ছাত্রলীগের ছেলেমেয়েরা পুরো জাতিকে জিম্মি করে রেখেছিল: প্রেস সচিব
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৫ পিএম
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ছাত্রলীগ ফ্যাসিবাদের বয়ান তৈরি করেছে। অনেকে ছাত্রলীগ করত একটা চাকরি পাওয়ার জন্য। গ্রামের যে ছেলেটা ছাত্রলীগ করে, তার চাকরি হয়েছে। কিন্তু যে ছেলেটা পড়াশোনা করেছে, তার চাকরি হয়নি।
তিনি বলেন, ছাত্রলীগ কর্মীদের চাকরি হয়েছে পুলিশে, গোয়েন্দা সংস্থায়। এই ছাত্রলীগের ছেলেমেয়েরা পুরো জাতিকে জিম্মি করে রেখেছিল। ধারণা এ রকম-ছাত্রলীগ করবেন তো আপনার জীবন সুন্দর হবে। অন্য কোনো কিছু করলে জীবন নরক হবে। বিসিএসের পরীক্ষার সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যেসব সদস্য চাকরি প্রার্থীর গ্রামে পরিদর্শনে গেছেন, ছাত্রলীগের ছেলেরাই তাদের বলছে, এই ছেলেটার বাবা বিএনপি করে ওকে চাকরি দিয়েন না।
শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস: অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শফিকুল আলম এসব কথা বলেন। শনিবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ‘নিরাপদ বাংলাদেশ চাই’ নামের একটি সংগঠন।
প্রেস সচিব বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার চায়, প্রত্যেকটা শিক্ষাঙ্গন নিরাপদ হোক। বাংলাদেশের সব শিক্ষাঙ্গনকে নিরাপদ রাখতে হবে। এতে দেশের ছেলেমেয়েরা সুস্থভাবে শিক্ষাগ্রহণ করতে পারবে। তারা যেন পৃথিবীর যে কোনো ছাত্রের সঙ্গে নিজেকে তুলনা করতে পারে। এজন্য ক্যাম্পাসগুলোতে সৃজনশীল পরিবেশ তৈরি করা জরুরি।
তিনি বলেন, ক্যাম্পাসগুলোতে যেন আর কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী তৈরি না হয়, সেজন্য আমরা কাজ করছি। আশা করি সামনে সরকারে যারা আসবে তারাও কাজ করবে।
আয়োজক সংগঠনের মুখপাত্র রায়হান উদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিউবিটি) সিএসই বিভাগের প্রভাষক জহিরুল ইসলাম, একতারা বাংলাদেশের আহ্বায়ক প্লাবন তারিক।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নিউদিল্লির সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটির পিএইচডি গবেষক শাহাদাত হোসাইন স্বাধীন। মূল প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়, গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগের শাসনামলে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের হাতে সাধারণ শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পর্যায়ে ৮৬ জন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। ধর্ষিত হয়েছেন ১৪ জন নারী। যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে ৬৯ জনের সঙ্গে। সবমিলিয়ে এই ১৫ বছরে তাদের হাতে নির্যাতিত হয়েছে এক হাজার ৩২ শিক্ষার্থী। নিষিদ্ধ এ সংগঠনটির সদস্যরা ৫৩টি চাঁদাবাজি, ৩৯টি টেন্ডারবাজি ও ৩০টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিয়েছে। নিজেদের দলীয় কোন্দলে প্রাণ হারিয়েছেন ৪৭ জন। পরীক্ষায় নকল জালিয়াতি ও ভুয়া বাণিজ্যে গত ১৫ বছরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৭টি ঘটনার সবগুলোর সঙ্গেই ছাত্রলীগ জড়িত ছিল।