Logo
Logo
×

জাতীয়

আ.লীগ-বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের পালটাপালটি সংবাদ সম্মেলন

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৪, ০৯:৪৪ পিএম

আ.লীগ-বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের পালটাপালটি সংবাদ সম্মেলন

কোটা সংস্কার দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সহিংসতা ও ধ্বংযজ্ঞ নিয়ে আওয়ামী লীগ-বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা পালটাপালটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার দুপুরে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক বলেন,  কোটা নিয়ে সংবিধানের ১০৪ ধারা প্রয়োগ করে আপিল বিভাগ রায় দিয়েছেন। যদিও এটা পলিসি ডিসিশন, পলিসি মেটার সব সময় সরকার সরকারের নির্বাহী বিভাগ নির্ধারণ করে থাকে। এটা আমাদের সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ থেকে ছয়টি রায়ের বলে প্রতিষ্ঠিত।

আপিল বিভাগ তার নিজস্ব ক্ষমতাবলে যে নির্দেশনা দিয়েছেন, সেই নির্দেশনা মোতাবেক ৯৩ শতাংশ সাধারণ কোটা বা মেধা কোটা, ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরঙ্গনার সন্তানদের জন্য, ১ শতাংশ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও ১ শতাংশ শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য কোটা নির্ধারণ করেন।  

তিনি বলেন, কিছু দুষ্কৃতিকারি দেশের বাইরে সংবাদ প্রচার করছে একতরফাভাবে। গতকাল পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিদেশী কূটনৈতিকদের নিয়ে ধ্বংসজ্ঞ পরিদর্দশন করেছেন। পরিদর্শন শেষে সবাই বিষ্মিত হয়েছেন। স্বাধীনতার পর এই প্রথম বাংলাদেশে স্বাধীনতা বিরোধীচক্র অন্যায়মূলক কর্মকাণ্ড করেছে। আগে তারা আগুন দিতো রেল লাইনে, এবার তারা আগুন দিয়েছে মেট্রোরেলে। আগে তারা সাধারণ বাস পুড়তো এবার এক্সপ্রেসওয়ে পুড়িয়েছে। আগে তারা হতাহত করতো এবার তারা কিলিং মিশনে নেমেছিল। এবার তারা ডেটা সেন্টারে আগুন দিয়েছে। সেতু ভবনে আগুন দিয়েছে।

শাহ মঞ্জুরুল হক বলেন,  বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে স্মার্ট বাংলাদেশে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তা ব্যহত করার জন্যই স্বাধীনতা বিরোধী চক্র এ সব ঘটনা ঘটিয়েছে। বারের পক্ষ থেকে আমরা এর নিন্দা জানাচ্ছি।

বিএনপিপন্থি আইনজীবী সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি এএম মাহবুব উদ্দিন খোকনকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, তারা আগে একটা সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এটা সভাপতির ব্যক্তিগত ইস্যু। উনি বলেছেন, সরকারের পক্ষ থেকে আরও তাড়াতাড়ি উদ্যোগ নিলে ভালো হতো। আমি উনাকে প্রশ্ন করতে চাই, তিনি আপিল বিভাগে কোটা নিয়ে শুনানির দিন ডায়াসে দাঁড়িয়ে এ কথা বলেছিলেন। তখন প্রধান বিচারপতি উনাকে কি বলেছিলেন। আপনারা সবই জানেন। বারের সভাপতির পক্ষে এ ধরণের কথা মানায় না। বের হওয়ার পরে তিনি সাংবাদিকদের সামনেও চেষ্টা করেছিলেন এ কথা বলার।

শাহ মঞ্জুরুল হক বলেন, এখনও উনারা (বিএনপি) পেছনে পেছনে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। উনাদের কোনো শক্তিই নাই। এ সময় উপস্থিত আইনজীবীরা ভুয়া ভুয়া বলে চিৎকার করতে থাকেন। 

তিনি বলেন, ভুয়া শক্তি হয়ে পেছনে পেছনে দৌড়াচ্ছেন। সামনে যাবার সাহস পান না। যখনি কোনো আন্দোলন দেখেন, তখনি খড়কুটার মতো ভাসমান অবস্থায় বিএনপি বিভিন্ন আন্দোলন ধরতে চায়। তাদের স্বপ্ন বাস্তাবায়ন হবে না। যারা এসব ধ্বংসযজ্ঞের সঙ্গে জড়িত তাদের বিচার দাবি করছি। আর যদি কেউ (সাধারণ ছাত্র) হয়রানিমূলক গ্রেফাতার হয়ে থাকেন আইনমন্ত্রী বলেছেন, তথ্য জানালে তাদের ব্যপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।    

কারফিউ প্রত্যাহার ও গ্রেফতার আইনজীবীদের মুক্তি দাবি খোকনের : দেশে চলমান কারফিউ প্রত্যাহার এবং ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম চালু ও মানুষের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন। একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী, ব্যারিস্টার আন্দালিভ রহমান পার্থ, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীমসহ সব আইনজীবীর মুক্তি দাবি করেন তিনি।

ব্যারিস্টার খোকন বলেন, ‘তদন্ত শুরুর আগেই বিরোধী নেতাকর্মীদের গ্রেফতার শুরু করেছে সরকার। তদন্ত ছাড়াই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের নাম উল্লেখ করে বক্তব্য দিচ্ছেন। এটা আইনের শাসনের পরিপন্থি। অবিলম্বে এটা বন্ধ করতে হবে।’

সুপ্রিম কোর্ট বার সভাপতি বলেন, ‘ভিডিও ফুটেজে স্পষ্ট দেখা গেছে পুলিশ খুব কাছ থেকে নিরস্ত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা করেছে। অথচ পুলিশ বাদী হয়ে রংপুরের তাজহাট থানায় যে মামলা করেছে সেখানে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীসহ বিরোধী নেতাকর্মীদের দায়ী করে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এসব হত্যার সঙ্গে জড়িতদের অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’

বাংলাদেশের সব ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়াকে অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা সত্য সংবাদ তুলে ধরুন, এটা আপনাদের জাতীয় দায়িত্ব। কোনো ধরনের একপেশে সংবাদ পরিবেশন করবেন না। সরকারের কাছে দেশের চলমান কারফিউ প্রত্যাহার এবং বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম চালু ও মানুষের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণের দাবি জানাচ্ছি।’ 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন-সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য সৈয়দ ফজলে ইলাহী অভি, ফাতেমা আক্তার প্রমুখ।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম