পদ্মা সেতুতে হাঁটলেন ভুটানের রাজা। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
প্রমত্তা পদ্মার দুই তীরকে যুক্ত করা বাংলাদেশের গর্বের পদ্মা সেতু ঘুরে দেখলেন ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী রজব আলী জানান, ভুটান রাজার গাড়িবহর বুধবার সকাল ৯টা ১০ মিনিটে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্ত দিয়ে পদ্মা সেতুতে প্রবেশ করে। মাঝে সেতুতে নেমে কিছু সময় কাটিয়ে তিনি শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে পৌঁছান ৯টা ৩০ মিনিটে।
এরপর ফিরতি যাত্রায় মাত্র ৫ মিনিটে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু পেরিয়ে আবার মাওয়ায় ফেরে গাড়িবহর। ২০২২ সালের ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বহু প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন। পরদিন থেকে সেতুটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।
অর্থায়ন নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে টানাপড়েনের পর নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত এই সেতুকে সরকারের তরফ থেকে দেখানো হয় বাংলাদেশের সক্ষমতার স্মারক হিসেবে। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও এ সেতু ঘিরে রয়েছে আলোচনা আর কৌতুহল।
নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, ভুটানের রাজা মাওয়ায় সেতুর সার্ভিস এরিয়া-২ পৌঁছালে সেতু কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসন তাদের অভ্যর্থনা জানান। সেখানে সেতু সম্পর্কে ব্রিফ করেন প্রকল্প পরিরচালক শফিকুল ইসলাম।
জাজিরার পথে রওনা হওয়ার পর সেতুর মাঝামাঝি ১৮ নম্বর পিলারের কাছে গাড়ি থামিয়ে নেমে পড়েন রাজা। ১০ মিনিট তিনি সেখানে অবস্থান করেন এবং বসন্তের রোদের মধ্যে পায়ে হেঁটে পদ্মার রূপ উপভোগ করেন।
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত এ সময় ভুটানের রাজার সঙ্গে ছিলেন। পদ্মা সেতুতে রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুকের কয়েকটি ছবি ফেসবুকে শেয়ার করেছেন প্রতিমন্ত্রী।
ভুটানের রাষ্ট্রদূত রিনচেন কুয়েনসিলসহ রাজার সঙ্গে আসা দেশটির প্রতিনিধি দলের সদস্যরাও পদ্মা সেতু ভ্রমণের সময় উপস্থিত ছিলেন। ভুটানের রাজার আগমনে পুরো সড়ক পথে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সোমবার ঢাকা পৌঁছান ভুটানের রাজা। সোমবার বিকালে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন এবং তাদের উপস্থিতিতে তিনটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর এবং একটি চুক্তি নবায়ন হয়।
মঙ্গলবার স্বাধীনতা দিবসের সকালে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভুটানের রাজাও সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। বিকালে বঙ্গভবনে স্বাধীনতা দিবসের রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে অংশ নেন ভুটানের রাজা ও রানি।
বুধবার পদ্মা সেতু দেখার পর নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে স্পেশাল ইকোনমিক জোনও পরিদর্শন করেন রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক। বৃহস্পতিবার কুড়িগ্রামে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন শেষে বিকেলে সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে তিনি বাংলাদেশ ত্যাগ করবেন।