Logo
Logo
×

জাতীয়

মুগ্ধকে নিয়ে প্রতিবেদন করল সিএনএন

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৪, ০৫:৫৭ পিএম

মুগ্ধকে নিয়ে প্রতিবেদন করল সিএনএন

শহীদ মুগ্ধের স্মরণে বানানো একটি ছবি। ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

কোটা সংস্কার আন্দোলনে গুলিতে শহীদ হন মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পানি পান করাতে গিয়ে নিহত হন তিনি। মুগ্ধের সেই মহানুভবতা ও সাহসিকতার গল্প ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বজুড়ে। সোমবার তাকে নিয়ে বিশদ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

‘বিক্ষোভকারীদের হাতে পানির বোতল তুলে দিচ্ছিলেন এই ছাত্র, কয়েক মিনিট পরেই মারা যান তিনি’ শিরোনামে ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) ছাত্র ও ফ্রিল্যান্সার মুগ্ধর পরিবারের স্বজনদের কথাও তুলে ধরা হয়েছে।

মুগ্ধকে নিয়ে সিএনএন লিখেছে, টি-শার্টের হাতা দিয়ে জ্বালাপোড়া করা চোখ মুছতে মুছতে ২৫ বছর বয়সি মুগ্ধ ভিড়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন এবং বিক্ষোভকারীদের হাতে পানির বোতল তুলে দিচ্ছিলেন।

১৫ মিনিট পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের এ শিক্ষার্থী শহীদ হন। রাজধানী ঢাকার উত্তপ্ত বিকালে বিশ্রাম নেওয়ার সময় একটি বুলেট তার কপাল ভেদ করে চলে যায়।

মুগ্ধর বন্ধু ও অন্য বিক্ষোভকারীরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। তার যমজ ভাই স্নিগ্ধের পুরো নাম মীর মাহবুবুর রহমান। তিনি জানান, আমি শুধু তাকে জড়িয়ে ধরেছিলাম এবং কেঁদেছিলাম।

১৮ জুলাই মৃত্যুর আগে মুগ্ধর পানি দেওয়ার ভিডিওটি সারাদেশে লাখ লাখ সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীর মনে আঘাত করে। এটি নিহতদের জন্য ন্যায়বিচার চাইতে আরও বেশি মানুষকে রাস্তায় নামতে উদ্বুদ্ধ করেছিল।

আন্দোলনের পর বাংলাদেশে এখন শান্ত পরিবেশ বিরাজ করছে। অনেক পরিবার এখন তাদের প্রিয়জনের মৃত্যুর জন্য দায়ীদের বিচার চাইছে। যমজ ভাই মুগ্ধ ও স্নিগ্ধ জন্ম থেকেই একসঙ্গে ছিলেন। খাওয়া, ঘুম, পড়াশোনা একসঙ্গে করতেন তারা।

স্নিগ্ধ বলেন, সে শুধু আমার ভাই ছিল না, আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু ছিল। আমার শরীরের একটি অঙ্গ ছিল। আমরা একসঙ্গে সব কিছু করতাম।

গণিতে স্নাতক ছিলেন মুগ্ধ, এরপর ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতকোত্তর (এমবিএ) পড়ছিলেন। আর স্নিগ্ধ আইনে স্নাতক করেছেন। এ দুই যমজ ভাই ইতালিতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। মোটরসাইকেলে ইউরোপ ঘুরে বেড়ানোর ইচ্ছা ছিল তাদের। অনলাইন ফ্রিল্যান্সার হাব ফাইভআরে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের কাজ করে ভ্রমণের জন্য টাকা জমাতেন তারা।

এখন স্নিগ্ধ ও তাদের বড় ভাই দীপ্ত (পুরো নাম মীর মাহমুদুর রহমান) মুগ্ধবিহীন এক ভবিষ্যতের মুখোমুখি। তারা মুগ্ধের বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্রটি রেখে দিয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হওয়ার সময় এটি তার গলায় ছিল। পরিচয়পত্রটিতে আজও লেগে রয়েছে রক্তের দাগ, যা সেই অন্ধকার দিনেরই প্রতীক।

এখন প্রতিবাদী আন্দোলনে মুগ্ধ যে প্রভাব ফেলেছেন, তা থেকেই সান্ত্বনা খোঁজার চেষ্টা করছেন দুই ভাই দীপ্ত ও স্নিগ্ধ। স্নিগ্ধ বলেন, তার (মুগ্ধ) কারণে মানুষ প্রতিবাদ করার শক্তি পেয়েছে। সে সব সময় বলতো, ‘আমি আমার মা-বাবাকে একদিন গর্বিত করবো।’ সেই মুহূর্তটি চলে এসেছে।

বিক্ষোভের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত ছিল ১৬ জুলাই, যেদিন ২৫ বছর বয়সি আবু সাঈদের মৃত্যু হয়। আবু সাঈদের মৃত্যুর ভিডিওটি ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছিল। তার দু’দিন পর মুগ্ধ মারা যান।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম