সাইবার নিরাপত্তাসহ গণবিরোধী সব আইন ও মামলা বাতিলের দাবি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০২৪, ১০:১৮ পিএম
সাইবার নিরাপত্তা আইনসহ সব গণবিরোধী আইন ও মামলা বাতিলের দাবি জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে মুক্ত প্রকাশ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ মানবাধিকার সাংবাদিক ফোরামের আহম্মদ উল্লাহ, সাউথ এশিয়ান মিডিয়া সলিডারিটি নেটওয়ার্কের ভয়েস আহমেদ স্বপন মাহমুদ, গণমাধ্যম অধিকার কর্মী মাইনুল ইসলাম খান, গ্লোবাল ভয়েসেস-এর রেজওয়ান ইসলাম, আইনজীবী মো. সাইমুম রেজা তালুকদার, ফোরাম ফর ফ্রিডম এক্সপ্রেশন বাংলাদেশের সালিম সামাদ, মানবাধিকার কর্মী সাঈদ আহমেদ, উন্নয়ন কর্মী শারমিন খান, শামীম আরা শিউলী, পেন ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের ড. সৈয়দা আইরিন জামান এবং লেখক গবেষক ও মানবাধিকার কর্মী রেজাউর রহমান লেনিন প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বিগত কর্তৃত্ববাদী সরকার ২০২৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর গণদাবির প্রেক্ষাপটে নিপীড়নমূলক এবং নিবর্তনমূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ রহিত করেছিল। নাগরিকদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় এবং পর্যাপ্ত আলোচনা ছাড়াই তাড়াহুড়ো ও গণদাবি উপেক্ষা করে বাতিলকৃত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রায় একই আদলে সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩ নামে নতুন আরেকটি গণবিরোধী আইন প্রণয়ন করেছিল এবং আইনটি নিপীড়নমূলক চর্চা বজায় রেখে তা এখনও কার্যকর রয়েছে। একই সঙ্গে বিগত কর্তৃত্ববাদী সরকারের অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন জানিয়েছিলেন, বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে নতুন আইন প্রণয়ন হলেও আগের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গত পাঁচ বছরে যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, সেই মামলাগুলো চলবে। অন্যদিকে গণঅধিকার হরণ ও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে, সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বিগত কর্তৃত্ববাদী সরকার অনেকগুলো নতুন আইন-নীতিমালা খসড়াগুলো, যেমন- ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা আইন, ২০২৪ (খসড়া) ও ওভার দ্যা টপ (ওটিটি) কনটেন্টভিত্তিক পরিষেবা দেওয়া এবং পরিচালনা নীতিমালা-২০২১ এবং পুরাতন আইনের মধ্যে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০১ সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছিল। এ আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়া ও বাস্তবায়নে নাগরিকদের অংশগ্রহণ এবং দায়বদ্ধতা ছিল শূন্য থেকে মহাশূন্যময়; প্রস্তাবিত আইন-নীতিমালাসমূহ সংশোধন ও প্রণয়নে এবং পর্যালোচনার সময় ও সমতার সুযোগ ছিল অপর্যাপ্ত এবং অপরিছন্ন, যার নেতিবাচক ফল সরাসরিভাবে মানবাধিকার ও গণমাধ্যমের সংগঠনগুলো এবং কর্মীরা ভোগ করেছেন, এখনও করছেন এবং সামনের দিনগুলোতে আরও করবেন বলে আমরা মনে করি। কারণ অবৈধ এবং নিপীড়নমূলক আইনগুলো কার্যত রাষ্ট্র, শাসকশ্রেণি, ক্ষমতাধর, ও বিত্তবানদের স্বার্থই রক্ষা করে।
