ্রমিকদের
বকেয়া বেতন দিয়ে বিদায় করেছে কর্তৃপক্ষ। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
বন্ধ ঘোষণার নোটিশ দেখে কারখানাগুলোর
শ্রমিকদের অনেকেই হতাশ হয়ে পড়েন। মইজ্জারটেক এলাকায় অবস্থিত এস আলম কোল্ড রোল স্টিল
মিলে শত শত শ্রমিক কারখানা চালু করতে বিক্ষোভ করেন। অবিলম্বে কারখানা চালু না করলে
আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দেন তারা।
মঙ্গলবার রাত ৮টায় এস আলম গ্রুপের
উপ-ব্যবস্থাপক আশীষ কুমার নাথ যুগান্তরকে বলেন, ব্যাংকিং অসহযোগিতাসহ নানা কারণে কাঁচামাল
আমদানি করা যায়নি। এ কারণে সংকট সৃষ্টি হয়েছে। তবে সংকট কাটিয়ে উঠলে পুনরায় এসব কারখানা
পুরোদমে চালু করা হবে। তিনি বলেন, একটি কারখানার ৩টি ইউনিটসহ ৯টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা
হয়েছে। এসব কারখানায় ১২ হাজারের বেশি শ্রমিক-কর্মচারী-কর্মকর্তা রয়েছেন। তিনি বলেন,
কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হলেও কোনো শ্রমিক ছাঁটাই করা হবে না। বেতন-ভাতাও বন্ধ হবে
না। তাই শ্রমিকদের আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই বলে তিনি জানান।