অনুষ্ঠানে জ্বালানি উপদেষ্টা
আরইবি কর্মীরা কাজে যোগ না দিলে বিকল্প জনবল নিয়োগের হুঁশিয়ারি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২০ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৪৬ পিএম
বাংলাদেশ ব্ল্যাক আউটের কোনো ঝুঁকিতে নেই। পল্লী বিদ্যুত সমিতির কর্মীরা বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করলে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
তিনি বলেন, কেউ নাশকতার চেষ্টা করলে কঠোরভাবে দমন করা হবে। পল্লী বিদ্যুত সমিতির কর্মীরা যা করেছে সেটা অন্যায়। পল্লী বিদ্যুত সমিতির কর্মীরা কাজে যোগ না দিলে বিকল্প জনবল নিয়োগের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জ্বালানি উপদেষ্টা।
ধান কাটার মত দাবি আদায়ের মৌসুম চলছে উল্লেখ করে জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, পল্লী বিদ্যুত সমিতির যৌক্তিক দাবি-দাওয়া মেনে নেয়া হয়েছে। অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ী করার যে দাবি তুলেছে, সেটা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। হুট করে কোনো ঘোষণা দেওয়া যায় না। সরকারকে দুর্বল মনে করে দাবিদাওয়া তুললেই হয়ে যাবে, এটা ভাবা ঠিক না। এই সরকার দুর্বল নয়, অনেক সরকারের চেয়ে শক্তিশালী। পল্লী বিদ্যুত সমিতির কেউ দায়িত্ব পালন না করে চলে গেলে তাদের একবারে চলে যাওয়া উচিত।
রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে ফরেন ইনভেস্টর চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ফিকি) আয়োজনে ‘বাংলাদেশের জন্য টেকসই জ্বালানি’ বিষয়ক একটি সেমিনার শেষে জ্বালানি উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশে জ্বালানি খাতে বিদেশি বিনিয়োগের ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে ৫০টি অনুসন্ধান কূপ খনন করতে চায় সরকার। এখন থেকে কোনো যোগসাজশের মাধ্যমে নয়, জ্বালানি খাতের সব কেনাকাটাসহ সবধরনের কাজ উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে হবে।’
তিনি বলেন, ‘সরকার নয়, এখন থেকে গণশুনানির মাধ্যমে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করবে।’
অনুষ্ঠানে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. ইজাজ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদা পূরণে দেশীয় গ্যাসের উত্পাদন বাড়ানোতে জোর দেওয়া খুবই প্রয়োজন। প্রতিবছর অন্তত ১০টি নতুন কূপ খনন করতে না পারলে আমদানি করা উচ্চমূল্যের এলএনজি উপর নির্ভরশীলতা সম্মুখীন হতে পারে।
তিনি পূর্বাভাস দিয়ে বলেন, গ্যাসের চাহিদা আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে বেড়ে ৪ হাজার ৬২২ মিলিয়ন ঘনফুটে পৌঁছাতে পারে। যা পেট্রোবাংলার সরবরাহের সক্ষমতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে।
ড. ইজাজ আরও বলেন, ‘২০২২-২৩ সাল পর্যন্ত, শিল্প খাতে গ্রিড বিদ্যুতের ব্যবহার আবাসিক খাতের তুলনায় মাত্র অর্ধেক ছিল। তবে ২০১০ সালের দিকে উভয় সেক্টর একই পরিমাণে ব্যবহার করেছিল। এই পরিবর্তন, মূলত গ্রামীণ বিদ্যুতায়নের প্রসারের কারণে।’
সেমিনারে প্যানেলিস্টদের আলোচনায় অংশ নেয় জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক বদরুল ইমাম, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইমেরিটাস অধ্যাপক ও সাবেক উপাচার্য ড. এম রেজওয়ান খান, এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার ম্যাগাজিনের সম্পাদক মোল্লা আমজাদ হোসেন।
আলোচনায় বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়, তার মধ্যে রয়েছে উন্নত এলএনজি টার্মিনালের প্রয়োজনীয়তা, প্রকৃতিক গ্যাসের জন্য ত্বরান্বিত অনুসন্ধান, কয়লা ও পুনর্নবীকরণযোগ্যা উত্সকে অন্তভূক্ত করে একটি বৈচিত্রময় এনার্জি পোর্টফোলিও।
ফিকির অনুষ্ঠানে স্টেকহোল্ডারদের প্রতিনিধি, কূটনীতিক, এফআইসিসিআই সদস্য কম্পানির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, এফআইসিসিআই পরিচালনা পর্ষদ এবং উপদেষ্টারা উপস্থিত ছিলেন।