তারা বলেন, আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলতে চাই, নিরবিচ্ছিন ইন্টারনেট ব্যবহারের নিশ্চয়তা নাগরিক মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার। অন্যদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের বন ও পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ক্ষমতা একটা গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে পড়লে অসুবিধা হয় না। কিন্তু সরকার অগণতান্ত্রিক হলে তখন আইনের অপপ্রয়োগ হয়। তাই সাইবার নিরাপত্তা আইনের যে বিধানগুলো অপপ্রয়োগ করা হয়েছে, সেগুলো চিহ্নিত করে বাতিল করা হবে। মুক্ত গণমাধ্যম ও ডিজিটাল অধিকার কর্মী হিসাবে আমরা দৃঢ়কণ্ঠে বলতে চাই, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের মনে রাখা উচিত, বর্তমান সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলযোগ্য, কোনোভাবেই সংশোধনযোগ্য নয়; কেননা সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়া ছিল অবৈধ এবং বেআইনি। নাগরিকদের অংশগ্রহণ ছাড়াই এ আইনটি প্রস্তাব করা হয়েছিল এবং খুব দ্রুত খসড়াটি আইনে পরিণত করা হয়েছিল। সাইবার পরিসরের আইনের ব্যবহারই ছিল অপব্যবহার। একই সঙ্গে মনে রাখা দরকার অন্তর্বর্তী সরকারের দুজন উপদেষ্টা পর্যায়ক্রমে সংশোধিত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ও বাতিলকৃত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছিলেন এবং যে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যদিয়ে তারা জনসমর্থন ও মনোনয়ন পেয়েছেন, সরকার গঠন করেছেন, সেই ছাত্র-জনতার নেতৃস্থানীয় অনেকেই এ আইনসহ অপরাপর সাইবার সংক্রান্ত আইনগুলো দ্বারা মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছেন। সুতরাং সাইবার পরিসরের আইনগুলো বাতিলের ক্ষেত্রে একটি মনোনয়নমূলক নির্ভরযোগ্য দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের রয়েছে।
একই সঙ্গে বলতে চাই, বলবৎযোগ্য সাইবার নিরাপত্তা আইনটি জনস্বার্থ-সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ড এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মধ্যে পার্থক্য করতে ব্যর্থ হয়েছে। প্রায় সব ধারার সংজ্ঞায়নের ক্ষেত্রে অস্পষ্টতা ও অপ্রতুলতা রয়েছে, আইনে অনেক অপরাধের সংকীর্ণ সংজ্ঞায়ন করা হয়েছে এবং অপরাধের অভিপ্রায় সম্পর্কে পর্যাপ্ত নজর রাখা হয়নি এবং আন্তর্জাতিক সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত চুক্তির বিকশিত মানগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে করা হয়নি। আইন ও নীতিমালার অধীনে গঠিত ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সির কার্যক্রমের প্রতি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় বা সংস্থাগুলো কর্তৃক তত্ত্বাবধানের ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে অনুপস্থিত। একই বিষয়বস্তুকে কেন্দ্র করে একাধিক মামলা করার প্রবণতা, বিচার-পূর্ব কারাবাসের সময় সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট নীতির অনুপস্থিতি, বিচার-পূর্ব কারাবাসকে পরবর্তী সময়ে শাস্তি হিসেবে গণ্য করা, অপরাধের বিপরীতে ধারাগুলোর শাস্তির বিধান অধিকাংশে মাত্রাতিরিক্ত, অসম, অনুপাতহীন এবং অসামঞ্জস্যপূর্ণ, সাইবার ট্রাইব্যুনালের আদেশ বা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা উল্লেখ না থাকা এবং মিথ্যা হয়রানিমূলক কোনো মামলার প্রতিকার আইনে না থাকায় তা আমাদের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থা ও আইনের শাসনকে আরও জটিল এবং প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে।
