একাত্তরে হারিয়ে যাওয়া মাকে অবশেষে ফিরে পেলেন দুই মেয়ে। মাকে হারানো দুই মেয়ে হচ্ছেন— সেলিমা ও তাসলিমা। মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিতে গিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় পরিবার। এক ট্রাকচালকের কাছে আশ্রয় পান তারা। যুদ্ধের পর বাবাকে ফিরে পেলেও মাকে হারিয়ে ফেলেন তারা। কিন্তু হাল ছাড়েননি, ছোটবেলার ছবি পোস্ট করতে থাকেন ফেসবুকে। কয়েক বছরের চেষ্টায় পাকিস্তানে খোঁজ মেলে মায়ের।
শুক্রবার রাতে শাহজালাল বিমানবন্দরে নামেন মা চমনারা বেগম। ৫৪ বছর পর মাকে কাছে পেয়ে বাকরুদ্ধ পরিবার।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময়। দুই মেয়ে উম্মে সেলিমা ও তাসলিমা বাবা-মায়ের সঙ্গে পাড়ি জমান ভারতের শরণার্থী শিবিরে। সেখান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় পুরো পরিবার। পরে এক ট্রাকচালক দেশে ফিরিয়ে এনে লালন-পালন করেন তাদের। স্বাধীনতার পর তারা বাবাকে খুঁজে পেলেও মাকে পাননি।
মায়ের খোঁজে কয়েক বছর ধরে ছোটবেলার কিছু ছবি ফেসবুকে পোস্ট দেন তারা। দেশের পাশাপাাশি পাকিস্তানের বিভিন্ন গ্রুপেও ছবি পোস্ট করা হয়। এসব ছবি নজরে আসে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমের। তাদের কল্যাণেই ২০২২ সালে খোঁজ মেলে হারানো মা চমনারা বেগমের। সব জটিলতা পেরিয়ে শুক্রবার রাতে সন্তানের কাছে ফেরেন হারিয়ে যাওয়া মা।
সেলিমা ও তাসলিমার বাবা বলেন, ‘২০১৪–১৫ সাল থেকে চমনারা বেগমের খোঁজ শুরু করি। ২০২২ সালে তাকে আমরা পাই। তবে ২০২৪ সালে, এই প্রথম মেয়েদের সঙ্গে মায়ের মুখোমুখি দেখা হলো।’
৫৪ বছর পর মাকে পেয়ে খুশিতে আত্মহারা পরিবার। ভাষার সমস্যা থাকলেও ঠিকই বুঝে নিচ্ছেন ভালোবাসার ভাষা।
চাকরির সুবাদে পাকিস্তানে আসা-যাওয়া হতো সেলিমা ও তাসলিমার বাবা দিনাজপুরের বাসিন্দা মোসলেম উদ্দিনের। সেই সময় বিয়ে করেন পাকিস্তানের বাসিন্দা চমনারা বেগমকে। পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পাকিস্তানে চলে যান চমনারা বেগম।