ছবি: সংগৃহীত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও কর্নেল আবু তাহেরের ভাই মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেনের ওপর হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ায় তার গলা কেটে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে। সরকার পতনের দিন এ হামলা করা হয় বলে জানিয়েছে তার পরিবার। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে হামলার ঘটনা ঘটে। এ কারণে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে নিরাপত্তা চেয়েছে তার পরিবার।
শুক্রবার আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী আয়েশা হোসেন গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেন, অধ্যাপক এম আনোয়ার হোসেন ৫ আগস্ট সোমবার বিকাল ৪টার পর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনে ‘কিছু ডানপন্থি ধর্মান্ধের’ দ্বারা নির্মমভাবে আক্রমণের শিকার হয়েছেন।
তিনি বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর বিগত সরকারের হামলার সমালোচনা করেছিলেন আনোয়ার হোসেন। তিনি ৫ আগস্ট বিকালে ছেলে ও ছেলের বন্ধু এবং সহকর্মীদের সঙ্গে যোগ দিতে সপরিবার শাহবাগে যাওয়ার জন্য উত্তরা থেকে রওয়ানা হন। বিমানবন্দরের ঠিক সামনে পৌঁছালে ৪০ বছরের কাছাকাছি বয়সি এক ব্যক্তি অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনের কাছে এসে চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘আমি আপনাকে চিনতে পেরেছি। আপনি সেই অধ্যাপক, যিনি ট্রাইব্যুনালে (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে) জামায়াতের বিরুদ্ধে ছিলেন। আপনাকে টেলিভিশনে দেখেছি।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ওই ব্যক্তি আনোয়ার হোসেনকে বিমানবন্দরের উলটো দিকের একটি সরু গলিতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। আরও বেশ কয়েকজন উত্তেজিত লোক চারপাশে জড়ো হয়ে ‘নারায়ে তাকবির’ বলতে থাকেন। আনোয়ার হোসেন জামায়াতের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন এবং তার গলা কেটে ফেলা হবে বলে উল্লেখ করেন একজন। উত্তেজিত ব্যক্তিরা বিভিন্ন জিনিস দিয়ে তার ওপর হামলা করেন। পরিবারের লোকজন তখন আনোয়ার হোসেনকে হামলা থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। পাশাপাশি আরও দুজন এসে হামলাকারীদের বাধা দেন। পরে সেখান থেকে আনোয়ার হোসেনকে বিমানবন্দরে থাকা সেনা ব্যারিকেডের মধ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। বিমানবন্দরে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এই বিবৃতি দেওয়ার ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন পর্যন্ত অপেক্ষা করেছেন বলে জানান আয়েশা হোসেন। তিনি অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, তার পরিবারসহ যারা হামলার ঝুঁকিতে আছেন, তাদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য বর্তমান সরকারের পদক্ষেপ চেয়েছেন।