গণ-অভ্যুত্থানে মানবাধিকার লঙ্ঘন তদন্তে ড. ইউনূসের চিঠি পেয়েছে জাতিসংঘ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ৩০ আগস্ট ২০২৪, ০৫:৪০ পিএম
দেশে ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে জাতিসংঘের কাছে একটি নিরপেক্ষ এবং স্বাধীন অনুসন্ধান মিশন পরিচালনার আহ্বান জানিয়েছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
এ বিষয়ে বাংলাদেশের সরকার প্রধানের কাছ থেকে একটি আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণপত্র পেয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক।
শুক্রবার জেনেভায় এক বিফ্রিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি।
এ মুখপাত্র জানান, জাতিসংঘ বাংলাদেশে বিক্ষোভের সময় সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের মূল কারণ বিশ্লেষণ এবং ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতা এবং দীর্ঘমেয়াদি সংস্কারের জন্য সুপারিশ করার লক্ষ্যে আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশে একটি ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং দল মোতায়েন করবে। দলটি এ কাজে পূর্ণ সহযোগিতার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার এবং নিরাপত্তা বাহিনীর কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি পেয়েছে।
ব্রিফিংয়ে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের হাইকমিশনার জোরপূর্বক গুম হওয়া থেকে সব ব্যক্তির সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক কনভেনশনে বাংলাদেশের যোগদানের ঘোষণাকে এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দ্বারা জোরপূর্বক নিখোঁজ ব্যক্তিদের হদিস নির্ধারণের জন্য পাঁচ সদস্যের একটি জাতীয় তদন্ত কমিশন গঠনের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বলপূর্বক গুমের একটি দীর্ঘ এবং বেদনাদায়ক ইতিহাস রয়েছে, যার ওপর জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার ব্যবস্থার দৃঢ় নজর রয়েছে। এক্ষেত্রে জাতিসংঘের এ কমিশন সহায়তা করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। জাতিসংঘ মনে করে, ক্ষতিগ্রস্তদের এবং তাদের পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ পরামর্শের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের মানদণ্ড বজায় রেখে গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানের ক্ষেত্রে কাজ করতে হবে।
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বিক্ষোভের সার্বিক বিষয়ে জানতে জাতিসংঘের একটি প্রতিনিধি দল গত সপ্তাহে ছাত্র নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। জাতিসংঘের বিশেষ দলটি আন্দোলনে আটক বা আহত ব্যক্তিসহ অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা, প্রধান বিচারপতি, পুলিশ ও সশস্ত্র বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, আইনজীবী, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী, রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি এবং সংখ্যালঘু ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের সঙ্গেও বৈঠক করেছে। এসব বৈঠকে জাতিসংঘের এ দলটি অন্তর্বর্তী সরকারের অনুরোধ অনুযায়ী সাম্প্রতিক সহিংসতা এবং অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের তদন্তের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করেছে।
এছাড়া জাতিসংঘের বিশেষ দলটি ন্যায়বিচার ও মানবাধিকারের বিভিন্ন ইস্যু নিয়েও আলোচনা করেছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় গণতন্ত্রকে পুনরুজ্জীবিত করতে এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিতে বাংলাদেশের সব মানুষের জন্য মানবাধিকারকে এগিয়ে নিতে এ গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এবং জনগণকে সমর্থন করার জন্য উন্মুখ বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি। সূত্র: ওএইচসিএইচআর