নারীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহূর্তে সাবেক ডিসি, যা বলছেন জনপ্রশাসন সচিব
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০২৩, ০৬:৫৮ পিএম
বরগুনার সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. হাবিবুর রহমানের সঙ্গে এক নারীর অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। দুটি ক্লিপের একটি ৬ মিনিট ১৭ সেকেন্ডে এবং অপর ক্লিপে ১ মিনিট ১০ সেকেন্ডের ওই ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, বিছানায় শুয়ে ডিসির সঙ্গে গল্প করছেন ওই নারী। এ সময় ডিসির কাছে থাকা ৫০ হাজার টাকা দামের ফোন তিনি উপহার হিসেবে পাওয়ার কথা বলেন।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর দপ্তরে গিয়ে জানা গেছে তিনি অফিসে নেই।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, একজন নারীর সঙ্গে বরগুনার সাবেক ডিসি হাবিবুর রহমানের আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। বিষয়টি পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হচ্ছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি এবং ঘটনা সত্যি হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনে কর্মরত কর্মকর্তা কর্মচারি এবং সাধারণ মানুষ আলোচনা সমালোচনা করছেন। প্রশাসন সম্পর্কে মানুষ তীর্যক সমালোচনা করছে। সোমবার বিকাল থেকে ভিডিওটি ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইউটিউবে ছড়িয়ে পড়ে।
রোববার সন্ধ্যার পর বেশ কয়েকটি ফেসবুক পেজে ভিডিওটি আপলোড হলে তা মুহূর্তের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছড়িয়ে পড়ে। তবে অনেকই ভিডিওটির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
বিষয়টি নিয়ে যুগ্মসচিব মো. হাবিবুর রহমানের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে জানা গেছে তিনি রুমে নেই। দুই ঘণ্টা পর গিয়ে জানা গেছে তিনি স্যারের রুমে কাজ নিয়ে ব্যস্ত। তার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও ধরেননি। হোয়াটঅ্যাপে ফোন দিলেও তিনি ধরেননি। মেসেজ দিলেও তিনি সাড়া দেননি।
জানা যায়, ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর বরগুনার ডিসি পদে যোগ দেন হাবিবুর রহমান। আড়াই বছর দায়িত্ব পালনের পর ২০২৩ সালের ৯ জুলাই উপ-সচিব পদে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে পদায়ন করা হয়। গত ৪ সেপ্টেম্বর উপ-সচিব পদ থেকে যুগ্ম-সচিব পদে পদোন্নতিও পান হাবিবুর রহমান।
এদিকে বরগুনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এক কর্মচারি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ওই নারী প্রায়ই বরগুনা ডিসির বাংলোয় আসতেন এবং রাত্রিযাপন করতেন। আমরা স্যারের আত্মীয় স্বজন মনে করতাম। তারা এক সঙ্গে ভ্রমণে যেতেন। ওই নারীকে সঙ্গে নিয়ে ডিসি বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতেও যেতেন। শুনেছি তারা বিমানে ভ্রমণ করতেন। তবে স্পীডবোর্ডে ঘুরতে দেখেছি অনেকবার।
ওই কর্মচারি আরও জানান, হাবিবুর রহমানের নারী ও টাকার লোভ ছিল। তিনি এই জেলা থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। যাওয়ার কয়েকদিন আগে নদীবন্দরের জমিতে ব্যবসায়ীদের ৪০টি দোকান ভেঙে দিয়ে দুই মাসের মধ্যে আবার কয়েক কোটি টাকা ঘুষ নিয়ে একসনা ডিসিআর দিয়েছেন।
উল্লেখ্য,২০১৯ সালের শেষের দিকে জামালপুরের সাবেক ডিসি আহমেদ কবির তার এক অফিস সহায়ক নারীর আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে সে সময় খুব সমালোচনা হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। পরে তাকে জেলা প্রশাসক পদ থেকে অপসারণ করা হয়। তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।