কোটা আন্দোলনে ইন্টারনেট বন্ধ, বাড়ল জনভোগান্তি
পরিস্থিতির প্রয়োজনীয়তায় ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছে: প্রতিমন্ত্রী পলক
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৮ জুলাই ২০২৪, ০৮:২০ পিএম
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘাত ও প্রাণহানির ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে দেশে ইন্টারনেট সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাতে দুর্ভোগে পড়েছেন বেশিরভাগ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা।
মোবাইল ডেটা বন্ধ করার কথা জানিয়ে বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, এটা পূর্বের কোনো ঘোষণা ছিল না। পরিবেশ-পরিস্থিতির প্রয়োজনীয়তার পরিপ্রেক্ষিতে গোয়েন্দা সংস্থা এবং আইনশৃখ্লা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতার স্বার্থে আমরা প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছি। আমরা লক্ষ্য করছি যে কোথা থেকে কারা এ অর্থায়ন করছে, কোথা থেকে কারা এ কনটেন্ট তৈরি করেছে।
তিনি বলেন, তার জন্য আমরা ফিজিক্যাল এবং ডিজিটাল ইন্টেলিজেন্স ব্যবস্থা জোরদার করছি। আমরা আশা করছি, খুব অল্প সময়ের মধ্যে আমরা পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটাতে পারব।
মঙ্গলবার রাত থেকেই মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করে ফেসবুক, মেসেঞ্জার চালাতে পারেননি ঢাকার গ্রাহকরা৷
মিরপুরের বাসিন্দা এমদাদ হোসেন বলেন, অন্যান্য দিন মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করে ফেসবুক, মেসেঞ্জার চালাতে না পারলেও বাকি সেবা পাচ্ছিলেন। তবে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সেসবও বিঘ্ন হচ্ছে৷
তিনি বলেন, হোয়াটসঅ্যাপেও কল যাচ্ছে না। ওয়েবসাইট, ই-মেইল কোনো কিছুই ব্যবহার করতে পারছি না৷ ওয়াইফাইয়ে না থাকলে একেবারেই সবকিছুর বাইরে চলে যাচ্ছি।
নরসিংদীর বাসিন্দা জুনায়েদ আহমেদ শাকিল বলেন, সকাল থেকে তিনিও মোবাইল ডেটা ব্যবহার করে কোনো যোগাযোগ করতে পারেননি।
মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করার কারণ জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, সোশাল মিডিয়াকে গুজব, মিথ্যা, অপপ্রচার চালানোর অস্ত্র হিসেবে বেছে নিয়েছে একটি গোষ্ঠী। শুধু দেশের ভেতর থেকে না, দেশের বাইরে থেকে কিছু কনন্টেন্ট বুস্ট করা হচ্ছে। তার মানে টাকা দিয়ে মিথ্যা খবরটাকে সবার কাছে পৌঁছে দেওয়ার যে অপকৌশল বা ষড়যন্ত্র- এটা যখন আমরা দেখছি তথ্যউপাত্ত এবং গোয়েন্দা সংস্থার সব বিশ্লেষণে; তখন আমরা মনে করছি, দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার স্বার্থে আমাদের যার যতটুকু সক্ষমতা আছে, সেটা করা দরকার।
প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, একদিকে পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তারা চেষ্টা করছে- তাদের নিরাপত্তা রক্ষা করা, আমরা সাইবার নিরাপত্তাটা নিশ্চিত করার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। যে জায়গায় যে ধরনের ভূমিকা নেওয়া উচিত বা প্রয়োজন, সেটাই আমরা চেষ্টা করছি।
আমরা বারবার সহযোগিতা চাচ্ছি, এখন আজকে তারা যোগাযোগ করছে। তারপরও আমরা খুব বেশি আশস্ত বা আশাবাদী হতে পারছি না। কারণ তারা যেসব দুর্বল যুক্তি দেখাচ্ছে, সেগুলো কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য না।
পলক বলেন, তাদের যে প্রাইভেসি পলিসি আছে, তা আমাদের কাছে যৌক্তিক মনে হচ্ছে না। তারা দেশভিত্তিক, ঘটনাভিত্তক তাদের প্রতিক্রিয়া দেখায়। তাদের পলিসি বাংলাদেশের বেলায় একরকম, মিয়ানমারের বেলায় একরকম, ইসরাইল-ফিলিস্তিন ব্যাপারে একরকম, ইউক্রেইন-রাশিয়ার ব্যাপারে একরম, ইউরোপ-আমেরিকা অস্ট্রেলিযার জন্য আরেকরকম, সিঙ্গাপুরের জন্য আরেককম। এটা তো হতে পারে না।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ফেসবুক, ইউটিউব, গুগল, টিকটক-সবাইকে আমরা বলে দিচ্ছি, আমাদের দেশের প্রত্যেকটি প্রাণের মূল্য আছে। এ ধরনের ক্ষতি যদি আগামীতে এদের কারণে হতে থাকে, আমরা এটা কখনই ছাড় দেব না।
তিনি বলেন, আমরা চাই তারা যেন বাংলাদেশে অফিস, ডেটা সেন্টার চালু করে। আমাদের আইন মেনে চলে।