জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে বাধা
বিএসএমএমইউ’র চিকিৎসকদের নিবন্ধন বাতিলের দাবি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১০:২৮ পিএম
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ছাত্র-জনতাকে চিকিৎসাসেবা দিতে অস্বীকার ও বাধাদানকারী স্বৈরাচারের দোসর চিকিৎসকদের বিএমডিসি নিবন্ধন বাতিলসহ ১০ দফা দাবি জানিয়েছে বিএসএমএমইউ-এর ‘বৈষম্যবিরোধী শিক্ষক-চিকিৎসক, কর্মকর্তা-নার্স ও কর্মচারী ঐক্য পরিষদ’।
তাদের দাবি, তৎকালীন প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদদে সাবেক উপাচার্যের একান্ত সচিব ও প্রক্টরের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষক, চিকিৎসক, কর্মকর্তা, নার্স ও কর্মচারীরা ছাত্র-জনতার ওপর হামলা করেছে। দ্রুততম সময়ে তাদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) শহিদ ডা. মিলন হলে বৃহস্পতিবার বৈষম্যবিরোধী শিক্ষক-চিকিৎসক, কর্মকর্তা-নার্স ও কর্মচারী ঐক্য পরিষদ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বৈষম্যবিরোধী শিক্ষক-চিকিৎসক, কর্মকর্তা-নার্স ও কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি ও বিএসএমএমইউ-এর অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার-১ ডা. মো. দেলোয়ার হোসেন টিটো। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ঐক্য পরিষদের সধারণ সম্পাদক ডা. মো. রুহুল কুদ্দুস (বিপ্লব)।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএসএমএমইউ-এর প্রক্টর ও ঐক্য পরিষদের উপদেষ্টা ডা. শেখ ফরহাদ, উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মওদুদুল হক, উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মো. আতিয়ার রহমান, উপদেষ্টা ডা. এরফানুল হক সিদ্দিকী, উপদেষ্টা ডা. শহিদুল ইসলাম, উপদেষ্টা ডা. মো. শাহিদুল হাসান বাবুল, সহসভাপতি ডা. একে আল মিরাজসহ ঐক্য পরিষদ ও বিএসএমএমইউ ড্যাব শাখার বিভিন্ন পর্যায়ের চিকিৎসকরা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬ বছরের স্বৈরাচারী শাসনামলে যে অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি এবং শিক্ষক, কর্মকর্তা, নার্স ও কর্মচারীদের সঙ্গে যে অন্যায়, অবিচার ও বৈষম্য হয়েছে তা নজিরবিহীন। তাদের হাত থেকে রক্ষা পাননি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক, চিকিৎসক, কর্মকর্তা, নার্স ও কর্মচারী।
সংবাদ সম্মেলনে বর্তমান সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়নের জন্য বেশকিছু দাবি উপস্থাপন করা হয়। সেগুলো হলো-আহত ছাত্র-জনতাকে যারা চিকিৎসাসেবা দিতে অস্বীকার ও বাধা দিয়েছেন, তাদের তালিকা করে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা। শান্তি সমাবেশে যোগদানকারী ও ফ্যাসিবাদের দোসর শিক্ষক, চিকিৎসক, কর্মকর্তা, নার্স ও কর্মচারীকে অব্যাহতি দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়ায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া।
৪ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের চূড়ান্ত সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদদে সাবেক উপাচার্যের একান্ত সচিব এবং সাবেক প্রক্টরের নেতৃত্বে আওয়ামীপন্থি শিক্ষক, চিকিৎসক, কর্মকর্তা, নার্স ও কর্মচারী পরিকল্পিতভাবে শাহবাগের আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতাকে আক্রমণ করে হতাহত করে এবং অগ্নিকাণ্ডের মাধ্যমে কোটি টাকার সরকারি সম্পদ ধ্বংস ও ভস্মীভূত করার ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণাসহ মামলা দায়ের করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া।
সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত থেকে শুরু করে স্বৈরাচার কর্তৃক নিয়োগকৃত সব উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধক্ষ্য, রেজিস্ট্রার, প্রক্টরসহ অন্যদের দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদের হিসাব দুদকের মাধ্যমে তদন্তের ব্যবস্থা করা।