সুতরাং এ আইন এবং মিথ্যা মামলাগুলো বাতিল এবং আইনটি সংশোধনের যে ধোঁয়াশা শুরু হয়েছে নাগরিক ও উপদেষ্টাদের মাঝে তা গ্রহণযোগ্য নয়। অবশ্যই উপদেষ্টা পরিষদকে দ্রুত অধ্যাদেশ জারি করে সাইবার নিরাপত্তা আইনটি বাতিল করতে হবে এবং অবশ্যই তথ্য ও যোগযোগ প্রযুক্তি আইন; ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও সাইবার নিরাপত্তা আইনের শিকার ব্যক্তিদেরকে মুক্ত করতে হবে। একই সঙ্গে মুক্ত গণমাধ্যম ও ডিজিটাল অধিকার কর্মী হিসেবে আমরা বলিষ্ঠভাবে মনে করি, পুরাতন চারটি প্রশাসনিক সংগঠনগুলোর সাইবার আইনে গঠন (জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা কাউন্সিল, জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি, জাতীয় কম্পিউটার ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম কিংবা ক্ষেত্রবিশেষে কম্পিউটার ইন্সিডেন্ট রেসপন্স টিম এবং ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব) প্রক্রিয়ায় স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচারবিভাগীয় বা সংস্থা কর্তৃক তত্ত্বাবধানের সম্পূর্ণভাবে অনুপস্থিতি; অপরাধের অভিপ্রায় সম্পর্কে পর্যাপ্ত তত্ত্বগত জ্ঞানের অনুপস্থিতি; আন্তর্জাতিক সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত চুক্তির বিকশিত মানগুলোর সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণতা, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক আইনের অপব্যবহার হলে বিচারিক জবাবদিহিতার অনুপস্থিতি এবং শিশু আদালতের সংশ্লিষ্টতা ছাড়াই আগামীতে সাইবার পরিসরে অভিযুক্ত শিশুদের বিচার এবং শাস্তি দেবার আইনগত ভিত্তি তৈরি করেছে। যা নাগরিকদের চিন্তা, বিবেক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা, ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার আইনে সমান আশ্রয় লাভের অধিকার এবং শিশুদের জন্য অধিকতর সুরক্ষা দেওয়ার মতো মৌলিক মানবাধিকারগুলোকে ক্ষুন্ন করেছে এবং করছে। প্রায় সবগুলো অপরাধের শাস্তি কমানো এবং কিছু ধারার সংস্কার করা হয়েছে। কিন্তু এরপরেও আইনে শাস্তির পরিমাণ অধিকাংশ ক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত, অসম, অনুপাতহীন এবং অসামঞ্জস্যপূর্ণ রয়ে গেছে। তবে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মিথ্যা, প্রতারণা ও হয়রানিমূলক কোন মামলা করা হলে প্রতিকারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কিন্তু যাঁরা এখন পর্যন্ত মিথ্যা, প্রতারণা ও হয়রানিমূলক মামলার বা সরকারি কর্মকর্তাদের কর্মকাণ্ডে ক্ষতির শিকার হয়েছিলেন এবং হচ্ছেন, তাদের সামাজিক, রাজনৈতিক ও আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আইনি ব্যবস্থা না করা এবং নৈতিক হ্যাকিংকে অপরাধিকীকরণ করা নিন্দনীয় এবং গর্হিত। অন্যদিকে গ্রেফতারি পরোয়না ছাড়া আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ক্ষমতা অর্পণ বা কোনো আদালতের আদেশ ব্যতীত সন্দেহবশত গ্রেফতার, মালামাল জব্দ এবং অপরাধ হবার সম্ভাব্যতায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে এক প্রকার অবাধ বিচারিক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
একই সঙ্গে জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা কাউন্সিলে মন্ত্রীপরিষদের সদস্য, আমলা, বিভিন্ন বাহিনী প্রধান, বিভিন্ন সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার মহাপরিচালকদের অংশগ্রহণের অবারিত ক্ষমতা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ থাকলেও, নাগরিকদের অংশগ্রহণের ক্ষমতা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা হয়নি। নাগরিক সমাজের সদস্যদের প্রয়োজনীয় এবং সমানুপাতিক অংশগ্রহণও নিশ্চিত করা হয়নি। এর ফলে সাইবার পরিসরে ব্যক্তি এবং সামষ্টিক সুরক্ষার ধারণা আরও সংকুচিত হবে এবং সাইবার পরিসরকে করে তুলেছে গোয়েন্দাময়।
