জাতীয় আইনজীবী সমিতির সংবাদ সম্মেলন
ডিম ছুড়ে মারা আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার মতোই
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৪ পিএম
হাইকোর্টের একটি এজলাসে কতিপয় আইনজীবীর ডিম ছুড়ে মারার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় আইনজীবী সমিতি। শনিবার সুপ্রিমকোর্টে এক সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট শাহ মো. খসরুজ্জামান এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, আদালতের পবিত্রতা রক্ষা করার সবচেয়ে বেশি দায়িত্ব আইনজীবীদের। রায়ের পর্যবেক্ষণকে কেন্দ্র করে আইনজীবীদের ডিম ছুড়ে মারা- প্রকারান্তরে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার মতোই ঘটনা, যা কখনো কাম্য নয়। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ জাতীয় আইনজীবী সমিতি হচ্ছে দেশের সমগ্র বার অ্যাসোসিয়েশনের নির্দলীয় ফেডারেশন।
শাহ মো. খসরুজ্জামান বলেন, বিচারপতির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে তা প্রধান বিচারপতিকে জানানো উচিত ছিল। এমন অনাকাঙ্খিত ঘটনায় আদালতের পবিত্রতা নষ্ট হচ্ছে। এতে আদালতের প্রতি মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসের ঘাটতি হবে। এমন ঘটনা অব্যাহত থাকলে-একসময় মানুষ আর আদালতে আসবে না, অরাজকতা সৃষ্টি হবে সারা দেশে। কায়েম হবে লাঠির রাজত্ব।
জ্যেষ্ঠ এই আইনজীবী বলেন, এখন সুপ্রিমকোর্টে এসব কথা বলার আইনজীবী নেই। অতীতে যাদের সঙ্গে কাজ করেছি, তারা সবাই মারা গেছেন। আল্লাহর রহমতে এখনো বেঁচে আছি। ৪৮ বছর আগে এই সংগঠনের যাত্রা শুরু। সাধারণ সদস্য থেকে আজকে সভাপতি হয়েছি। আইনজীবীদের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। আজীবন আইনজীবীদের পাশে থাকতে চাই।
শাহ মো. খসরুজ্জামান বলেন, এমন ঘটনা বিচারপতিদের মধ্যে হতাশা ও ভয়ের সৃষ্টি করবে। বিচারপতি যারা আছেন তাদেরকে সতর্কতার সঙ্গে মামলা পরিচালনা করতে হবে। কোনোভাবেই শপথের পরিপন্থি কোনো কার্মকাণ্ড যেন না হয়। এখানে রাগ-বিরাগের সুযোগ নেই। সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রামে তরুণ আইনজীবী সাইফুল হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও শাস্তি দাবি করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ২৭ নভেম্বর ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের বেঞ্চে ডিম ছোড়েন আইনজীবীরা। এ পরিস্থিতিতে ওই বিচারপতি বেঞ্চ থেকে নেমে যেতে বাধ্য হন। বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি কাজী ওয়ালিউল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ ঘটনা ঘটে।
এ অবস্থায় বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি কাজী ওয়ালিউল ইসলাম এজলাস ছেড়ে নেমে খাস কামরায় চলে যান। পরদিন সুপ্রিমকোর্টের পাঠানো এক বার্তায় বলা হয়, সম্প্রতি সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে যে নজিরবিহীন অনভিপ্রেত ঘটনাবলি সংঘটিত হয়েছে এবং একই সঙ্গে দেশের জেলা আদালতে সাম্প্রতিক সময়ে যেসব অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, সেসব বিষয় সম্পর্কে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।