ছবি: সংগৃহীত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ করায় সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরত পাঠানো প্রবাসীরা পুনর্বাসনসহ ৫ দফা দাবি জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘সৌদি আরব ফেরত প্রবাসীবৃন্দের’ ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে তারা এসব দাবি জানান।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধারা দেশের প্রতি ভিন্ন রকম আবেগ-অনুভূতি নিয়ে সেখানে বাস করেন। দেশের যেকোন সংকটে প্রবাসীদের উদ্বেগ থাকে বেশি। গত জুলাই মাসে সাধারণ ছাত্র-জনতার ওপর স্বৈরাচারের চরম দমন-নিপীড়ন ও হত্যাযজ্ঞ দেখে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রবাসীরা রেমিট্যান্স শাট ডাউন কর্মসূচির পাশাপাশি বিক্ষোভ কর্মসূচিতে ও স্বতস্ফূর্ত ভাবে অংশগ্রহণ করেন। এতে সৌদি আরব ও আরব আমিরাতের প্রবাসীরা সেসব দেশের আইনশৃংখলা বাহিনীর রোষানলে পড়েন। পাশাপাশি স্বৈরাচারী সরকারের তরফ থেকেও তাদের প্রতি বিরুপ মনোভাব পোষণ করা হয়। ফলে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি সেদেশে মামলা ও নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হন। পাইকারি হারে প্রবাসীদেরকে ধরে ধরে দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। পলাতক স্বৈরাচারের অসহযোগীতার কারণে এসব প্রবাসীদের অনেককেই সেখানে জেল খাটতে হয়েছে। অনেককে জেল থেকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
তারা আরও অভিযোগ করেন, গত ১৯ জুলাই সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাথে সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ করায় ২২৮ জন বাংলাদেশি প্রবাসীকে সেদেশের কর্তৃপক্ষ কারাগারে প্রেরণ করে। সেখানে বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন ও জুলুমও চালানো হয় আমাদের ওপর। ৪১ দিন জেল খাটার পর আমাদের দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
তারা আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপে আরব আমিরাতের প্রবাসীদের সমস্যা কিছুটা লাঘব হলেও সৌদি ফেরত ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের উদ্ধার বা তাদের সহযোগিতায় কোনো পদক্ষেপ এখনো দৃশ্যমান নয়৷ তাই আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে পুনর্বাসনসহ ৫ দফা দাবি জানাচ্ছি।
তাদের দাবিগুলো হলো-
১. বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ করার কারণে সৌদি সরকার কর্তৃক প্রদত্ত মামলা ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করানো।
২. সৌদি ফেরত প্রবাসীদেরকে সরকারি খরচে সেদেশে পুনরায় প্রেরণ অথবা অন্য দেশে প্রেরন করার বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
৩. দেশে ফেরত আসায় হঠাৎ বেকার হয়ে পড়া প্রবাসীদেরকে এককালীন নগদ সহায়তা প্রদান করা।
৪. ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের জন্য বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি না করা পর্যন্ত দেশে কর্মসংস্থানের তড়িৎ পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
৫. সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশের দূতাবাস গুলোতে প্রবাসী বান্ধব কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া।
এ সময় মো. নিশাত, আনোয়ার হোসেন, মো. ফারুক হোসেনসহ সৌদি ফেরত অনেকে উপস্থিত ছিলেন।