সর্বশেষ এ প্রেক্ষাপটে আমরা বলতে চাই, সাইবার পরিসর সংক্রান্ত কার্যকর আইনি-বিধি ও বিধানগুলো ভাঙা-গড়ার মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হলেও, বিগত দশকগুলোতে নাগরিকদের স্বাধীনতার পরিবর্তে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে আইন- নীতিমালাগুলো প্রণয়ন করা হয়েছে। এর ফলে আইনগুলো নাগরিকদের জীবন-জীবিকার অধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সভা-সভাবেশ ও সংগঠনের স্বাধীনতা ও গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার ও নানাবিধ নাগরিক মৌলিক অধিকারকে নিয়ন্ত্রণ করছে এবং নাগরিকদের মাঝে বিশেষ করে যুবসমাজের প্রতিনিধিদের জনবান্ধবমূলক কর্মকাণ্ডকে সীমাবদ্ধ ও অপরাধীকরণ করা হয়েছে। সাইবার পরিসরের আইনগুলো উল্লিখিত প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠানগুলো সংগঠিত হয়েছে শহর কেন্দ্রিক এবং প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের গতি-প্রকৃতি এবং সমীকরণে রয়েছে ভিন্নতা, যা কোনোভাবে গণতান্ত্রিক ও মানবাধিকার বান্ধব নয়। বিচারিক প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে সাইবার আপিল ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রেও রয়েছে সরকারের প্রায় ১৭ বছরের অবহেলা। যা বিচার প্রক্রিয়াকে করেছে অবরুদ্ধ এবং নিপীড়নমূলক।
এ প্রেক্ষাপটে মুক্ত প্রকাশ সংগঠনের পক্ষে মুক্ত গণমাধ্যম ও ডিজিটাল অধিকার কর্মীরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে বলবৎযোগ্য সাইবার নিরাপত্তা আইন অচিরে বাতিল করে গণতান্ত্রিক, মানবিক, জনবান্ধবমূলক ও অংশগ্রহণমূলক আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন করার বলিষ্ঠ দাবি জানাচ্ছি।
একই সঙ্গে আমরা স্পষ্টভাবে মনে করি, নিপীড়নমূলক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬, বাতিলকৃত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ ও সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩ যেহেতু অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্রণয়ন করা হয়েছিল, সেহেতু এ সব আইনের অধীন সব মামলা বাতিল করতে হবে।
সাইবার পরিসরকে নিয়ন্ত্রণ করবার জন্য যে সব আইন-নীতিমালা সংশোধন এবং নতুন করে প্রণয়নের প্রক্রিয়া বিগত কর্তৃত্ববাদী সরকার শুরু করেছিল, তা অচিরে বাতিল করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আইন প্রনয়ণ করতে হবে। যাতে করে অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের অংশগ্রহণ, নিরপেক্ষতা, পর্যালোচনায় পর্যাপ্ত সময় ও সমতার সুযোগ এবং নাগরিকদের নিকট দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে পারে। সাইবার নিরাপত্তা আইনটিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রায় সব নিবর্তনমূলক ধারা প্রায় অক্ষুন্ন রাখা হয়েছে। যার ব্যবহারই অপব্যবহারে রূপ নিয়েছে এবং অথাযিতভাবে নাগরিকদের মৌলিক অধিকারগুলোকে ক্ষুন্ন করছে।
একই সঙ্গে আমরা স্পষ্টভাবে মনে করি, এ আইনটি ব্যবহার করে গণআন্দোলনের সময় বিগত শেখ হাসিনার সরকার এবং সরকারের ব্যক্তি, সংস্থা এবং মন্ত্রীরা দেশজুড়ে ইন্টারনেট বন্ধ করে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। গুম, খুন, হত্যা, নির্যাতন-নিপীড়ণের শিকার হয়েছেন শত শত মানুষ।