ঢাকার প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়
ভোটারদের নির্বিঘ্ন ভোটদান নিশ্চিতের দাবি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৩০ পিএম
জাতীয় নির্বাচনের শেষ দিন পর্যন্ত সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশ এবং ভোটারদের নির্বিঘ্ন কেন্দ্রে যাওয়া নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন ঢাকার বিভিন্ন আসনের প্রার্থীরা।
তারা বলেছেন, পোলিং এজেন্টরা যাতে ভোটকেন্দ্রে থাকতে পারে সে ব্যবস্থাও করতে হবে। পাশাপাশি প্রচারের ক্ষেত্রে যাতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকে এবং বিএনপির চলমান সহিংসতা যাতে নির্বাচন বাধাগ্রস্ত না করতে পারে সে দিকটি দেখতে হবে।
বৃহস্পতিবার ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা এসব কথা বলেন। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবন অডিটোরিয়ামে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে ঢাকা জেলা ও মহানগরীর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মতামত শোনা হয়েছে।
সূত্র জানায়, ঢাকা-১ থেকে ২০ আসন পর্যন্ত মোট ১৫৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম। এতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল, নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর এবং নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে বাইরে বেরিয়ে ঢাকা-১ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী, সাবেক প্রতিমন্ত্রী এবং দলটির কো-চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন।
তিনি জানান, সবার আগে আমাকে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়। আমি আমার বক্তব্য তুলে ধরে বলেছি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপক্ষে হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারও একই কথা বলেছেন। আমিও চাই শেষ পর্যন্ত যেন ভোটের পরিবেশ ভালো থাকে।
সভা থেকে বলা হয়েছে, যে কোনো অভিযোগ থাকলে আমরা যেন জানাই, তা হলে তারা ব্যবস্থা নিতে পারবেন। পাশাপাশি আমাদের শক্তিশালী এজেন্ট দিতে বলেছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত পরিবেশ ভালো। আশা করছি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত যেন ভালো পরিবেশ থাকে।
ঢাকা-৬ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাঈদ খোকন বলেছেন, নির্বাচন বানচাল করতে যারা হরতাল, অবরোধ ও অসহযোগ আন্দোলন করছে তাদের দমন করতে হবে। কোনো প্রকার নাশকতা, সহিংসতা যাতে ভোটারদের মধ্যে শঙ্কার সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের দিন এবং পরও যেন পরিবেশ ভালো থাকে। নির্বাচন কমিশন আশ্বস্ত করেছে।
ঢাকা-২ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাড. কামরুল ইসলাম বলেছেন, ট্রেনে আগুন দিয়ে এভাবে মানুষ মেরে ফেলার ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। এদের বিরুদ্ধে কঠোর ভূমিকা দরকার।
ঢাকা-১০ আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী চিত্রনায়ক ফেরদৌস বলেন, মানুষ ভোটের জন্য জেগে উঠেছে। জনগণের মধ্যে আস্থা ও বিশ্বাস বেড়েছে। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল ১৬ ডিসেম্বরে রঙিন পোস্টার ও ব্যানার করেছি। সেগুলো তুলে ফেলতে বলা হয়েছে। সেটি আমি করব।
ঢাকা-১৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী জেড আই রাসেল বলেন, ভোটের পরিবেশ শেষ পর্যন্ত যেন ভালো থাকে আমরা সেটিই চাই।
ঢাকা-১৬ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ বলেন, জনগণ ব্যাপক উৎসাহ নিয়েই ভোট দিতে যাবে। আমাদের কেন ভোটারদের কেন্দ্রে নিতে হবে? তারাই তো যাবে। বিএনপি কোনো দল হলো? তারা যে আন্দোলন করছে এটা কোনো আন্দোলনই নয়।
ঢাকা-১১ আসনের বাংলাদেশ কংগ্রেস দলের প্রার্থী মিজানুর রহমান বলেন, আমার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আমরা চাই সুষ্ঠু পরিবেশ।
ঢাকা-৮ আসনের মুক্তিজোটের প্রার্থী রাসেল কবির বলেন, পল্টন এলাকায় ভোট চাইতে গেলে মানুষ বলছে আপনার ভোট আপনি দিতে পারবেন কিনা। আমি এই প্রশ্নটি সিইসির কাছে জানতে চেয়েছি। কিন্তু তিনি কোনো জবাব দেননি।
জাতীয় পার্টি জেপির প্রার্থী সৈয়দ নাজমুল হুদা বলেন, নির্বাচনের দায়িত্ব ইসি না নিয়ে আমাদের নিতে বলা হচ্ছে। এটা কীভাবে সম্ভব। পোলিং এজেন্টদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
ঢাকা-১১ আসনের বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের সাদিকুন নাহার বলেন, আমাদের শক্তিশালী এজেন্ট রাখতে বলা হচ্ছে। এটা ঠিক নয়।
ঢাকা-৭ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী বলেন, আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ভোটাররা যাতে ভোট দিতে পারে সেটি নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা রাখতে হবে। প্রায় একইরকম বক্তব্য রাখেন ঢাকা-৯ আসনের গণফ্রন্টের প্রার্থী তাহামিনা আক্তার, ঢাকা-১১ আসনের গণফ্রন্ট প্রার্থী শেখ মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা-১১ আসনের বিএনএফ প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার সাবিকুন নাহার খান ঊর্মি, ঢাকা-৮ আসনের তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী এমএ ইউসুফ প্রমুখ।