সরকার বদলাতে হলে বিএনপিকে নির্বাচনে আসতেই হবে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০২৩, ১০:০৩ পিএম
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, নির্বাচন ছাড়া বাংলাদেশে সরকার বদল করার কোনো উপায় নেই। তাই বিএনপিকে নির্বাচনে আসতেই হবে।
বুধবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ঢাকায় সফররত যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনের আগের পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করতে আসা মার্কিন প্রতিনিধিরা কিছু বিষয় জানতে চেয়েছেন। নির্বাচনের সময় কোনো সহিংসতা হতে পারে বলে শঙ্কা করছি কিনা; তাও জানতে চেয়েছেন তারা। এছাড়া বিভিন্ন বিষয় জিজ্ঞাসা করেছেন।
তিনি বলেন, আমরা বলেছি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও ১৯৮১ সাল পর্যন্ত দেশে আসতে দেওয়া হয়নি। তিনি এখানে আসার পর তাকে ১৯ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে এখন আর সেই অবস্থা নেই। আমাদের দেশের মানুষ কোনো ধরনের সংঘর্ষ চায় না।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা একটি সহিংসতামুক্ত ও সন্ত্রাসমুক্ত বাংলাদেশ গড়েছি। এখানে এখন শান্তির সুবাতাস বইছে। তিনি দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনিও চান, নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে একটি সুন্দর নির্বাচন হোক। স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা তিনিই প্রবর্তন করেছেন। কাজেই এখন দুর্নীতির কোনো কারণ নেই। এসব কথা জানানো হয়েছে তাদের।
মন্ত্রী বলেন, তারা বলেছেন-যারা নির্বাচনে প্রার্থী হবেন; তাদের নিরাপত্তা আমরা দিতে পারব কিনা? তারা জিজ্ঞাসা করেছেন, বিরোধী দল নির্বাচনে এলে সঠিকভাবে তারা প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবেন কিনা।
তিনি বলেন, আমরা বলে দিয়েছি, নির্বাচনের সময় রিটার্নিং কর্মকর্তা সর্বময় ক্ষমতাধর ব্যক্তি। তার নেতৃত্বে সেই এলাকার নির্বাচন হবে এবং হয়। এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এমনকি প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের ক্ষমতার কথাও বলা হয়েছে তাদের।
তিনি বলেন, কোনো প্রার্থী যদি অনিরাপত্তাবোধ করেন তাহলে আমরা কী করব তা জানতে চেয়েছেন তারা (মার্কিন প্রতিনিধিরা)। কোনো দল যদি মনে করে তাদের নির্বাচনি কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, তখন কী হবে?
এ নিয়ে প্রশ্ন করেছেন পর্যবেক্ষকরা।
মন্ত্রী বলেন, আমরা বলেছি, সহিংসতামুক্ত নির্বাচন পরিচালনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ, বিজিবি, কোস্টগার্ড ও আনসার যারা নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করে থাকে। তাদের এরই মধ্যে অনেকগুলো নির্বাচন পরিচালনার অভিজ্ঞতা আছে। এ নির্বাচন কমিশন এরই মধ্যে পাঁচ হাজার ৩০০টি নির্বাচন পরিচালনা করেছে। নির্বাচনের সময় নিরাপত্তা বাহিনী নির্বাচন কমিশনের অধীন থাকে। এখানে পুলিশ সুপ্রশিক্ষিত, কীভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে হয়, তা তারা জানে। আগের মতো সহিংসতা আমাদের দেশে হয় না।
তিনি বলেন, এখন আমরা সহিংসতামুক্ত। কাজেই এখানে কোনো অসুবিধা হবে বলে আমরা মনে করি না। আগে ’৮০ ও ৯০-এর দশকে সহিংসতা হলেও এখন দেশে এমন কিছু ঘটে না বলে আমরা জানিয়েছি। আমরা স্পষ্ট বলে দিয়েছি, সংবিধান অনুসারে নির্বাচন পরিচালনা করা হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা মনে করি, আমাদের উপমহাদেশে নির্বাচন এলেই উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। পর্যবেক্ষকদের বলা হয়েছে, আমাদের গণমাধ্যম একদম স্বাধীন। তারা যে কোনো সংবাদ যে কোনো সময় ছাপিয়ে দেয়। সেই ব্যাপারে আমরা কারও কণ্ঠরোধ করি না। আমাদের তিন হাজারেরও বেশি দৈনিক সংবাদপত্র রয়েছে। এরপর রয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। কাজেই এখানে ভোট কারচুপি করে কেউ পার পাবে বলে আমার মনে হয় না। আর সেই ধরনের মনোবৃত্তি আমাদের রাজনৈতিক দলের এখন আর নেই। আশা করি, নির্বাচন কমিশন সুন্দর একটি নির্বাচন উপহার দেবে।