যুবলীগ নেতার সিন্ডিকেটে হজ ব্যবস্থাপনায় নৈরাজ্য
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ১০:১৫ পিএম
বিগত কয়েক বছর ধরে হজ ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক লুটপাট হয়েছে। এতে প্যাকেজের মূল্য অস্বাভাবিকহারে বৃদ্ধি করে পুরো হজ ব্যবস্থাপনাকে সংকটাপন্ন করে তুলেছে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার। যুবলীগের এক কেন্দ্রীয় নেতার সিন্ডিকেটের মাধ্যমে হজ ব্যবস্থাপনায় নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী হজ এজেন্সির মালিকরা। একইসঙ্গে ২০২৫ সালের হজ প্যাকেজ মূল্য সহনীয় পর্যায়ে নির্ধারণ করারও দাবি জানান তারা।
শনিবার দুপুর ১২টায় রাজধানীর দ্য ওয়েস্টিন হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা। অনুষ্ঠানে বৈষম্যবিরোধী হজ এজেন্সির মালিকদের আহ্বায়ক মো. আখতার উজ্জামান ও সদস্য সচিব মোহাম্মদ আলী বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। এ সময় বিভিন্ন হজ এজেন্সির মালিকরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মো. আখতার উজ্জামান বলেন, একজন ধর্মপ্রাণ মুসলমানের সারা জীবনের লালিত স্বপ্ন হলো হজ। হজ পালনের কোটা বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও বিগত কয়েক বছর যাবৎ নানা ধরনের অনিয়ম, লুটপাট ও নৈরাজ্যের মাধ্যমে বিমান ভাড়া ও হজ প্যাকেজ মূল্য অস্বাভাবিকহারে বৃদ্ধি করে পুরো হজ ব্যবস্থাপনাকে সংকটাপন্ন করে তুলেছে পতিত আওয়ামী সরকার। যার ফলে ২০২৪ সালে প্রায় ৪৫ হাজার নিবন্ধিত হাজি পবিত্র হজ পালন থেকে বঞ্চিত হয়।
এমন পরিস্থিতিতে ২০২৫ সালের হজ প্যাকেজ মূল্য সহনীয় পর্যায়ে নির্ধারণ করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের আবেগ অনুভূতি সম্বলিত ফরজ ইবাদত হজ পালনকে সহজতর করার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অর্থ লুণ্ঠনকারী, সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী, স্বৈরাচারী ও পলাতক সাবেক সভাপতি এম. শাহাদাত হোসেন তসলিম হাব সভাপতি পদের অপব্যবহার করে হজ ব্যবস্থাপনায় কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেন। আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামালের পরিচয় ব্যবহার করে ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্সের বাংলাদেশের জিএসএ প্রাপ্ত হন তিনি। এরপর হজযাত্রী পরিবহনে বিমান বাংলাদেশ ও সৌদিয়া এয়ারলাইন্স এর পাশাপাশি ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্সকে সংযুক্ত করে হাজীদেরকে নিম্নমানের সেবা প্রদান করেন। এই মানহীন বিমান সংস্থার দিয়ে হজযাত্রীদের কাছ থেকে দ্বিগুন ভাড়া আদায় করে শত শত কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। একই সঙ্গে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে হজ প্যাকেজ উচ্চমূল্য ঘোষণা করে যাত্রীদের কাছে অসহনীয় করে তুলেন। ফলে নিবন্ধন করেও অনেকেই হজে যেতে পারেননি। এই যুবলীগ নেতার ব্যাক্তিগত প্রতিষ্ঠান ডাইনেস্টি ট্রাভেলসের মাধ্যমে হাজীদের সঙ্গে এসব প্রতারণা করেন। বর্তমানে এসব সিন্ডিকেট ভেঙ্গে হাজী পরিবহনে থার্ড ক্যারিয়ার উন্মুক্ত করতে হবে। পাশাপাশি যুবলীগ নেতা তসলিম তার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবিও জানান তারা।
তিনি আরও বলেন, বিগত বছরগুলোতে বারকোড স্টিকার ভিসা হাজিদের সেবা প্রদানের জন্য হাব সদস্যদেরকে ওজরাতুল হজ্জ ফ্রি সরবরাহ করেছেন। হাবের এই বির্তকিত সভাপতি ও তার কার্যনির্বাহী সদস্যরা এসব ভিসা এজেন্সি সমূহকে সরবরাহ না করে অবৈধভাবে বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। হাব পল্লবী নামে একটি প্রকল্প সদস্যদের অর্থ লুণ্ঠন করেন তারা। বর্তমানে পতিত সরকারে দোসদের আবারও অবৈধ এজেন্ডা ও অপকর্ম বাস্তবায়নে বাতিলকৃত হাব কার্যনির্বাহী কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা চলছে বলে জানান তারা।