আমরা ২ হাজার জন আর আপনারা মাত্র ৫০ জন: বিচারককে পিপি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৪২ পিএম
খুলনা মেট্রোপলিটন আদালতের বিচারক তরিকুল ইসলামকে নিয়ে হেয়প্রতিপন্নমূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় প্রধান বিচারপতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী এই বিচারক।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই পিপিকে আগামী ৭ মে সশরীরে হাজির হয়ে ঘটনার বিষয়ে বাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার ঘটনায় কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
বুধবার বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিতভাবে এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: প্রধান বিচারপতির কাছে বিচার চাইলেন বিচারক
এদিকে গত ৩১ মার্চ বিচারক তরিকুল ইসলাম আদালতে অশালীন আচরণের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে পিপি জহিরুল ইসলাম পলাশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রধান বিচারপতি বরাবর চিঠি দেন।
ওই চিঠিতে ভুক্তভোগী বিচারক বলেন, একটি মামলার শুনানিকে কেন্দ্র করে আদালত কক্ষে আইনজীবী জহিরুল ইসলাম পলাশের সঙ্গে কিছুটা বাগ্বিতণ্ডা হয়। এ কারণে ন্যায়বিচারের স্বার্থে আমি মামলাটি না শুনে চিফ মেট্রোপলিটন আদালতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিই।
তখন জহিরুল ইসলাম পলাশ বলে উঠেন, ‘আপনি আমাকে না শুনেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলেন?’ আমি বললাম, ‘এটা কোর্টের প্রসিডিউর, যেহেতু আপনার সঙ্গে কিছুক্ষণ আগে আমার কিছুটা বাগ্বিতণ্ডা হলো।’
চিঠিতে আরও বলা হয়, তখন প্রত্যুত্তরে জহিরুল ইসলাম পলাশ উচ্চস্বরে বলেন, ‘আপনার চেয়ে আমি এই বারে আগে আসছি। আমি প্রসিডিউর ভালো বুঝি। আপনার ব্যবহার সবচেয়ে খারাপ। আপনি অনিয়ম করেন। আমরা খুলনা বারে ২০০০ জন আর আপনারা মাত্র ৫০ জন। আমি আপনাকে চিনি। আপনার বাড়ি চিতলমারী। আমার বাড়িও চিতলমারী। আমি... (অমুক) এর ছেলে। আপনাকে আমি ভালো করে চিনি। আপনার বিরুদ্ধ আমি চিফ জাস্টিসের কাছে যাব। আপনি আমাকে ইংলিশ শোনান। বারের প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারিতে কাজ হবে না। এমন অনেক বিচারক ছিলেন যারা এখান থেকে বিদায় নিয়ে যাওয়ারও সময় পায় নাই, এটা মনে রাইখেন। আপনি আপনার ফিউচারের জন্য প্রস্তুত থাকেন।’
‘উচ্চস্বরে এমন বক্তব্য প্রদান করার পর তিনি আমার এজলাস ত্যাগ করেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে বাদীপক্ষের আইনজীবীর এমন আচরণে বিব্রতবোধ করায় বিজ্ঞ আইনজীবী মামলাটি চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, খুলনা মহোদয়ের কাছে বিচার ও নিষ্পত্তির জন্য প্রেরণ করি’- চিঠিতে উল্লেখ করেন বিচারক।
অন্যদিকে প্রধান বিচারপতি জহিরুল ইসলাম পলাশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আবেদনটি হাইকোর্টে পাঠিয়েছিলেন। এরই ধারাবাহিকতাই বুধবার শুনানি শেষে পিপি জহিরুল ইসলামকে তলব করেন হাইকোর্ট।