বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন
ঢাকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও চারজনের মৃত্যু
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৬ আগস্ট ২০২৪, ১০:৪০ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেনÑচাঁদপুরের অ্যাডভোকেট আবুল কালাম (৫৫), চুয়াডাঙ্গার রাজমিস্ত্রী উজ্জ্বল হোসেন (৩০), নোয়াখালীর দোকান কর্মচারী আসিফ (২৬) ও বরগুনার আলআমিন (২৭)। শুক্রবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে।
অ্যাডভোকেট আবুল কালামের বাড়ির চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে। তিনি কুমিল্লা সদর উপজেলার মহিলা কলেজ রোডে থাকতেন। ধানমন্ডি থানার এসআই আকিব নূর নিহতের মৃতদেহের সুরতহাল প্রতিবেদনে উলেখ করেন, ৫ আগস্ট সরকারের পদত্যাগের এক দফার কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন আবুল কালাম। কুমিল্লা হাই স্কুল সংলগ্ন রাস্তায় সিটি করপোরেশনের ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রায়হান ও তার বাহিনী আবুল কালামের ওপর হামলা চালায় এবং তাকে গুলিবিদ্ধ করে। ওইদিনই তাকে স্থানীয় হাসপাতালে ও পরে ৬ আগস্ট উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার ধানমন্ডি পপুলার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ আগস্ট সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত উজ্জ্বল হোসাইনের বাড়ি চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার মুক্তারপুর গ্রামে। তার বাবার নাম আলতাফ হোসাইন। উজ্জ্বলের স্ত্রী শিলু আক্তার জানান, পেশায় তিনি রাজমিস্ত্রী ছিলেন। ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় তিনি স্থানীয় মুক্তারপুর মোল্লাবাজারে যান। বাজারের একটি হার্ডওয়ারের দোকানে ধরিয়ে দেওয়া হয়। ওই দোকানে উজ্জ্বলসহ এলাকার বেশ কয়েকজন বসেছিলেন। দোকানে থাকা গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে উজ্জ্বলসহ আরও কয়েকজন গুরুতর আহত ও দগ্ধ হন। তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলের পুরাতন বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। শরীরের ৬৬ শতাংশ দগ্ধ হওয়ায় শুক্রবার ভোরে মারা যান উজ্বল।
মোর্শেদ আলমের ছেলে নিহত আসিফের বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের মীর আলিপুর গ্রামে। তার প্রতিবেশী জামালা উদ্দিন ও শাহবাগ থানার এসআই ফারুক আহমেদ জানান, আসিফ কিছুদিন আগে পড়ালেখা ছেড়ে দিয়ে এলাকায় একটি দোকানে কাজ করতেন। ৫ আগস্ট সোনাইমুড়িতে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। ওইদিনই তাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ৭ আগস্ট তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ আগস্ট রাতে তিনি মারা যান।
আনোয়ার হোসেন বাবুর ছেলে নিহত আলআমিনের বাড়ি যশোরের চৌগাছার আফরা গ্রামে। নিহতের ছোট ভাই মো. রাসেল হোসেন জানান, বরগুনার আমতলীতে রেনেটা ওষুধ কোম্পানির সেলসম্যানের চাকরি করতেন আলআমিন। থাকতেন আমতলী শহরে। ৫ আগস্ট কাজ শেষে তিনি বাসায় ঘুমিয়ে ছিলেন। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে বাসার নিচ তলায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আগুন ছড়িয়ে পড়লে আলামিনসহ কয়েকজন দগ্ধ হন। শরীরে আগুন নিয়েই দ্বিতীয় তলা থেকে লাফিয়ে রাস্তায় পড়েন আলআমিন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেলে ভর্তি করেন। পরদিন ৬ আগস্ট তাকে ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে এনে ভর্তি করা হয়। শরীরের ৩৬ শতাংশ দগ্ধ হওয়ায় শুক্রবার ভোরে আইসিইউতে তিনি মারা যান।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া চারজনের মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেন।