উপজেলা নির্বাচন: বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত তারা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০২:২৯ পিএম
উপজেলা নির্বাচন: বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত তারা
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোটে আগামী ৮ মে। সোমবার ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। এদিন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা সরে দাঁড়ানোয় তিন উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ কয়েকজন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
জানা গেছে, নোয়াখালীর হাতিয়া ও ফেনীর পরশুরাম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। এছাড়া বান্দরবানে উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে রোয়াংছড়ি উপজেলায় আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী চহ্লামং মারমা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হচ্ছেন।
হাতিয়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে তিনজন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। তারা হলেন- স্থানীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীর ছেলে আশিক আলী, স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস ও জাতীয় পার্টির নেতা মুশফিকুর রহমান। সোমবার আশিক আলী ছাড়া বাকি দুজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। হাতিয়া উপজেলা পরিষদের বাকি দুটি পদে একজন করে প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন।
প্রার্থিতা প্রত্যাহারের বিষয়ে মুশফিকুর রহমান বলেন, তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। ফলে তার পক্ষে মাঠে দৌড়ঝাঁপ করে নির্বাচন সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। তাকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরেও যেতে হবে। তাই তিনি তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন।
ফেনীর পরশুরাম উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রার্থীর মধ্যে দুজন গতকাল সোমবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। এতে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন কেবল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ফিরোজ আহমেদ মজুমদার। প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন উপজেলা পরিষদের তিনবারের চেয়ারম্যান ও পরশুরাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন মজুমদার ও উপজেলার বক্সমাহমুদ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আবুল হাসেম চৌধুরী।
ভাইস চেয়ারম্যান পদের চারজনের মধ্যে তিনজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। বর্তমানে একক প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন পরশুরাম উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক নুর মোহাম্মদ শফিকুল হোসেন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন ইকরামুল করিম মজুমদার, নজরুল ইসলাম ও আবদুল রসুল মজুমদার।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেত্রী শামসুন নাহার পাপিয়া। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন নিলুফা ইয়াসমিন।
বান্দরবানে উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে রোয়াংছড়ি উপজেলায় আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী চহ্লামং মারমা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। সোমকার চারজন প্রার্থীর মধ্যে তিনজন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করায় চহ্লামং মারমা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন বলে রিটার্নিং এস এম কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন জানিয়েছেন।
এদিকে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একজন করে প্রার্থী থাকায় তিনজনই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার পথে। সোমবার তিন পদে অন্য সব প্রার্থী তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিন প্রার্থী বিজয়ের পথে রয়েছেন।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মো. সেলিম মিয়া ও ফাহিমা আক্তার নামে দুইজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এদের মধ্যে ফাহিমা আক্তার সোমবার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএম আতাউর রহমান (আতাহার) ও মো. মনিরুজ্জামান মনির মনোনয়নপত্র দালিখ করলেও মো. মনিরুজ্জামান মনির প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। ফলে বিএম আতাউর রহমান (আতাহার) একক প্রার্থী হওয়ায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিজয়ের পথে।
একইভাবে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আয়শা সিদ্দিকা ও শিফাতুন হক অহনা দুই জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও শিফাতুন হক অহনা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। ফলে এই পদেও আয়শা সিদ্দিকা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার পথে।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা আহমেদ আলী বলেন, শেষ দিনে শিবচর উপজেলায় কয়েকজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। যে কারণে তিন পদে তিন জন প্রার্থী থাকায় ভোটগ্রহণ হবে না। তিনজনই বিজয়ের পথে। তবে এখনই আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেওয়া না গেলেও তারাই মূলত নির্বাচিত।
সোমবার প্রার্থিতা প্রত্যাহার শেষে প্রথম ধাপে ভোটের লড়াইয়ে মাঠে টিকেছেন ১ হাজার ৬৯৩ জন প্রার্থী।
ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রথম ধাপে ১৫০ উপজেলার ভোটে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১ হাজার ৮৯১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। এদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৬৯৬ জন প্রার্থীনয়নপত্র জমা দিলেও ৯৫ জন প্রার্থী প্রত্যাহার করেছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছেন ৬০১ জন প্রার্থী।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭২৪ জনের মধ্যে ৭৯ জন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করায় ৬৪৫ জন ভোটের মাঠে রয়েছেন। এছাড়া মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৭১ জনের ২৪ জন প্রার্থী প্রার্থিতা প্রত্যাহার করায় থাকলেন ৪৪৭ জন।
আজ মঙ্গলবার প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। অর্থাৎ আজ থেকেই প্রার্থীরা প্রচারে নামছেন। আগামী ৮ মে এই ধাপের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।