উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংক্রান্ত একটি বডি এই সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল।
কোন বিচারপতি যদি সংবিধান লঙ্ঘন করেন কিংবা অসদাচরণের দায়ে অভিযুক্ত হন, তাহলে তাকে কীভাবে অপসারণ করা হবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় এই কাউন্সিল।
বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতেই ছিল।
১৯৭৫ সালে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থা চালু হলে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছ থেকে সরিয়ে চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির হাতে নেয়া হয়।
কিন্তু পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাসনকালে সংবিধানে পঞ্চম সংশোধনী এনে সে ক্ষমতা দেয়া হয়েছিল সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে। যার প্রধান হবেন প্রধান বিচারপতি।
এ বিষয়ে ২০১৪ সালে আবার সংবিধানে সংশোধনী আনে আওয়ামী লীগ সরকার।
তখন এ ষোড়শ সংশোধনীতে বলা হয় বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে থাকবে। সংসদে এ সংক্রান্ত বিল পাসের পর ওই বছর সেপ্টেম্বরেই গেজেট প্রকাশ করে সরকার।
সংবিধানের এই সংশোধনীর তীব্র বিরোধিতা করে সে সময় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিরোধী দল বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং আইনজীবীদের বিভিন্ন সংগঠন।
পরে ওই বছরই হাইকোর্টে এ সংশোধনীকে চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়।
২০১৬ সালের পাঁচই মে হাইকোর্টের একটি বিশেষ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনীকে অবৈধ ও সংবিধান পরিপন্থি ঘোষণা করে রায় দেয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
পরে ২০১৭ সালের তেসরা জুলাই তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাসহ সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রাখে।
আপিল বিভাগের দেয়া এ রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের রাষ্ট্রপক্ষ। আপিল বিভাগে এ আবেদনের শুনানি এখনও অব্যাহত রয়েছে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা