সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার নিয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নির্বিচারে গুলি ও মানুষ হত্যার ঘটনায় যারা জড়িত তাদের তদন্তের মাধ্যমে গ্রেফতার করা হবে। তদন্তে দোষি প্রমাণিত না হলে কাউকে হয়রানি করা হবে না বলে জানান পুলিশের নবনিযুক্ত মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম।
গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকার পতনের চার মাস পর বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এমনটি বলেন পুলিশ প্রধান।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, সরকার বলে আসছে কোনো নিরীহ মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হন; কিন্তু বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন থেকে উদ্ভূত ঘটনায় অনেক মামলা হয়েছে, আসামির সংখ্যাও অনেক। অনেক নিরীহ লোকজনকে আসামি করা হচ্ছে। এগুলো গণমাধ্যমেও এসেছে। এসব মামলা নিয়ে অনেকে বাণিজ্য করছেন। সমাজে তারাও প্রভাবশালী। তারা বাদীকে নানান প্রলোভন দিচ্ছেন, টাকা নিচ্ছেন।
আইজিপি বলেন, তদন্ত ছাড়া কাউকেই হয়রানি বা গ্রেফতার করা হবে না। তদন্ত সাপেক্ষে নিরীহ ব্যক্তিকে মামলার অভিযোগ থেকে বাদ দিয়ে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়া হবে। এটাই এখনকার কার্যপদ্ধতি।
পুলিশ সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাহিনীর পক্ষ থেকে দায় স্বীকার করে আইজিপি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী সরকারের স্বার্থ রক্ষায়, তাদের নির্দেশে পুলিশের কতিপয় সদস্য বাড়াবাড়ি করেছেন এবং আইন ভঙ্গ করেছেন; এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে অনেক নিরপরাধ পুলিশ সদস্যও নিহত হয়েছেন। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডই নিন্দনীয়। আমি পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে প্রতিটি শহিদ পরিবারের কাছে আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি এবং ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’
মামলা তদন্তে মনিটরিং কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে আইজিপি বলেন, যথাযথ তদন্তে সক্ষম পুলিশ সদস্যদের দিয়ে মামলার তদন্ত করা হবে। সারা দেশে বিভাগ অনুযায়ী ‘মেনটরিং অ্যান্ড মনিটরিং কমিটি’ গঠন করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন, অভিজ্ঞ, প্রজ্ঞাসম্পন্ন এবং তদন্তে বিপুল অভিজ্ঞতা আছে—এমন সদস্যদের নিয়ে আলাদা ‘মেনটরিং টিম’ করা হচ্ছে। তারা প্রতি জেলায় ও থানায় গিয়ে মামলার তদন্তে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবেন।