‘অসময়ে দু-একটি কোকিলের ডাকে বসন্ত আসে না’
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০২৩, ০৪:৫৬ পিএম
ফাইল ছবি
সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ বলেছেন, অসময়ে দু-একটি কোকিলের ডাকে যেমন বসন্ত আসে না, তেননি দু-একজন বিশ্বাসঘাতকের কারণে সব কিছু বদলে যাবে না। সরকারপ্রধানের বিরুদ্ধে যত অপপ্রচার হোক তাতে বাংলার মানুষ বিভ্রান্ত হবে না।
বুধবার সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অগ্রগতি, অর্জন ও কার্যক্রম অবহিতকরণ বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
সচিবালয় বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) এ সেমিনারের আয়োজন করে। সংগঠনের সভাপতি ফসিহ উদ্দীন মাহতাবের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাসুউদুল হকের সঞ্চালনায় সেমিনারে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. খায়রুল আলম সেখ, সমাজসেবা অধিদপ্তরে মহাসচিব (ডিজি) ড. আবু সালেহ মো. মোস্তফা কামালসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৫ বছরে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় বাস্তবায়িত জনকল্যাণমূলক সেবা খাতে বাজেটের আকার ১২ গুণ বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে সমাজকল্যাণমন্ত্রী বলেন, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে বয়স্ক ভাতা খাতে জনপ্রতি মাসিক ২৫০ টাকা হারে ২০ লাখ প্রবীণ ব্যক্তির জন্য বাজেট বরাদ্দ ছিল ৬০০ কোটি টাকা। জনপ্রতি ৬০০ টাকা হারে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৫৮ লাখ প্রবীণ ব্যক্তির জন্য বার্ষিক বাজেট উন্নীত হয়েছে ৪ হাজার ২০৫ কোটি টাকায়।
তিনি বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশের দরিদ্রপ্রবণ ১১২টি উপজেলাকে শতভাগ বয়ষ্কভাতা কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে আরও ১৫০টি উপজেলাকে শতভাগ বয়স্ক ভাতার আওতাভুক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে ২৬টি উপজেলায় ভাতা পাওয়ার উপযোগী শতভাগ লোক ভাতার আওতায় এসেছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর বর্তমান মেয়াদ পর্যন্ত সময়ে প্রতিটি কর্মসূচিতে বাজেট, উপকারভোগীর সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়েছে বলেও জানান সমাজকল্যাণমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা নারী ভাতা খাতে জনপ্রতি মাসিক ২৫০ টাকা হারে ৯ লাখ বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা নারীর জন্য বাজেট বরাদ্দ ছিল ২৭০ কোটি টাকা। তা মাথাপিছু মাসিক ৫৫০ টাকা হারে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২৫ লাখ ৭৫ হাজার লোকের জন্য বাজেট বরাদ্দ ১৭১১ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে।
নুরুজ্জামান আহমেদ বলেন, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে প্রতিবন্ধী ভাতা খাতে জনপ্রতি মাসিক ২৫০ টাকা হারে ২ লাখ প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জন্য বাজেট বরাদ্দ ছিল ৬০ কোটি টাকা। বর্তমানে মাথাপিছু ভাতা মাসিক ৮৫০ টাকা হারে বৃদ্ধি পেয়ে ২৯ লাখ জনের জন্য বাজেট ২৯৭৮ কোটি টাকা করা হয়েছে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে প্রতিবন্ধী শিক্ষা-উপবৃত্তি খাতে ১৩ হাজার প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর জন্য বাজেট বরাদ্দ ছিল ৬ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১ লাখ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর জন্য বাজেট বরাদ্দ হয়েছে ১১২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।
মন্ত্রী বলেন, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ভাতাভোগীদের পাশ বইয়ের মাধ্যমে দেওয়া হতো বলে অনেক ভাতাগ্রহীতা প্রাপ্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত হতো। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫-১৬ অর্থবছর থেকে সব ভাতা ভাতাভোগীর নিজস্ব ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে দেওয়ার নিয়ম চালু করা হয়েছে বলে ভাতাভোগীদের প্রাপ্য হিস্যা নিশ্চিত হয়েছে।
২০১৮ সালের জুলাই মাস থেকে জিটুপি পদ্ধতিতে ভাতা দেওয়ার পাইলট প্রোগ্রাম শুরু করা হয়। ২০২১ সালের ১৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর জিটুপি পদ্ধতিতে সরাসরি ভাতাভোগীদের হাতে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ভাতা বিতরণ উদ্বোধন করেন। বর্তমান সরকারের মেয়াদকালে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জন্য এটি ছিল একটি মাইলফলক অর্জন। যার ফলে বর্তমানে শতভাগ ভাতাভোগী মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে নির্বিঘ্নে ঘরে বসে নিয়মিতভাবে ভাতা পাচ্ছেন। জিটুপি পদ্ধতিতে ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রায় ১ কোটি ৫ লাখ ভাতাভোগী ভাতা পেয়েছেন।