সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, আমাদের সমাজে অনেক শিশু এবং মানুষ নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতায় আক্রান্ত। শারীরিক, মানসিক, স্মায়ুবিক বিকাশজনিত। সেসব শিশু এবং ব্যক্তিদের সমাজের উন্নয়নের মূল ধারায় সম্পৃক্ত করতে হবে। যার পক্ষে যতখানি সক্ষম হয়ে ওঠা সম্ভব, স্বাবলম্বী হয়ে ওঠা সম্ভব তা করার জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বের বাংলাদেশ সরকার তাদের পাশে রয়েছে। সেই কাজটি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সরকার যেমন করেছে, পাশাপাশি বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থাও কাজ করে চলেছে।

মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশ শিশুকল্যাণ পরিষদ-বাশিকপ পরিচালিত প্রতিবন্ধী শিশু হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের সম্প্রসারিত নবনির্মিত ব্যারিস্টার আব্দুল গণি খান ও বাশিকপ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে ডা. দীপু মনি এসব কথা বলেন। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বাশিকপ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাখদুমা নার্গিস, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম, সহ-সভাপতি মসয়ূদ মান্নান, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মনিরুল আলম, যুগ্ম সম্পাদক নাসের ইকবাল যাদু, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান মজুমদার, সাংগঠনিক সম্পাদক সালাহউদ্দীন কুটু। 

উপস্থিত ছিলেন- কার্যনির্বাহী পরিষদ সদস্য হাসান মুর্তাজা, শেলী সেনগুপ্তা, প্রফেসর নাসিমুন নেসা, এটিএম মমতাজুল করিম প্রমুখ। ভিত্তিপ্রস্তুর স্থাপন শেষে ডা. দীপু মনি হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডগুলো পরিদর্শন করেন।

ডা. দীপু মনি বলেন, শিশুকল্যাণ পরিষদ ১৯৫৭ সাল থেকে তাদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। জাতীয়, স্থানীয় পর্যায়ে অনেকেই এরকম মানবকল্যাণমূলক করছে। সরকারের নিজের যেমন উদ্যোগ আছে ঠিক একইভাবে এটিও আমাদের দায়িত্ব বেসরকারি বা ব্যক্তিগত পর্যায়ে যারা আছেন তাদের কাজেরও সমন্বয় সাধনের জন্য সহযোগিতা করা। এজন্যে সরকার সবসময় তাদের পাশে আছে।

তিনি বলেন,  শিশুকল্যাণের নতুন ভবন হতে যাচ্ছে। আরও বড় পরিসরে তারা সেবা দিবেন। এতে আরও কার্যকরভাবে সেবা দিতে পারবেন। এজন্য তাদের প্রতি অনেক শুভকামনা। তেমনি আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে তাদের প্রতি সবসময় আমাদের সাধ্যমতো সহযোগিতা থাকবে। 

তিনি আরও বলেন, আমরা চাই সারা দেশে শিশুরা যে কোনো প্রতিবন্ধতায় থাকুক না কেন তাদের যতখানি সম্ভব স্বাভাবিক জীবনের কাছাকাছি নিয়ে আসা যায়। যতখানি সম্ভব তাদের স্বাবলম্বী করা যায়। সেই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। 
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যে সমতাভিত্তিক রাষ্ট্র তৈরি করতে চেয়েচিলেন, তার সারা জীবনের যে সংগ্রাম ছিল তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা সেই কাজটি করছেন। এই বাংলাদেশে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সেই সমাজ হবে, যেখানে কেউ পিছিয়ে থাকবে না।

অনুষ্ঠানে বাশিকপ সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম বলেন, বাংলাদেশ শিশুকল্যাণ পরিষদ ১৯৫৭ সালে যাত্রা শুরু করে। এই প্রতিষ্ঠানটি শিশুদের নিয়ে কাজ করছে। মূলত এই মুহূর্তে বাংলাদেশের ৪০টি সংগঠন, শিশু-কিশোর সংগঠন, নারী সংগঠন এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত এবং সারা দেশে তাদের শাখা, কর্মী, সদস্য রয়েছে। শিশুকল্যাণ পরিষদের মূল কাজ পঙ্গু এবং প্রতিবন্ধী শিশুদের নিয়ে। শিশুদের প্রতিভা বিকাশে, প্রতিভার উন্মেষে। বর্তমানে এখানে প্রায় ৭০টি শয্যা নিয়ে  একটি হাসপাতাল চালু আছে। আগামীতে আমরা পুরোনো ভবনের পাশে আরেকটি নতুন ভবন করছি। এ কাজটি আরও বিস্তৃত হবে, সম্প্রসারিত হবে। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশের শিশুদের বিশেষ করে পঙ্গু শিশুদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা এবং বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর সঙ্গে তাদের একাত্ম করা, একসঙ্গে পথচলার ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে। আমরা মনে করি, এটির একটি সামাজিক দিক আছে। সামাজিক দায়বদ্ধতা রয়েছে। মানবসেবার কল্যাণে বাংলাদেশে শিশুকল্যাণ পরিষদ অনবরত কাজ করে যাচ্ছে।