ড. ইউনূসকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের খোলা চিঠি
ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৪০ পিএম
দেশব্যাপী অসহিষ্ণুতা, ঘৃণা ও বিদ্বেষী আচরণের বিষয়ে সরকারের নীতির অস্পষ্টতা প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে খোলা চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক (ইউটিএন)।
প্রধান উপদেষ্টাকে দেওয়া চিঠির অনুলিপি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টা, ধর্ম উপদেষ্টা ও প্রতিরক্ষা উপদেষ্টাকেও দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তারা। শনিবার অথবা রোববার চিঠিটি পাঠানো হবে।
শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। এ সময় খোলা চিঠি পড়ে শোনান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নাসির উদ্দিন আহমেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাইদ ফেরদৌস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক রুশাদ ফরিদী।
চিঠিতে অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ নিশ্চিতে অন্তর্র্বর্তী সরকারের পদক্ষেপ জানতে চাওয়া হয়।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে প্রশ্ন করে বলা হয়, সরকারের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট ঘোষণা আসতে হবে, তারা অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ কীভাবে নিশ্চিত করবেন। অন্তর্ভুক্তি বিষয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। সহিংস জমায়েতের সংঘবদ্ধ হিংস্রতা থেকে ভিন্ন মত বা সম্প্র্রদায়ের মানুষের অধিকার রক্ষায় সরকার কী কী পদক্ষেপ নেবে তাও সুস্পষ্ট করতে হবে।
খোলা চিঠিতে বলা হয়, পরিতাপের বিষয়, অভ্যুত্থানের মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বাংলাদেশের নানা প্রান্তে বিভিন্ন ধরনের অসহিষ্ণু, আক্রমণাত্মক ও নৈরাজ্যবাদী জমায়েত আমরা লক্ষ্য করছি। সেসব জমায়েত থেকে অপছন্দের গোষ্ঠী ও দলের বিরুদ্ধে কেবল হিংসাত্মক কথাবার্তাই বলা হচ্ছে না, ক্ষেত্রবিশেষে হামলাও চালানো হচ্ছে।
চিঠিতে সাম্প্রতিক সময়ের বিভিন্ন হামলা ও হত্যার ঘটনা তুলে ধরা হয়। এসব দুর্ঘটনা দীর্ঘদিন সমাজের মধ্যকার নানাবিধ অমীমাংসা ও গণতন্ত্রহীনতার সঙ্গে সম্পর্কিত বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
বলা হয়, এভাবে চলতে থাকলে নাগরিকদের নিরাপত্তাবোধের অভাব তীব্রতর হবে এবং সংকট উত্তরণে সরকারকে আরও বেগ পেতে হবে। এই ক্রান্তিকালে বর্তমান সরকারের নির্মোহ ভ‚মিকা পালন ও আশু পদক্ষেপ গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। যারা এসব ঘৃণামূলক বক্তব্য প্রচার করছেন এবং বিভিন্ন পরিচয় ও সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর বা নাগরিকের মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ করছেন তাদের থামাতে হবে।
অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন আরও বলেন, সরকার বা কোনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিজেরাই যদি এসব হস্তক্ষেপকারীদের সাহস জুগিয়ে সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তাহীনতার ভয় দেখিয়ে কোনো গোষ্ঠীর কথা পালনে বাধ্য করেন, তাহলে আর এত দামে কেনা জুলাই অভ্যুত্থানের কোন আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করা হলো?