Logo
Logo
×

জাতীয়

এমপি আজিমকে যেভাবে হত্যা করা হয়, জানালেন তানভীর

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২৪, ০৩:০২ পিএম

এমপি আজিমকে যেভাবে হত্যা করা হয়, জানালেন তানভীর

ঝিনেদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের হত্যার বিষয়ে শিলাস্তি রহমানের পর এবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তানভীর ভূঁইয়া। 

কলকাতায় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিমকে খুনের ঘটনায় আরও এক আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তিনি হলেন খুলনা অঞ্চলের একসময়কার দুর্ধর্ষ চরমপন্থী সন্ত্রাসী শিমুল ভূঁইয়ার ভাতিজা তানভীর ভূঁইয়া। 

তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যায়, পেশাদার অপরাধী শিমুলের সঙ্গে তানভীরও এই খুনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত বলে স্বীকার করেছেন। তিনি আনোয়ারুলকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যায় অংশ নেন।

তানভীর ভূঁইয়া মঙ্গলবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন মেজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে জবানবন্দি দেন। এর আগের দিন সোমবার আদালতে জবানবন্দি দেন আরেক আসামি শিলাস্তি রহমান।

ডিএনএ স্যাম্পল দিতে ভারতে যাচ্ছেন এমপি আজিমের মেয়ে

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি থেকে উঠে এসেছে যে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তানভীর গত ৬ মে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে কলকাতায় যান। সেখানে সল্টলেক ও নিউ টাউনের মাঝামাঝি এলাকায় ত্রিশিব হোটেলে ওঠেন। তারা পরিকল্পনা অনুযায়ী এমপি আজিমকে নানাভাবে প্রলুব্ধ করে কলকাতায় নিয়ে যান।

এর আগে ৩০ এপ্রিল কলকাতায় পৌঁছান ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে চিহ্নিত আক্তারুজ্জামান ওরফে শাহীন। তার সঙ্গে কলকাতায় যান বান্ধবী শিলাস্তি রহমান এবং ভাড়াটে খুনি শিমুল ভূঁইয়া। তারা গিয়ে আক্তারুজ্জামানের ভাড়া করা ফ্ল্যাটে ওঠেন। শিলাস্তি নিজে খুনে জড়িত থাকার কথা স্বীকার না করলেও ঘটনার দিন তিনি ওই ফ্ল্যাটেই ছিলেন বলে জবানবন্দিতে বলেন। খুনের আগে কলকাতায় নিউমার্কেট থেকে পলিথিনসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম কেনা হয়। শিলাস্তির দাবি, তিনি এসব কেনার কারণ জানতে চেয়েছিলেন। তখন তাকে বলা হয়েছিল, এসব সামগ্রীর মান বাংলাদেশের চেয়ে ভালো, তাই কেনা হচ্ছে।

পুলিশ বলছে, আনোয়ারুল আজিম কলকাতায় যান ১২ মে। সেখানে বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাসায় ওঠেন। পরদিন তাকে প্রলুব্ধ করে নিউ টাউনের ওই ফ্ল্যাটে নেওয়া হয়। তখন ওই ফ্ল্যাটে উপস্থিত ছিলেন শিলাস্তি, শিমুল, তানভীর, তাদের সহযোগী জিহাদ হাওলাদার, সিয়াম হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, ফয়সাল আলী প্রমুখ। খুনের আগেই আক্তারুজ্জামান ঢাকায় চলে আসেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ওই ফ্ল্যাটেই সংসদ সদস্যকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে পরে লাশ টুকরা টুকরা করে গুম করা হয়। তানভীর নিজে বালিশ চাপা দেন বলে জবানবন্দিতে বলেন।

এ ঘটনায় বাংলাদেশে গ্রেফতার তিনজনের মধ্যে তানভীর ও শিলাস্তিকে জবানবন্দি দেওয়ার পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে। শিমুল ভূঁইয়া রিমান্ডে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে আছেন। জিহাদ নামের আরেক আসামি কলকাতায় গ্রেফতার আছেন। সিয়াম নামের আরেক আসামি নেপালে আটক আছেন।

সিয়ামকে ফিরিয়ে আনতে গত শনিবার ঢাকা থেকে পুলিশের একটি তদন্ত দল নেপালে যায়। গতকাল তারা দেশে ফিরলেও সিয়ামকে ফেরানোর বিষয়ে কোনো অগ্রগতির কথা জানাতে পারেনি।

এদিকে এই খুনের ঘটনায় যে ১০ জনের ব্যাংক হিসাবের তথ্য দিতে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তাদের মধ্যে তাজ মোহাম্মদ খান ও মো. জামাল হোসেনের বাড়ি ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে। তাজ মোহাম্মদ এলাকায় কোটচাঁদপুর পৌরসভার মেয়র শহীদুজ্জামানের বন্ধু হিসেবে পরিচিত। শহীদুজ্জামান সংসদ সদস্য খুনের পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামানের বড় ভাই। জামাল হোসেন হলেন আক্তারুজ্জামানের বন্ধু।

এ খুনের ঘটনায় খুলনার ফুলতলার আরও দুজনের নাম এসেছে। তাদের মধ্যে ফয়সাল আলী একসময় ট্রাকচালক ছিলেন। তিনি শিমুল ভূঁইয়ার সহযোগিতায় ২০২১ সালে ফুলতলা উপজেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হন বলে স্থানীয় সূত্র জানায়। আর মোস্তাফিজুর ছিলেন ইজিবাইকচালক। এই দুজনের অবস্থান সম্পর্কে পরিবারের সদস্যরা কিছু জানেন না।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম