Logo
Logo
×

জাতীয়

নটরডেম কলেজের স্টাফ লিপিকা হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটন

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:১৫ পিএম

নটরডেম কলেজের স্টাফ লিপিকা হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটন

রাজধানীর নটরডেম কলেজের অফিস সহকারী লিপিকা গোমেজ হত্যা মামলায় দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

রোববার রাজধানীর সদরঘাট ও পুরান ঢাকা এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যায় জড়িত দুজনকে গ্রেফতার করে পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর)। সোমবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআই সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পশ্চিমাঞ্চলের ডিআইজি সায়েদুর রহমান।

তিনি বলেন, রাজধানীর পুরান ঢাকার সূত্রাপুর থানার ৭৫নং ঋষিকেশ দাস রোডের একটি বাসা থেকে নটর ডেম কলেজের অফিস সহকারী লিপিকা গোমেজের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। দেশ-বিদেশে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত লিপিকা গোমেজ ১৮ বছর আগে তার স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্সের পরে একাই বসবাস করতেন। তার কোনো সন্তান ছিল না। গত ১০ সেপ্টেম্বর লিপিকা গোমেজ সর্বশেষ অফিস করেন।

তবে পরদিন কর্মস্থলে উপস্থিত না হওয়ায় নটর ডেম কলেজের অধ্যক্ষ ফাদার হেমন্ত পিউস রোজারিও লিপিকার সন্ধানে কলেজের দুই স্টাফ জনি ও জয়দেবকে তার বাসায় পাঠান।

ডিআইজি সায়েদুর রহমান আরও বলেন, নটর ডেমের দুই স্টাফ জনি ও জয়দেব লিপিকা গোমেজের বাসায় গিয়ে কেয়ারটেকার মিতুকে নিয়ে লিপিকা গোমেজের বাসায় প্রবেশ করে খাটের ওপর তার মরদেহ দেখতে পান। পরে তথ্য পেয়ে মামাতো ভাই প্রিন্স গোমেজ এসে পুলিশে সংবাদ দিলে সূত্রাপুর থানা পুলিশ লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালে পাঠায়।

তার মাথার বাম পাশে ভোতা অস্ত্রের আঘাত (কাটা দাগ), বিছানা ও বালিশে জমাট বাঁধা রক্ত দেখা যায়। এ ঘটনায় নিহতের মামাতো ভাই প্রিন্স গোমেজ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে সূত্রাপুর থানায় মামলা করেন।

মামলার ছায়া তদন্ত শুরু করে পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর)। ছায়া তদন্তের এক পর্যায়ে গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ এবং বিজ্ঞানভিত্তিক তদন্তের এক পর্যায়ে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে জুয়েল রানা (২১) ও নজরুলকে (২২) আটক করা হয়।

পিবিআইয়ের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে, আটক দুজনই ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছে এবং তাদের দেওয়া তথ্যমতে তাদের হেফাজত থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি নোজ প্লাস, দুটি স্ক্রু ড্রাইভার এবং চুরি যাওয়া বিভিন্ন মালামাল উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতার দুই আসামির বরাত দিয়ে ডিআইজি সায়েদুর বলেন, জুয়েল রানা নজরুলদের বাসায় মেসে খেতো। সেখান থেকেই তাদের পরিচয় এবং ৭ থেকে ৮ বছরের বন্ধুত্ব। জুয়েল রানা নজরুলকে জানায় তার পাশের বিল্ডিংয়ের চতুর্থ তলায় একজন নারী একা থাকেন। তার কোনো স্বামী-সন্তান নেই। তার বাসায় চুরি করলে অনেক টাকা-পয়সা পাওয়া যাবে।

সেই পরিকল্পনা মোতাবেক জুয়েল রানা তার স্ত্রীকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে রাত ১১টার দিকে নজরুলকে সঙ্গে নিয়ে তার বাসায় আসে। রাত আনুমানিক ১টার দিকে নজরুল ছাদের ওপর দিয়ে এসে রশির সাহায্যে ঝুলে লিপিকার বাসার পেছনের ভেন্টিলেটর ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। নজরুল বাসার মেইন দরজা খুলে ছাদে গিয়ে জুয়েল রানাকে ডেকে আনে। তারা একত্রে বাসায় চুরি করার সময় লিপিকা শব্দ করলে নজরুল একটি লোহার পাইপ দিয়ে লিপিকার মাথায় সজোরে আঘাত করে এবং জুয়েল রানা বালিশ চাঁপা দিয়ে হত্যা নিশ্চিত করে।

জুয়েল ও নজরুল উভয়ই লিপিকার দুটি মোবাইল, হাতব্যাগ নিয়ে দরজায় তালা লাগিয়ে জুয়েল রানার বাসায় চলে যায়। হাতব্যাগে থাকা ২৬ হাজার ৩৫০ টাকা ভাগ করে নেয়। ভোরে নজরুল বাসা থেকে বের হয়ে নিজের বাসায় চলে যায়। পরে মোবাইল ফোন দুটি সাড়ে তিন হাজার টাকায় বিক্রি করে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন পিবিআই ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) অতিরিক্ত ডিআইজি মো. জাহাঙ্গীর আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ মোহাম্মদ ফারুকুজ্জামান ও পুলিশ সুপার আবু ইউছুফ।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম