দুর্যোগেও দেখা মিলছে না সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ৩০ আগস্ট ২০২৪, ০৮:০৫ পিএম
বন্যার কবলে দেশের বিভিন্ন জেলা। ত্রাণ পৌঁছানো ও সহযোগিতায় কাজ করছে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। কিন্তু দুর্যোগে যাদের ঝাঁপিয়ে পড়ার কথা তাদের কার্যক্রম চোখে পড়ছে না।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অধীন উপজেলা পর্যায়ে আছেন মাত্র একজন কর্মকর্তা ও একজন অফিস সহকারী। পুরো জেলায় রয়েছেন একজন জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তাসহ মাত্র সাতজন; যা ১৯৭২ সালেও একই ছিল। ৬৪ জেলায় ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা থাকলেও সারা দেশে গাড়ি রয়েছে মাত্র ১৯টি।
জনবল সংকটসহ নানা সংকটে চলমান বন্যায় অনেকটাই হিমশিম খেতে হচ্ছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের। তারা জানান, জনবল সংকটে ব্যাহত হচ্ছে বন্যাসহ বিভিন্ন দুর্যোগকালীন মাঠ পর্যায়ের কাজ।
এদিকে ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন-২০১২’ বাস্তবায়ন, ফিল্ড পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পদোন্নতিসহ নানা বিষয়ে সংস্কার চেয়ে মাঠে নেমেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর মহাখালী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা। ওই মানববন্ধন থেকে অনতিবিলম্বে আট দফা দাবি বাস্তবায়নের অনুরোধ করা হয়।
দাবিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এবং জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা পদের আপগ্রেডেশন ও পদনাম পরিবর্তন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন-২০১২ এর আলোকে প্রস্তাবিত জনবল কাঠামো ও নিয়োগ বিধিমালা অনুমোদন, সচিবালয়ের মতো দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের কর্মচারীদের পদনাম পরিবর্তন ও আপগ্রেডেশন, বিভিন্ন প্রকল্পে কমর্রত আউটসোর্সিংও মাস্টাররোলে কর্মরত কর্মকর্থা-কর্মচারীদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তর এবং জরুরি ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য জেলা ও উপজেলা কার্যালয়ে পর্যাপ্ত যানবাহণের ব্যবস্থা।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপ-প্রকল্প পরিচালক মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, ১৯৭২ সালে থানা (বর্তমানে উপজেলা পরিষদ) পর্যায়ে একটি করে ২য় শ্রেণির প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার পদ সৃষ্টি হয়। তৎকালীন ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের (বর্তমান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়) সরাসরি তত্ত্বাবধানে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তারা থানা পর্যায়ে তাদের দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি বলেন, ১৯৮৩ সালে ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের (বর্তমানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়) অধীন ‘ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদপ্তর’ (বর্তমানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর) সৃষ্ট হয়। ওই সময় থেকে উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (২য় শ্রেণি) ১টি পদ, অফিস সহকারীর ১টি পদ এবং জেলা পর্যায়ে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার (৭ম গ্রেড) একটি পদ নিয়ে মাঠ পর্যায়ের কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, ১৯৭২ সালে থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ৫২ বছর অতিবাহিত হলেও উপজেলা এবং জেলা পর্যায়ে আর কোনো জনবল বৃদ্ধি হয়নি। বিভিন্ন দুর্যোগে অমানবিক অবস্থায় তাদের কার্যক্রম চালতে হচ্ছে বলে তিনি জানান।
সংকটের কথা স্বীকার করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম গণমাধ্যমকে জানান, দ্রুত বাড়ানো হবে জনবল। অন্যান্য বিষয়গুলো নিয়ে কর্মকর্তা কর্মচারীদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। দ্রুত এ অধিদপ্তরে সংস্কার কার্যক্রম চালানো হবে।