সেমিনারে বক্তারা
এলডিসি উত্তরণের পর ইনসুলিনের দাম ৮ গুণ বাড়বে
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:৩৩ পিএম
স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পর বেশ কিছু ওষুধের ক্ষেত্রে বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধা হারাবে বাংলাদেশ। এর মধ্যে ডায়াবেটিসের ইনসুলিনসহ নতুন নতুন রোগের ওষুধ তৈরিতে ৮ গুণ পর্যন্ত দাম বাড়বে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘ডব্লিউটিও নলেজ শেয়ার’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. মুস্তাফিজুর রহমান।
বেসরকারি সংস্থা র্যাপিডের চেয়ারম্যান ড. এমএ রাজ্জাকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান। বক্তব্য দেন ইআরডির সাবেক সিনিয়র সচিব শরিফা খান, অর্থনীতিবিদ ড. এম আবু ইউসুফ, মুস্তফা আবিদ খান প্রমুখ।
ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে (এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন) যাচ্ছি আমরা। সাম্প্রতিক সময়ে বেশকিছু পণ্যে প্রণোদনা কমানো হয়েছে। এটা এলসিডি উত্তরণের প্রস্তুতি। তবে উত্তরণের পর করণীয় নিয়ে এখনই ভাবতে হবে। কেননা তখন অনেক সুবিধা থাকবে না।
বিশেষ করে ২৬ সালের নভেম্বরে উত্তরণের পরপরই বেশ কিছু ওষুধের মেধাস্বত্ব সুবিধা ভোগের জন্য মূল্য পরিশোধ করতে হবে। এতে ওষুধের প্রকারভেদে দাম বেড়ে যাবে। বিশেষ করে ইনসুলিনের প্যাটেন্ট কিনে ব্যবহার করলে দাম বাড়বে কমপক্ষে ৮ গুণ। এজন্য আগাম প্রস্তুতি না থাকলে সমস্যায় পড়তে হবে। তিনি বলেন, এলডিসি দোহা সম্মেলনে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ নিদের্শনা ছিল। এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পর কৃষিতে বড় ধরনের চুক্তি দরকার।
ড. মসিউর রহমান বলেন, এলডিসি গ্রাজুয়েশন নিয়ে মূলত প্রযুক্তি, কৃষি, মৎস্য আহরণ ও স্থানান্তর এবং ব্যবসার শুল্ক সুবিধা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে।
এগুলোর বর্তমান ও আগামীর বাস্তবতা এক নয়। এক সময় এক টাকায় ১০ থেকে ১২টা ইলিশ পাওয়া যেত। তখন মাছ ধরা অনেক সহজ ছিল, খরচও কম হতো। কিন্তু সেই ইলিশ এখন ব্যয়বহুল হয়ে উঠছে। এটি সামুদ্রিক নয়, নদীর মাছ হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
তিনি বলেন, এলডিসি বিষয়ে পেছনে হাঁটব না, সামনের দিকে আগাতে চাই। তবে নতুন করে খাপ খাওয়াতে হবে। আগে প্রস্তুতি শুরু করা দরকার ছিল। ফলে ইতোমধ্যে কিছুটা সময় লস হয়েছে। তার মতে, এলডিসি গ্রাজুয়েশনে সময় বাড়ানোর কোনো বিবেচনা আপাতত নেই। কারণ এলডিসি থেকে বের হলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমাদের দেশের দাম বাড়বে।
শরিফা খান বলেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) যেসব সুযোগ রয়েছে তা ২০২৯ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। তবে ওষুধের ক্ষেত্রে থাকবে না। এছাড়া তৈরি পোশাক খাতে বর্তমান ৬৬ শতাংশ সুবিধা নাও থাকতে পারে।