Logo
Logo
×

জাতীয়

যুগান্তর কখনো আপস করেনি, ভবিষ্যতেও করবে না: সাইফুল আলম

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২৪, ০৩:৩৪ পিএম

যুগান্তর কখনো আপস করেনি, ভবিষ্যতেও করবে না: সাইফুল আলম

বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম

দৈনিক যুগান্তর সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম বলেছেন, যুগান্তরের জন্মলগ্ন থেকে এই প্রতিষ্ঠানে আছি; আমরা কখনো অন্যায়ের সঙ্গে আপস করিনি, আগামী দিনেও করব না। সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশে পিছু-পা হব না। আমাদের এই সাহস ও প্রেরণার বাতিঘর নুরুল ইসলাম।

বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং যমুনা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়ার অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্যে সাইফুল আলম এসব কথা বলেন।

শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় যুগান্তর ভবনের ৫ম তলায় এ আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ২০২০ সালের এই দিনে চিরবিদায় নেন দেশের সফল উদ্যোক্তা নুরুল ইসলাম।

যুগান্তর সম্পাদক বলেন, নুরুল ইসলাম আজ সশরীরে এখানে উপস্থিত নেই। কিন্তু আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি-সবার মধ্যে তিনি আছেন। যারা এখানে এসেছেন, ভালোবাসার টানে এসেছেন। অন্তরে প্রয়াত চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের প্রতি ভালোবাসা রয়েছে বলেই আমরা এখানে এসেছি। তার মানে এই নয় যে, যারা আসতে পারেননি তারা তাকে ভালোবাসেন না। যে মানুষটিকে আমরা ভালোবেসেছি তিনি আমাদের সব অস্তিত্বের মধ্যে আছেন, থাকবেন এই বিশ্বাসে আমি বিশ্বাসী।

তিনি বলেন, নুরুল ইসলামের অন্যতম প্রতিষ্ঠান যুগান্তর। জন্ম থেকে আজ অবধি সত্যের সন্ধানে নির্ভিক। যুগান্তর কখনো আপোষ করে নাই। অন্যায়ের বিরুদ্ধে সব সময়ই প্রতিবাদী ছিল। বাংলাদেশে এমন কোনো দল নাই, সংগঠন নাই, প্রতিষ্ঠান নাই যার বিরুদ্ধে যুগান্তর কলম ধরে নাই, যদি সেই প্রতিষ্ঠান অন্যায় করে থাকে। প্রয়াত চেয়ারম্যান সাহেব বলেছেন, ‘সাদাকে সাদা কালোকে কালো বলো’। যুগান্তর সেটি মেনে সবসময়ই দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা করেছে এদেশে। আমি যুগান্তরের জন্মলগ্ন থেকে আছি, যে পর্যন্ত থাকব, প্রয়াত চেয়ারম্যানের নির্দেশনা মাফিক যুগান্তর সত্যের সন্ধানে থাকবে। সত্যের সন্ধানে পথ চলবে। অকারণে, অহেতুক, স্বেচ্ছাচারী, হঠকারী, হলুদ সাংবাদিকতা যুগান্তর প্রশ্রয় দেবে না। চটকদার সংবাদ প্রকাশ করে সাময়িক-স্বস্তা জনপ্রিয়তা অর্জনের সাংবাদিকতা যুগান্তর কখনোই বিশ্বাস করে না। যুগান্তরের পর ১৪টি পত্রিকা আত্মপ্রকাশ করেছে; একটার নাম বলেন যারা সততার সঙ্গে ব্যবসা করে টিকে আছে যুগান্তরের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে।  

বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত


কিছু গণমাধ্যমের অসুস্থ প্রতিযোগিতার দিকে ইঙ্গিত করে সাইফুল আলম বলেন, বর্তমান সময়ে অনেক অসততা ও অস্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা চালু হয়েছে এই সেক্টরে। যেগুলোর প্রতিবাদ সব সময় করেছেন নুরুল ইসলাম। যুগান্তর বের করার সময় তো অনেকেই প্রতিযোগিতা করতে ২৪ পৃষ্ঠা, ৩২ পৃষ্ঠার কাগজ বের করতেন। নুরুল ইসলাম কি পারতেন না, এ রকম ৩২ পৃষ্ঠার কাগজ বের করতে? টাকার কি অভাব ছিল যমুনা গ্রুপের? নুরুল ইসলামের দূরদর্শিতা ছিল বলেই সেই অস্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতায় হাঁটেননি। যারা হেঁটেছেন আজকে তারা হোঁচট খেয়ে পড়ে গেছেন।

