Logo
Logo
×

জাতীয়

নিষ্পেষিত উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তারা

Icon

কায়েস আহমেদ সেলিম 

প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২৪, ০৬:০৫ পিএম

নিষ্পেষিত উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তারা

উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে ১৫ আগস্ট ৯ জনের প্রতিনিধি দল বাহিনীটির মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল আব্দুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে। এ সময় তারা চারটি দাবি পেশ করেন।

দাবিগুলো হলো ১. সার্কেল অ্যাডজুট্যান্ট/উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা/সহকারী অ্যাডজুট্যান্ট পদকে নবম গ্রেড এবং উপজেলা প্রশিক্ষক/প্রশিক্ষিকা পদকে দশম গ্রেডে উন্নীতকরণ। ২. উপজেলায় বরাদ্দগুলো ঠিকভাবে প্রদানের ব্যবস্থা করা। ৩. বাহিনী প্রধানের সঙ্গে বছরে দুবার মতবিনিময় সভার আয়োজন করা। ৪. সিরিমোনিয়াল ড্রেস পরার ব্যবস্থা করা। 

বিভিন্ন উপজেলা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলা পর্যায়ের অধিকাংশ বরাদ্দ জেলা কোডে দেওয়া হয়, যার প্রায় সবই জেলা কর্মকর্তারা উপজেলায় দেন না। বিভিন্ন বিল-ভাউচার করে নিজেদের পকেটে ঢোকান। জেলা আনসার কার্যালয়ের হিসাব রক্ষকদের সহায়তায় এ কাজ করেন জেলার কর্মকর্তারা। সাধারণ আনসারের সিসি ও বদলির ঘুস জেলার অফিস সহকারী ও হিসাব রক্ষকের মাধ্যমে করা হয়। তারাই জেলা কমান্ড্যান্টের এসব অপকর্মের সাক্ষী বলে জানান ঢাকার এক আনসার সদস্য।

তুলনামূলক বরাদ্দের চিত্রে দেখা যায় অধিকাংশ বরাদ্দ জেলায়। উপজেলায় বরাদ্দ খুবই কম। অথচ বাহিনীর তৃণমূল পর্যায়ের প্রাণ হলো উপজেলা কার্যালয়। স্থায়ীয় পর্যায়ের সব কাজই উপজেলার মাধ্যমে হয় অথচ ভাতা সংক্রান্ত আর্থিক বিষয়গুলো জেলা থেকে নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে আনসার ভিডিপি সদস্যরা তাদের ভাতা উত্তোলনের জন্য উপজেলাকে পাশ কাটিয়ে জেলায় ধরনা দেন। 

বিভিন্ন উপজেলায় কথা বলে জানা যায়, প্রতি বছর আনসারের জেলা কার্যালয়ে বিভিন্ন জাতীয় দিবস, দুই ঈদ, মাহফিল ও জাতীয় সমাবেশ উপলক্ষ্যে একটা বড় অংশ বরাদ্দ দিলেও তার কানাকড়িও উপজেলায় পৌঁছায় না। সামান্য কিছু দিলেও তা উপজেলাগুলোর প্রকৃত খরচের তুলনায় কম।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খুলনা রেঞ্জের অধীন এক উপজেলা কর্মকর্তা বলেন, নির্বাচন ও দুর্গাপূজার আনুষঙ্গিক খরচের বরাদ্দ জেলা কমান্ড্যান্টদের অনুক‚লে দেওয়া হয়। জেলা কর্মকর্তারা আনুষঙ্গিক খরচের অর্থ উপজেলাসমূহে অর্ধেক কিংবা এক তৃতীয়াংশ দেন। আবার কোথাও এক টাকাও দেন না। অথচ নির্বাচন ও দূর্গাপূজা উপলক্ষ্যে উপজেলাভেদে ৪০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। জেলা কমান্ড্যান্টদের এমন বিমাতাসুলভ কর্মকাণ্ড দেখার কেউ নেই।

মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা জানান, উপজেলা নির্বাচন শেষ হয়েছে প্রায় ৩ মাস। কিন্তু কুড়িগ্রামসহ অনেক জেলা কমান্ড্যান্ট এখনো নির্বাচনের আনুষঙ্গিক ও তদারকি ভাতা উপজেলা কর্মকর্তাদের দেননি। আরেক জেলা কমান্ড্যান্ট বই লিখে উপজেলা কমকর্তাসহ আনসার ভিডিপি সদস্যদের কিনতে বাধ্য করেছেন। 

যারা ডিজি কর্ড ছিলেন তাদের অনেকে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কর্মকর্তাদের চাপ দিয়ে বহু টাকা উপার্জন করেছেন। খোঁজ নিলে সম্পত্তির হিসাবে সব পাওয়া যাবে। একটা নির্বাচনে খরচ হয় প্রায় ৪০ থেক ৫০ হাজার টাকা। 

উপজেলা অফিসার খরচের টাকা চাইতে গেলে বলেন, টাকা কি তোমাদের দিয়েছে? টাকা দিলেও ছয় থেকে ১০ হাজার টাকা দেন। তখন উপজেলা অফিসাররা দুর্নীতি করেন। সদস্যদের কাছ থেকে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা করে নিয়ে তারপর ডিউটি দেন। খরচটা ওঠান। মাঝে মাঝে অনেক জেলা কমান্ড্যান্ট এটারও ভাগ নেন। মনিটরিংরাও নেয়। এভাবেই চলছে বাহিনী। আমরা চাই এসব দুর্নীতি বন্ধ হোক। উপজেলা ইউনিট হিসাবে গণ্য হোক।
তারা আরও জানান, বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে উপজেলা কর্মকর্তাদের সরাসরি কোনো যোগাযোগ না থাকায় উপরের মহলে এসব বিষয় তারা জানাতে পারেন না। এখন তাদের পদটি আপগ্রেডেশন হলে এ সমস্যার কিছুটা হলেও সমাধান হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম