মন্দিরে আর মণ্ডপে বেজে উঠেছে বিদায়ের সুর। প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে আজ রোববার শেষ হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজার নবমী এবং দশমী দুটোই ছিল শনিবার। একই দিনে তিথি হওয়ায় নবমীর পূজার পর দশমীর পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে এদিন। আজ শুধুই প্রতিমা বিসর্জন।
ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের প্রধান পুরোহিত ধর্মদাশ চট্টোপাধ্যায় বলেন, নবমীতে এসেই পূজার ষোলোকলা পূর্ণ হয় এবং বিদায়ের সুর বাজে। দশমীতে বিদায় জানানো হয়। এবার নবমীতেই দর্পণে বিসর্জন হয়েছে, ফলে মাকে আমরা বিদায় দিয়েছি। প্রতীকীভাবে মায়ের বিদায় হবে কাল।
শনিবার মহানবমী তিথিতে বিহিত পূজা এবং দর্পণ বিসর্জনের মাধ্যমে মণ্ডপে মণ্ডপে দেবী দুর্গার আরাধনা করেছেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। এদিন সকাল ৬টা থেকে হয় নবমী বিহিত পূজা। ১০৮টি বেল পাতা, আম কাঠ, ঘি দিয়ে যজ্ঞের মাধ্যমে দেবী দুর্গার কাছে দেওয়া হয় আহুতি। গোপীবাগে রামকৃষ্ণ মিশনে সকাল ৮টা ২৬ মিনিটে শুরু হয় নবমী পূজা। সকালে ঝড়বৃষ্টি মাথায় নিয়ে পূজায় অঞ্জলি নিতে হাজির হন ভক্তরা।
এবার তিথি অনুযায়ী, নবমী পূজা সকাল ৯টা ২০ মিনিটের মধ্যে শেষ করার নিয়ম ছিল। সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যে নবমী পূজা শেষ করে ৮টা ৫০ মিনিটে ভক্তরা দেবীকে অঞ্জলি প্রদান করেন। পরে শুরু হয় দশমীর বিহিত পূজা। এদিকে পূজা শেষে দর্পণ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা।
পূজা দিতে আসা ভক্তরা বলেন, আমাদের সব কষ্ট দূর করে দেবী দুর্গা চলে যাবেন। এক বছর পর মা আবার আসবেন। আমরা মায়ের কাছে দেশের জন্য কল্যাণ কামনা করেছি। তিনি যেন উন্নতি আর প্রগতিতে আমাদের জীবন ভরিয়ে দেন। বিশ্বজুড়ে যেন শান্তি ফিরে আসে। বন্ধ হয় মানুষে মানুষে সব হানাহানি।
মহালয়ার মধ্য দিয়ে ২ অক্টোবর এবারের দুর্গোৎসবের ক্ষণ গণনা শুরু হয়েছিল। ওইদিন থেকেই দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতার সূচনা হয়। এরপর গত বুধবার ষষ্ঠী থেকে পাঁচ দিনের যে দুর্গোৎসব শুরু হয়েছিল, রোববার প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ আয়োজন। মাঝে বৃহস্পতিবার নবপত্রিকায় প্রবেশ ও স্থাপনে হয় মহাসপ্তমী।
পরদিন শুক্রবার সকালে কুমারী পূজার পাশাপাশি মহাঅষ্টমীর বিহিত পূজা এবং সন্ধিপূজা হয়।
পূজা উদযাপন পরিষদ জানিয়েছে, দেশের ৩১ হাজার ৪৬১টি মন্দির ও মণ্ডপে এবার পূজা হচ্ছে। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৩২ হাজার ৪০৮টি। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরে এবার ২৫২টি পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে, গত বছর হয়েছিল ২৪৮টিতে।