যুগান্তর সম্পাদক বলেন, তিনি অনেক দূরদর্শী ছিলেন বলেই শূন্য থেকে সাফল্যের সর্বোচ্চ শিখরে উঠতে পেরেছেন। আসুন, আমরা সবাই মিলে উনার রেখে যাওয়া শিক্ষা আত্মস্থ করি এবং তার প্রতিষ্ঠানকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাই। আমরা যদি এসব কথা বিশ্বাস করি তাহলে দেখব যে চারপাশ পরিষ্কার হয়ে গেছে। দেখব চারদিকে একজন আদর্শের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি নুরুল ইসলাম। 

এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে সূচনা বক্তব্যে যুগান্তর সম্পাদক বলেন, আজ আমাদের শোকের দিন, বেদনার দিন। তবে এই শোককে শক্তিতে রূপান্তর করতে হবে। আজ আমাদের সাহসী হয়ে উঠার দিন। নুরুল ইসলাম ছিলেন অত্যন্ত সাহসী একজন মানুষ। তিনি সবসময় নিপীড়িত মানুষের পেছনে দাঁড়িয়েছেন। তিনি আমাদের প্রেরণার উৎস। আজকের এই দিনে আমরা তার মাগফিরাত কামনা করি, শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই।

মৃত্যু নয়, জীবনই যার শেষ কথা

সাইফুল আলম আরও বলেন, প্রয়াত নুরুল ইসলামের স্ত্রী আমাদের বর্তমান চেয়ারম্যান সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি ও সুযোগ্য সন্তানরা যমুনা গ্রুপকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। সহযোগী হিসেবে আমাদেরও কাজ হলো- তার রেখে যাওয়া প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। আজকের দিনে সেটাই হোক আমাদের সবচেয়ে বড় অঙ্গীকার।

অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য দেন যমুনা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ফাহিম আহমেদ ও যুগান্তরের উপসম্পাদক বিএম জাহাঙ্গীর। 

দোয়া ও আলোচনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুগান্তরের যুগ্ম সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকার, উপ সম্পাদক আহমেদ দীপু, এহসানুল হক ও আসিফ রশীদ, প্রধান বার্তা সম্পাদক আবদুর রহমান, যমুনা টিভির সিএনই তৌহিদুল ইসলাম, যুগান্তরের নগর সম্পাদক মিজান মালিক। 

যুগান্তরের প্রধান প্রতিবেদক মাসুদ করিমের সঞ্চালনায় এতে আরও উপস্থিত ছিলেন যুগান্তরের যুগ্ম বার্তা সম্পাদক জোহায়ের বিন কলিম ও কে এম আজিজুর রহমান, বিশেষ প্রতিনিধি শেখ মামুনুর রশীদ, মুজিব মাসুদ ও মাহবুব আলম লাবলু, বিজ্ঞাপন বিভাগের সিনিয়র জিএম আবুল খায়ের চৌধুরী, সহকারী সম্পাদক মাহবুব কামাল, স্পোর্টস ইনচার্জ পারভেজ আলম চৌধুরী, মফস্বল ইনচার্জ নাঈমুল করিম, অনলাইন ইনচার্জ আতাউর রহমান, ফিচার ইনচার্জ সেলিম কামাল, প্রশাসন বিভাগের প্রধান আবুয়াল হোসেন সবুজ, সার্কুলেশন ম্যানেজার আবুল হাসান ও নাজমুল হোসেন, প্রধান সম্পাদনা সহকারী আতিকুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ।

যুগান্তরের হিসাব বিভাগের প্রধান সাইফুল ইসলাম ও প্রেস ম্যানেজার নাজমুল হোসেন স্মৃতিচারণ করে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। 

এর আগে সকালে বনানীতে প্রয়াত নুরুল ইসলামের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে যুগান্তর পরিবার। পরে বেলা ১১ টায় যুগান্তর কার্যালয়ে প্রয়াত নুরুল ইসলামের ম্যুরালে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা ও সংক্ষিপ্ত দোয়া ও মোনাজাত করেন যুগান্তর কর্মীরা।  

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম