Logo
Logo
×

জাতীয়

মজুত গ্যাস উত্তোলন নিয়ে সুখবর দিল বাপেক্স

Icon

অমিতাভ অপু, ভোলা

প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ১২:১৪ পিএম

মজুত গ্যাস উত্তোলন নিয়ে সুখবর দিল বাপেক্স

ভোলা জেলায় আরও ৫ ট্রিলিয়ন গ্যাসের মজুত নিশ্চিত করার পাশাপাশি তা উত্তোলন করতে নতুন করে ১৯টি কূপ খননের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাপেক্স। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রডাকশন কোম্পানি লিমিটেডের (বাপেক্স) ভূতাত্ত্বিকরা মনে করছেন জেলায় ৫ দশমিক ১৯ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের বেশি মজুত রয়েছে। সম্প্রতি অবসরে যাওয়া বাপেক্স ডিজিএম ও গবেষক মো. আলমগীর হোসেন শনিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্র এলাকায় ৬টি ও জেলা সদরের ইলিশা ক্ষেত্র এলাকায় ৩টি কূপ খনন করে প্রায় ২ ট্রিলিয়ন গ্যাসের মজুত নিশ্চিত করা হয়। নতুন ১৯টি কূপের মধ্যে ৫টি জেলা সদরকেন্দ্রিক ও ১৪টি বোরহানউদ্দিন ও চরফ্যাশন এলাকায়। বাপেক্স ও রাশিয়ার জ্বালানি কোম্পানি ‘গ্যাজপ্রম’ যৌথ থ্রি-ডি, টু-ডি অনুসন্ধান শেষে এই কূপ খননের স্থান শনাক্ত করে। নতুন কূপের শনাক্ত এলাকা হচ্ছে-জেলা সদরের জাঙ্গালিয়া বাজারসংলগ্ন ভোলা নর্থ-৩, গুপ্তমুন্সি গ্রামে ভোলা নর্থ-৪, রতনপুর ও চরপাতা সীমানায় ভোলা-৫, উদয়পুর বাজারসংলগ্ন শাহবাজপুর ৫ ও ৭, বাংলাবাজারসংলগ্ন ভোলা ওয়েস্ট-১, ভোলা নর্থ-৫, শাহবাজপুর-৯, শাহবাজপুর দক্ষিণ-১, শাহবাজপুর উত্তর পূর্ব-২, শাহবাজপুর নর্থ-১, শাহবাজপুর নর্থ ওয়েস্ট-১, শাহবাজপুর-৬, শাহবাজপুর-৮, শাহবাজপুর-১০, শাহবাজপুর-১১, শাহবাজপুর-১২, শাহবাজপুর-১৩, চরফ্যাশনের আলিমাবাদ-১।

বাপেক্স কর্মকর্তারা জানান, ইতিপূর্বে জরিপের পর যে কয়টি কূপ খনন হয়েছে, প্রতিটিতেই মজুত নিশ্চিত হয়েছে। ১৯টি কূপ খনন করা গেলে দেশের বৃহত্তর মজুত নিশ্চিত হবে। ইতোমধ্যে জেলার বোরহানউদ্দিনে শাহবাজপুর গ্যাসফিল্ড থেকে শুরু করে জেলা সদরের ইলিশা, ভেদুরিয়া এলাকায় ৩টি আলাদা ক্ষেত্রে ৯টি কূপ খনন করা হয়েছে। পুরো জেলাকে দুটি অংশে ভাগ করে ২০২০ সাল থেকে নতুন মজুতের সন্ধানে অনুসন্ধান চালায় বাপেক্স ও গ্যাজপ্রম। ইতিপূর্বেও ৫টি কূপ খনন করে এই রাশিয়ান কোম্পানির কারিগরি টিম।

বাপেক্সের জরিপের তথ্য ও সূত্রে জানা যায়, শাহবাজপুর ও ইলিশা ফিল্ডজুড়ে গ্যাসের মজুত রয়েছে ২ দশমিক ৪২৩ টিসিএফ। অপরদিকে জেলার দক্ষিণাঞ্চলে রয়েছে ২ দশমিক ৬৮৬ টিসিএফ গ্যাস (রিসোর্স গ্যাস)। বাজারমূল্যে এই গ্যাসের সম্ভাব্য দাম হতে পারে প্রায় সাড়ে ৬ লাখ কোটি টাকা। বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এক বৈঠকে দেশে ১০০টি কূপ খনন করার কথা জানান। এর মধ্যে ভোলায় রয়েছে ১৯টি। বাপেক্স সূত্র জানায়, ভোলার গ্যাসকূপ খননের বিষয়ে গ্যাজপ্রমের সঙ্গে চুক্তি রয়েছে। অপরদিকে জ্বালানি উপদেষ্টার বক্তব্যে ২০২৫ সালের মধ্যে ৩৫টি কূপ খনন করা হবে, এর মধ্যে ১১টি করবে বাপেক্স। অপর ২৪টি উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে নতুন কোম্পানিকে দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে ভোলার গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করতে পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। ভোলা-বরিশাল ব্রিজ নির্মাণের মধ্য দিয়ে গ্যাসলাইন বরিশাল হয়ে খুলনায় নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানায় বাপেক্স। এছাড়া এলএনজি করে সিলিন্ডারে গ্যাস আনা হচ্ছে ভোলা থেকে ঢাকায়। বাপেক্স জানায়, ভোলায় শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার হয় ১৯৯৫ সালে। জেলা সদরে আবাসিক গ্যাস সংযোগের মধ্য দিয়ে গ্যাস উত্তোলন শুরু হয় ২০১৩ সালে। ২০০৯ সালে প্রথম রেন্টাল ৩৪ দশমিক ৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্লান্টে বাণিজ্যিক সংযোগ দেওয়া হয়। বর্তমানে বোরহানউদ্দিনে ৩টি বিদ্যুৎ প্লান্টসহ ৯টি বাণিজ্যিক সংযোগে প্রতিদিন গ্যাস উত্তোলন হচ্ছে মাত্র ৭০ এমএমসিএফ গ্যাস। অব্যবহৃত থেকে যাচ্ছে প্রতিদিন ১০০ এমএমসিএফ গ্যাস। ভোলার প্রতিটি কূপেই গ্যাসের মজুত নিশ্চিত হয়েছে। একই সঙ্গে প্রতি কূপ থেকে দৈনিক ২০ থেকে ২৫ এমএমসিএসসিএফডি গ্যাস উত্তোলন করা যাবে বলে বাপেক্স প্রকৌশলীরা নিশ্চিত করেন। ভোলায় গ্যাসের মজুত ভান্ডার রয়েছে। তবে এলাকায় বাণিজ্যিক ও আবাসিক গ্যাস ব্যবহারে নতুন গ্যাস সংযোগ প্রদানের অনুমতি বন্ধ থাকায় ক্ষোভ জানায় নাগরিক সমাজ। এ জেলায় গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ প্লান্ট এবং সার কারখানা করার দাবি জানান তারা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম