ইয়াবা সেবন করে শিশু-বৃদ্ধদের পেটাতেন মিল্টন: হারুন
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৬ মে ২০২৪, ০৪:২৪ পিএম
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দার ইয়াবা সেবন করে টর্চার সেলে শিশু ও বৃদ্ধদের পেটাতেন। মিল্টনকে নিয়ে আরও লোমহর্ষক ঘটনার তথ্য পেয়েছি। তদন্ত চলছে, তদন্ত শেষে সেসব জানানো হবে।
সোমবার দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ বিষয়ে জানান।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশীদ বলেন, মিল্টন সমাদ্দার মাদকসেবী এবং তিনি ইয়াবা সেবন করেন। নিজেই ইয়াবা সেবনের কথা স্বীকার করেছেন। তার টর্চার সেলে অত্যাচারের মাত্রা ছিল অমানবিক। একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তি ছাড়া শিশু ও বৃদ্ধদের এভাবে কেউ পেটাতে পারে না। তার পেটানোর চিত্র এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
তিনি বলেন, তথাকথিত মানবতার ফেরিওয়ালা সেজে বিভিন্ন মানুষকে প্রতারিত করে বৃদ্ধ, অনাথ শিশু ও মানসিক ভারসাম্যহীনদের পুঁজি করে বিভিন্ন জায়গা থেকে টাকা কামাচ্ছিলেন মিল্টন। এই টাকা মিল্টনের অ্যাকাউন্টে জমা হলেও অসহায় মানুষের জন্য তিনি খরচ করেননি। তিনি হাসপাতালে না নিয়ে নিজেই চিকিৎসা দিচ্ছিলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে হারুন বলেন, তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে সবগুলো অভিযোগ তদন্ত করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে ছাড় দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।
তিনি বলেন, চিকিৎসকের স্বাক্ষর ও সিল নকল করে জাল মৃত্যু সনদ দেওয়ার বিষয়টি ধীরে ধীরে স্বীকার করা শুরু করেছেন মিল্টন।
বুধবার (১ মে) রাতে রাজধানীর মিরপুরে অভিযান চালিয়ে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা-মিরপুর বিভাগের একটি টিম। পরে রাতে তার বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় বিভিন্ন অভিযোগে তিনটি মামলা হয়। সেসব মামলায় মিল্টনকে ৩ দিনের রিমান্ড দেন আদালত।
রহস্যময় মিল্টন সমাদ্দারের ভয়ংকর সব অপকর্মের বিষয়ে তদন্ত করছে ডিবি মিরপুর বিভাগের একাধিক টিম। গ্রেফতারের পর রিমান্ডে নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তাকে। তবে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করছেন বলে তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে জাল-জালিয়াতির বিষয়টি স্বীকার করেছেন মিল্টন। তবে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রির বিষয় অস্বীকার করেছেন। শনিবার রিমান্ডের তৃতীয় দিনে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়ার কথাও জানিয়েছেন ডিবির তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, মিল্টনের আশ্রমে কোনো নিবন্ধিত ডাক্তার নেই। তিনি নিজে ডাক্তার সেজেছেন। প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক কিশোর বালাকে সঙ্গে নিয়ে প্রতারণামূলকভাবে আশ্রিতদের বিভিন্ন চিকিৎসা করেন, সেবা দেন, পাশাপাশি এ নিয়ে ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইমোতে প্রচার করতেন। এসব ভিডিও ১ কোটি ২০ লাখ ফ্রেন্ড-ফলোয়ারের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়ে টাকা উপার্জন করতেন মিল্টন।