ভূগর্ভস্থ বৈদ্যুতিক সংযোগ, ডিপিডিসির সঙ্গে সওজের মতভেদ
মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া, ডেমরা (ঢাকা)
প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:১০ পিএম
রাজধানীর ডেমরায় ভূগর্ভস্থ বৈদ্যুতিক সংযোগ কাজ চলছে ধীরগতিতে। অপরিকল্পিতভাবে সড়ক খোঁড়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন মানুষ। সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের দাবি সড়ক খুঁড়তে তাদের অনুমোদন নেওয়া হয়নি।
ডেমরা থানাধীন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত মাতুয়াইল নিউ টাউন এলাকার বাদশা মিয়া সড়কে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ভূগর্ভস্থ ১১ হাজার কিলোওয়াট বৈদ্যুতিক কেবল স্থাপনের কাজ চলছে। আর এ কাজ করছে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি)। এ বিষয়ে ১৫ অক্টোবর ডেমরা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে ঢাকা সড়ক বিভাগ।
তবে ডিপিডিসি অনুমোদন প্রসঙ্গে বলছে ভিন্নকথা। তারা জানিয়েছেন, নিয়ম অনুযায়ী এ কাজের অনুমতি নেওয়া হয়েছে ডিএসসিসির প্রকৌশল বিভাগ থেকে। অথচ ওই সড়ক হচ্ছে ঢাকা জেলা সড়ক বিভাগের অন্তর্ভুক্ত।
সরেজমিন দেখা গেছে, বাদশা মিয়া সড়কটি প্রায় ১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য। সড়কটিতে ডিপিডিসি ভূগর্ভস্থ উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বৈদ্যুতিক কেবল স্থাপনের কাজ করছে হামিদা ট্রেডিং লিমিটেড। এ সড়কে প্রতিনিয়ত চলাচলকারী সাধারণ মানুষ, স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে। এছাড়া এ সড়কে চলাচলকারী যানবাহনগুলো অসহনীয় যানজটের কবলে পড়ছে।
অভিযোগ রয়েছে, ডিএসসিসি থেকে ১৫ দিনের মধ্যে কাজ শেষ করার অনুমতি মিললেও ১৭ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর সেই কাজ মাত্র ৪০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে।
ডিপিডিসি সমন্বয়হীনভাবে ওই সড়কটি খুঁড়ে তাদের কাজ করায় সওজের প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে প্রতিষ্ঠানটি দাবি করেছে।
এ বিষয়ে ঢাকা জেলা সড়ক বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী বায়েজিদ বাঙ্গালী বলেন, সাধারণ মানুষের কষ্ট লাঘবের জন্য ঢাকা সড়ক বিভাগ বাদশা মিয়া সড়কটি বেশ কয়েক বছর আগেই তাদের অধীনে নেয়। কিন্তু ডিপিডিসি সড়কটি কেটে কাজ করার আগে আমাদের অনুমোদন নেয়নি। পরে ওই সড়ক খুঁড়তে দেখে জানতে চাইলে তারা ডিএসসিসি থেকে অনুমোদন নিয়েছে বলে জানায়। আর নিয়ম অনুযায়ী ডিএসসিসি এ সড়ক কেটে কাজ করার অনুমতি দিতে পারে না। তিনি আরও বলেন, এ সড়ক কেটে কাজ করায় ডিপিডিসি যেমন আইনের পরিপন্থি কাজ করেছে, তেমনি সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়িয়েছে কয়েকগুণ। তাই এ বিষয়ে ডেমরা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। যা তদন্ত সাপেক্ষে মামলা করা হবে। এখানে ঢাকা জেলা সড়ক বিভাগের ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এ বিষয়ে ডিএসসিসির উপসহকারী প্রকৌশলী মো. লিংকন হাসান বলেন, ডিএসসিসির সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে ডিপিডিসি অনুমোদন নিয়েছে। এ বিষয়ে ঢাকা জেলা সড়ক বিভাগ থেকে আমাদের ঊর্ধ্বতনদের অবগত করা হয়েছে। যা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সুরাহা করা হবে। তবে ডিপিডিসিকে আমরা ১৫ দিনের মধ্যে কাজ সম্পাদনের সময় দিয়েছি।
ডেমরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াস হোসেন বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। সংশ্লিষ্টদের মধ্যে সমন্বয়ভিত্তিক সমাধান না হলে ওই অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে উভয় পক্ষকে দ্রুত সমাধানে আসতে হবে।