Logo
Logo
×

জাতীয়

সরকারের পরিবেশ ও জলবায়ু নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভূমি মন্ত্রণালয় কাজ করছে: মন্ত্রী

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০২ মার্চ ২০২৪, ০৪:৫৯ পিএম

সরকারের পরিবেশ ও জলবায়ু নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভূমি মন্ত্রণালয় কাজ করছে: মন্ত্রী

ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ বলেছেন, সরকারের পরিবেশ ও জলবায়ু নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভূমি মন্ত্রণালয় কাজ করছে। এর মধ্যে রয়েছে ল্যান্ড জোনিং প্রকল্প ও বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে প্রোগ্রাম। এসব উদ্যোগের মাধ্যমে টেকসই ভূমি ব্যবহার চর্চা উৎসাহ ও প্রয়োগের মাধ্যমে দেশে পরিবেশগত ক্ষতি কমিয়ে আনা হবে।

শনিবার খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান অনুষদ আয়োজিত দুদিন ব্যাপী পরিবেশবিষয়ক দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু অ্যাকাডেমিক ভবনের ‘সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে’ আয়োজিত এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য- ‘টাইম ফর ন্যাচার অ্যান্ড ন্যাচারাল রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট’ অর্থাৎ, প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনার জন্য এখনই সময়।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ইমেরিটাস ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা এবং জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভূমিমন্ত্রী বলেন, ল্যান্ড জোনিং প্রকল্পের আওতায় আমরা মৌজা ও প্লটের ওপর ভিত্তি করে একটি ডিজিটাল ম্যাপ ও ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা প্রণয়ন করব। এর মধ্যে জমির গুণমান মূল্যায়নের ভিত্তিতে কৃষি, আবাসিক, বাণিজ্যিক, পর্যটন এবং শিল্প বিকাশের মতো নির্দিষ্ট ব্যবহারে জমিকে শ্রেণিবদ্ধ করা হবে।

তিনি বলেন, ল্যান্ড জোনিং প্রকল্পের তথ্য-উপাত্ত ও ম্যাপ কাজে লাগিয়ে, ‘ভূমি জোনিং ও সুরক্ষা আইন’-এর মাধ্যমে অপরিকল্পিত নগরায়ন, আবাসন, গৃহ নির্মাণ, উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এবং শিল্প-সড়ক নির্মাণ রোধ করা হবে। এড়া ভূমির শ্রেণি বা প্রকৃতি বজায় রেখে পরিবেশ রক্ষা ও খাদ্যশস্য উৎপাদন অব্যাহত রাখা হবে। 

মন্ত্রী আরও বলেন, ল্যান্ড জোনিং প্রকল্পের ডাটা ও ম্যাপ ব্যবহার করে কৃষি জমি, বন, টিলা, পাহাড়, নদী, খাল ও জলাশয় রক্ষাসহ ভূমির পরিকল্পিত ও সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে। পরিকল্পিত জোনিংয়ের মাধ্যমে ভূমির ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং ভূমির সর্বোত্তম ব্যবহারে রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা হবে।

এ সময় ল্যান্ড জোনিং প্রকল্পটি ‘প্রকৃতি এবং প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা’য় অপরিহার্য হিসেবে পরিগণিত হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

এর আগে বক্তব্যের শুরুতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ভূমিমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের বিজয়ের পর বঙ্গবন্ধু সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে দূষণ মোকাবিলা এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন, উদ্যোগ নিয়েছিলেন দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুধাবন করেছিলেন টেকসই পদক্ষেপ না নিলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে স্মার্ট সোনার বাংলা অর্জন করা সম্ভব হবে না। তাই তিনি বাংলাদেশকে জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণায়নের বিরূপ প্রভাব থেকে রক্ষা এবং দেশে দূষণমুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে বলিষ্ঠ নীতি ও পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। তিনি ২০১১ সালে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও উন্নয়নকে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার আনার উদ্যোগ গ্রহণ করেন এবং গ্রহণ করেন দীর্ঘ মেয়াদী ব-দ্বীপ পরিকল্পনা।

সম্মেলনের প্লেনারি স্পিকার ড. আইনুন নিশাত বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি এখন কঠোর বাস্তবতা। এটা স্পষ্ট যে, এখন হেমন্তে (শুষ্ক মৌসুম) বৃষ্টি হয় এবং শীতকালে যতটা ঠান্ডা হওয়া উচিত ততটা হয় না। এছাড়া খুলনা অঞ্চলে লবণাক্ততা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। 

তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে খাদ্য নিরাপত্তা এখন বিশ্বের অধিকাংশ দেশের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বাংলাদেশের কৃষি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতিতে পরিবর্তন বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়া তিনি বাস্তুতন্ত্র ও সেগুলো থেকে আহরিত সুবিধাগুলো সংরক্ষণ, পুনরুদ্ধার ও টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন বলেন, টেকসই বাস্তুতন্ত্রের জন্য বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক সম্পদ অপরিহার্য; যা স্বাস্থ্য, জীবিকা এবং আশ্রয়ের ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারে। তিনি এ সময় খাদ্য নিরাপত্তা ও দারিদ্র্য বিমোচনে প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনায় গবেষণার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

উল্লেখ্য, এবারের সম্মেলনে বাংলাদেশ, ভারত, ভূটান, নেপাল, সংযুক্ত আরব আমিরাত, পোল্যান্ড, ইতালি এবং জার্মানি থেকে থেকে ২৪৫ জন দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ, বিজ্ঞানী সশরীরে ও ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করার কথা রয়েছে। এবার অন্তত ৪৫ জন বিদেশি অতিথি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছেন। সম্মেলনে ১২৮টি ওরাল প্রেজেন্টেশন, ৪৮টি পোস্টার প্রেজেন্টেশন, ৬টি কি-নোট পেপারসহ ১৮৩টি গবেষণা নিবন্ধ উপস্থাপন করা হবে। সম্মেলন শেষে একটি সুপারিশমালা প্রস্তুত করা হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম