নিজেকে নির্দোষ দাবি
সংবাদ সম্মেলন ডেকে তোপের মুখে নারকোটিক্স ডিজি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৩৪ এএম
সফলতার জানান দিতে সংবাদ সম্মেলন ডেকে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নবাণে জর্জরিত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (নারকোটিক্স) মহাপরিচালক (ডিজি) খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান।
এ সময় বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা তাকে দুর্নীতি, অনিয়মে জড়িত অধস্তনদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে না পারা এবং দেশের মাদক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চরম ব্যর্থতার অভিযোগে তুলে ধরে নানা প্রশ্ন করেন।
সোমবার বিকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে ডিজি দপ্তরের সাফল্য তুলে ধরে বক্তব্য দেন। সাম্প্রতিক কয়েকটি অভিযানের বর্ণনা দেন তিনি।
পরে প্রশ্নোত্তর পর্ব শুরু হলে সাংবাদিকদের তোপের মুখে পড়েন তিনি। এ সময় আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি আনুগত্য থেকে শুরু করে তার ব্যক্তিগত দুর্নীতিসহ নানা প্রশ্ন উঠে আসে।
এক টেলিভিশন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, আপনি এখানে মহাপরিচালক হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার আগে দুটি জেলার ডিসি ছিলেন। সাবেক কর্মস্থলে আপনার বিরুদ্ধে বেশকিছু দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া নারকোটিক্স কর্মকর্তাদের অনেকে আপনার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ করে আসছেন।
জবাবে ডিজি সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে বিন্দু পরিমাণ দুর্নীতির কোনো অভিযোগ নেই। কেউ প্রমাণ করতে পারবে না। বরং আমি সব জায়গায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করেছি।
অপর এক সাংবাদিক বলেন, আপনি অনিয়মের মাধ্যমে সরকারি প্লট এবং ফ্ল্যাট বরাদ্দ নিয়েছেন। কিন্তু এসব যাতে গণমাধ্যমে না আসে সেজন্য নিজ দপ্তরে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছেন। এটা কেন। জবাবে ডিজি বলেন, প্লট নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম হয়নি। সবকিছু নিয়মের মধ্য থেকেই করা হয়েছে।
দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থতার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর চারটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া যায়। প্রতিটি ঘটনায় তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
নারকোটিক্সে ডিজি হিসাবে দায়িত্ব পেয়ে দলবলসহ টুঙ্গিপাড়ায় ফুল দিতে কেনো ছুটে গিয়েছিলেন- এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ওই সময় যারা দায়িত্ব পেয়েছেন তারা সবাই সেখানে গিয়েছেন। এটা রেওয়াজে পরিণত হয়েছিল। এক্ষেত্রে তিনি ব্যক্তিগতভাবে অতি উৎসাহ দেখাননি। আড়ম্বরের সঙ্গে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের জন্মদিন সেভাবে পালন করা হয়নি।
গুলশান সার্কেলে কর্মরত একজন পরিদর্শকের ঘুস কেলেঙ্কারি প্রকাশিত হলেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে ডিজি বলেন, তাকে ঢাকার বাইরে মানিকগঞ্জে বদলি করা হয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে এখনো তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ হলে তাকে শাস্তির আওতায় আনা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ৪ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত মাদকের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী ৫ হাজার ২৬৪টি অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় ১ হাজার ১৯৮টি মামলা দায়ের এবং ১ হাজার ২৯৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১১ জন গডফাদারসহ ৮৯ জন শীর্ষ মাদক কারবারি রয়েছেন। এছাড়া বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে।