ডিবি কার্যালয়ে এমপি আজিমের মেয়ে
কারা আমাকে এতিম করল, কেন করল, দেখতে চাই
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২২ মে ২০২৪, ০৭:১১ পিএম
বাবার হত্যাকারীদের বিচার চেয়ে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিমের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন বলেছেন, কারা তাকে এতিম করেছে, তাদের তিনি দেখতে চান।
চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়ে খুন হওয়া আজিমের মেয়ে ডরিন বুধবার দুপুরে ঢাকার মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে গিয়ে তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে হারুন–অর–রশীদের সঙ্গে কথা বলেন মুমতারিন ফেরদৌস।
এরপর সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমি যেন আমার বাবা হত্যার বিচার পাই। কারা এটা করেছে, কেন করেছে, এর সুষ্ঠু তদন্ত চাই। আমি এর শেষ দেখতে চাই যে তারা কেন করেছে? আমি দেখতে চাই, আমি বিচার চাই।
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল ১২ মে কলকাতায় যান। সেখানে গোপাল বিশ্বাস নামে এক পরিচিত ব্যক্তির বাসায় ওঠেন তিনি। পরদিন থেকে তার আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বুধবার জানিয়েছেন যে আনোয়ারুল আজিম ভারতে খুন হয়েছেন। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যমতে, বাংলাদেশিরাই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বাংলাদেশে এ ঘটনার তদন্তে যুক্ত ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন–অর–রশীদ বলেন, সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম বাংলাদেশের কিছু অপরাধীর হাতে নৃশংসভাবে খুন হয়েছেন। কেন এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে, তা বের করতে ভারতীয় পুলিশের সঙ্গে কাজ করছেন তারা।
তিনবারের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। রাজনৈতিক কারণে একটা বড় সময় তাকে আত্মগোপনে থাকতে হয়েছে বলে জানান মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস।
তিনি বলেন, একটা সময় ১৪টা বছর আমার বাবা বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় লুকিয়ে ছিলেন। তখন আমি ছোট। তখন আমার বাবাকে কাছে পাইনি। যখন আমার একটু বুঝ হয়েছে, তখন আমার বাবাকে কাছে পেয়েছি। এখন আমি বাবাকে হারিয়ে ফেললাম।
বাবার হত্যাকারী হিসেবে কাউকে সন্দেহ করেন কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মুমতারিন বলেন, আমি চিনি না; কিন্তু আমি চিনতে চাই। ডিবিপ্রধানকে বলতে চাই, আপনি চিহ্নিত করেন।
আনোয়ারুল আজিম ভারতে যাওয়ার আগে শেষবার তার সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানান মুমতারিন ফেরদৌস। সেই কথোপকথনের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাবা বলেছে, আম্মু আমি ইন্ডিয়ায় যাচ্ছি, দুই দিনের মধ্যে চলে আসব। তোমার দাঁতের ডাক্তার দেখানোর কথা, দুই দাঁতে সমস্যা। তোমাকে আমি নিয়ে যাব, তুমি যেও না। তোমার ডাক্তার ফোন করলে বলবে, আব্বু ইন্ডিয়া থেকে এসে নিয়ে যাবে। তুমি থাকো। আমি আসি।’ এই কথা বলে গেছেন আমাকে। তারপর আমার সঙ্গে আর কোনো কথা হয়নি।
নিজের পড়াশোনা এখনো শেষ হয়নি জানিয়ে মুমতারিন ফেরদৌস বলেন, বাবা অনেক স্বপ্ন নিয়ে আমাকে এখানে (ঢাকায়) পড়ার জন্য ভর্তি করেছেন। আমি পরীক্ষাও দিয়েছি। সামনে রেজাল্ট দেবে। বাবা বলে গেছেন, আমি ভারত থেকে এসে তোমার পরীক্ষার রেজাল্ট চেক করব।
তিনি বলেন, বাবা বাবাই। বাবার মতো কেউ হয় না।
এ ঘটনায় জড়িত বাকি ব্যক্তিদেরও গ্রেফতার করার দাবি জানিয়ে মুমতারিন ফেরদৌস বলেন, আসামি কিছু ধরা হয়েছে। আরও কিছু ধরার প্রক্রিয়া চলছে। আমি তাদের ধরতে বলেছি। তাদের ধরুক। তাহলে অবশ্যই কোনো না কোনো কিছু বেরিয়ে আসবে।