উন্মুক্ত স্থানে মাদক পোড়ানো
ঢাকার আদালতে উৎকট গন্ধে অস্বস্তিকর পরিবেশ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৩ মে ২০২৪, ০৯:৫৪ পিএম
ফাইল ছবি
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত কর্মদিবসগুলোতে সরগরম থাকে। বিচারপ্রার্থী, পুলিশ, আইনজীবীসহ লোকজনের ভিড়ের কারণে পা ফেলাই মুশকিল আদালত চত্বর ও আশপাশের এলাকায়।
এর মধ্যে বিভিন্ন মামলার আলামত হিসাবে জব্দ করা বিপুল পরিমাণ গাঁজা, ফেনসিডিলসহ সব রকম মাদক উন্মুক্ত স্থানে পোড়ানো হয়। মাদকের উৎকট গন্ধে সেখানে টেকা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এসব মাদক ধ্বংসে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন আইনজীবী, বিচারপ্রার্থী, পুলিশসহ সংশ্লিষ্টরা।
পুলিশ ও আদালত সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকা মহানগর এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে প্রতিদিন গাঁজাসহ বিপুল পরিমাণ মাদক জব্দ করে। কিছু নমুনা রেখে বাকি মাদক একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ঢাকা সিএমএম আদালতের হাজতখানার বাইরে ধ্বংস করা হয়। প্রতি সপ্তাহের রোব, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার দুপুরের পর গাঁজা পোড়ানো হয়।
এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে এ কার্যক্রম। তখন সিএমএম আদালতের আশপাশ ধোঁয়ায় অন্ধকার হয়ে যায়। এ সময় এ এলাকায় অবস্থানরত বিচারক, পুলিশ, আইনজীবী, পথচারী, বিচারপ্রার্থীসহ সবাই গাঁজার ধোঁয়া ও গন্ধে অসহায় হয়ে পড়েন। অনেকে বাধ্য হয়ে নাক ও মুখ ঢেকে রাখেন। পাশাপাশি আদালত অঙ্গনের পাশে অবস্থিত আবাসিক বাসা-বাড়িতে বসবাসকারীরাও গাঁজার গন্ধে অস্বস্তিতে পড়েন।
অন্যদিকে, আদালত অঙ্গণে অনেক ভবঘুরে ও নেশায় আসক্ত লোকজন মাদক পোড়ানোর সময় সেখানে অবস্থান করে। জানতে চাইলে তারা বলেন, গাঁজার গন্ধ ও ধোঁয়া তাদের ভালো লাগে।
বিচারপ্রার্থী আজিম আহম্মেদ এসেছিলেন মামলার শুনানিতে। আদালতে মাদক পোড়ানোর গন্ধে বিস্মিত হয়ে তিনি বলেন, এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে আদালত এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা কঠিন।
আশপাশের দোকানদাররা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সপ্তাহে দুই তিন দিন এখানে মাদক পোড়ানো হয়। কখনো চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে, কখনো চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মাদক চুলিতে পোড়ানো হয়। এ সময় ধোঁয়ার গন্ধে থাকা যায় না।
ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম শান্ত যুগান্তরকে বলেন, মাদক পোড়ানোর সময় ধোঁয়ায় মাথা ব্যথা, মাথা ঘোরা, চোখ জ্বালা করতে থাকে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল্লাহ আবু যুগান্তরকে বলেন, আইনজীবী, বিচারপ্রার্থীসহ সবার অস্বস্তি হয় সত্য। তবে কোর্টের পাশেই মাদক পোড়ানোর চুল্লি থাকার কথা। আমাদের আর কোনো জায়গা নেই। তাই বাধ্য হয়ে ওখানেই পোড়াতে হয়।