তরুণ সমাজের ওপর সোশ্যাল মিডিয়ার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে: নিমকো মহাপরিচালক

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০১ নভেম্বর ২০২৩, ১০:১৫ পিএম

কর্মশালায় বক্তব্য রাখছেন জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের (নিমকো) মহাপরিচালক নূরুন নাহার হেনা। ছবি: সংগৃহীত
তরুণ সমাজের ওপর সোশ্যাল মিডিয়ার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের (নিমকো) মহাপরিচালক নূরুন নাহার হেনা।
বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে সামাজিক গণমাধ্যমের গুরুত্ব অনিস্বীকার্য। তবে, সাম্প্রতিক বিভিন্ন জরিপে তরুণ সমাজের ওপর সামাজিক গণমাধ্যমের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এই ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে পরিত্রাণের জন্য পারিবারিক পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধির বিকল্প নেই। বাংলাদেশে গণমাধ্যমে এ বিষয়ে সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান যত আয়োজন করা হবে ততই এর উপকার আমাদের সমাজে বর্তিত হবে। একই সঙ্গে অভিভাবকদেরও যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে।
তিনি বলেন, মা যদি সন্তানকে ভালোবাসা তৈরি করতে পারেন তাহলে সেই সন্তান অন্য জায়গায় ভালোবাসা খোঁজে বেড়াবে না। সন্তান আদর্শবান হবে। সন্তান হবে মানুষের মতো মানুষ। সন্তানকে সোশ্যাল মিডিয়া বা অন্য কোনো আসক্তি থেকে বিরত রাখতে পারিবারিক বন্ধন শক্তিশালী হওয়া জরুরি।
‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যুব সমাজের আসক্তি রোধে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালায় মঙ্গলবার তিনি এসব কথা বলেন।
কর্মশালায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল|
জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. মো. মারুক নাওয়াজের সঞ্চালনায় কর্মশালায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)এর মিডিয়া বিভাগের অ্যাডিশনাল এসপি মো. আবু ইউছুফ।
কর্মশালায় জানানো হয়, বর্তমানে বাংলাদেশে ৪ কোটি ৩২ লাখ ৫০ হাজার মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করেন। আর ইউটিউবে ভিডিও কনটেন্ট দেখেন ৩ কোটি ৪৪ লাখ মানুষ। এদের মধ্যে বেশিরভাগই ১৩ থেকে ৩৪ বছর বয়সী। বিশেষ করে শর্ট ভিডিওর মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে আসক্ত করছে। এই ভিডিওগুলোর বেশিরভাগ উদ্দেশ্যই এড রেভিনিউ বা টাকা উপার্জন। এসব ভিডিওর কারণে প্রচুর সময় নষ্ট করছে যুব সমাজ। এসব ভিডিও আসক্তির কারণে বিশেষ করে পড়াশোনা ও কাজে ব্যাঘাত হচ্ছে। অতিমাত্রায় শর্ট ভিডিও দেখার কারণে তরুণরা পরীক্ষার ভালো রেজাল্ট করতে পারছে না, অনেকেই ডিপ্রেশন বা হতাশায় ভুগছে।
আলোচকরা বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অতিমাত্রায় আসক্তির ফলে যুবসমাজের শারীরিক, মানসিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ ব্যাহত হচ্ছে। সামাজিক গণমাধ্যমে অতি আসক্তির ফলে যুবসমাজের মূল্যবোধের অবক্ষয় আগামী দিনের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়েছে।
কর্মশালায় বক্তারা নৈতিক মূল্যাবোধের উৎকর্ষ সাধনের মাধ্যমে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে গণমাধ্যমের আরো কার্যকর ভূমিকার ওপর গুরুত্বরোপ করেন।
জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের উপপরিচালক মোহাম্মদ আবু সাদেক কর্মশালার পরিচালক, উপপরিচালক সুমনা পারভীন ও সহকারী পরিচালক সাইফুন্নাহার কর্মশালার সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন।