কতজনকে ‘ফাঁসিতে’ ঝুলিয়েছিলেন জল্লাদ শাহজাহান
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৪, ০৮:৫২ পিএম
ফাইল ছবি
টানা ৩২ বছর কারাগারে ছিলেন জল্লাদ শাহজাহান। এক সময় ছিলেন কুখ্যাত ডাকাত। পুলিশের কাছে ধরা পড়ে ১৯৯১ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ সাজা ভোগ করেন তিনি।
কারাবাসের সময় ২০০১ সালে সহযোগী জল্লাদ হিসেবে গফরগাঁওয়ের নূরুল ইসলামকে ফাঁসি দিয়ে শাহজাহান ‘জল্লাদ’ জীবনের সূচনা করেন।
যেভাবে মৃত্যু হলো জল্লাদ শাহজাহানের
এর পর কারাগারে কারও মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সময় হলেই ডাক পড়ত তার। টানা আট বছর এই কাজ করার পর কারা কর্তৃপক্ষ তাকে প্রধান জল্লাদের স্বীকৃতি দেন।
কারা সূত্রে জানা যায়, মোট ২৬ জনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছেন এই শাহজাহান।
তবে তার দাবি ছিল ৬০ জন। এই তালিকায় ছিল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৬ ঘাতক, ৬ যুদ্ধাপরাধী, কুখ্যাত সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদার, জঙ্গি নেতা বাংলাভাই, আতাউর রহমান সানী, শারমীন রীমা হত্যার আসামি খুকু মনি, ডেইজি হত্যা মামলার আসামি হাসান।
সেই জল্লাদ শাহজাহান ২০২৩ সালে কারামুক্ত হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। সবশেষ রোববার দিবাগত রাতে বুকে ব্যথা অনুভব হওয়ায় সোমবার ভোরে তাকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ডিএমপির শেরেবাংলা নগর থানার পরিদর্শক সজীব দে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বুকে ব্যথা অনুভব করায় ভোর ৫টার দিকে জল্লাদ শাহজাহানকে হেমায়েতপুর থেকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। হাসপাতালে আনার পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শাহজাহান ভূঁইয়া নরসিংদীর পলাশ উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের ইছাখালী গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবার নাম হাছেন আলী ভূঁইয়া। বিভিন্ন অপরাধে গ্রেফতারের পর শাহজাহান ১৯৯১ সালের ১৭ ডিসেম্বর মানিকগঞ্জ জেলা কারাগারে যান।
২০২৩ সালের ১৮ জুন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। ৭৪ বছর বয়সি শাহজাহান কারাভোগ শেষে মুক্তি পাওয়ার পর এক তরুণীকে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু কয়েক মাস সংসার কর পর তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়।
হত্যা ও অস্ত্র মামলায় শাহজাহান ভূঁইয়ার মোট সাজা হয়েছিল ৪২ বছর। তার মধ্যে তিনি ১০ বছর ৫ মাস ২৮ দিন রেয়াত পেয়েছেন। প্রায় ৩২ বছরের সাজা শেষে তিনি মুক্তি পান।