কোথায় আছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০২:১১ এএম
সদ্য বরখাস্ত হওয়া ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া সপরিবারে ঢাকার মার্কিন দূতাবাসে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
শুক্রবার বিকালে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগার কারণে তিন মেয়ে ও স্ত্রীসহ মার্কিন দূতাবাসে আশ্রয় নেন এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া।
এ সময় তিনি বলেছিলেন— ‘আমি মার্কিন দূতাবাসে আজকে পুরো পরিবারসহ আশ্রয়ের জন্য বসে আছি। বাইরে পুলিশ। আজকে আমাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে...। আমার ফেসবুক মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে গত ৪-৫ দিন ধরে অনবরত হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে। এই সরকার ভালোবাসার প্রতিদান দেয় জেল দিয়ে। আমার আমেরিকার কোনো ভিসা নেই। স্রেফ ৩টা ব্যাগে এক কাপড়ে আমার তিন মেয়েসহ কোনোক্রমে বাসা থেকে বের হয়ে এখানে বসে আছি। দোয়া করবেন আমাদের জন্য।
বর্তমানে লালমাটিয়ার নিজ বাসাতেই অবস্থান করছেন সদ্য বরখাস্ত হওয়া ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া।শনিবার দুপুরে লালমাটিয়ার সি-ব্লকের বাসায় গেলে ডিএজি এমরানের দেখা মেলেনি। এ ভবনের একটি ফ্ল্যাটে তিন মেয়ে এবং স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, শুক্রবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার সময় প্রায় ১৫ থেকে ২০ জন পুলিশ এবং ডিবি সদস্য এমরানের বাসায় যান। এ সময় তারা আধা ঘণ্টারও বেশি সময় সেখানে অবস্থান করেন।
বরখাস্ত হওয়া ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়ার সঙ্গে কথা বলতে যুগান্তরের পক্ষ থেকে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
তার পারিবারিক একটি সূত্র জানায়, তিনি শনিবার সারা দিনই বাসায় অবস্থান করছিলেন। কারও সঙ্গে যোগাযোগ করেননি।
পুলিশের তেজগাঁও জোনের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) এএইচএম আজিমুল হক যুগান্তরকে জানান, আমরা তাকে নজরদারিতে রেখেছি। তার নিরাপত্তাজনিত কোনো সমস্যা নেই। তিনি নিজ বাসায়ই অবস্থান করছেন। আমাদের কাছে অতিরিক্ত কোনো নিরাপত্তা চাননি।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ আগস্ট নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে বর্তমান বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত ও সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য প্রধানমন্ত্রী বরাবর ১০০ জনেরও বেশি নোবেল বিজয়ীসহ ১৬০ জনেরও বেশি বিশ্বনেতা একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করেন।
পরিপ্রেক্ষিতে ওই চিঠির প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন সংগঠন, প্রতিষ্ঠান ও পেশাজীবীদের পক্ষ থেকে। এরই ধারাবাহিকতায় অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেওয়ার কথা রয়েছে— এমন দাবি করে গত ৪ সেপ্টেম্বর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ।
সেই সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘যে বিবৃতি দিয়েছেন ১৬০ জন নোবেল বিজয়ী এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন, আমি ওনাদের বিবৃতির সঙ্গে একমত। আমি মনে করি, অধ্যাপক ড. ইউনূস একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তার সম্মানহানি করা হচ্ছে এবং এটা বিচারিক হয়রানি। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এ বিবৃতিতে সই করব না।’
পর দিন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, চিঠিতে সই না করার বক্তব্য দিয়ে এমরান শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন।
তারই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার এমরান আহম্মদ ভূঁইয়াকে তার পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ।
রাষ্ট্রপতির আদেশে এ অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এর পর দুপুরেই নিজ বাসভবন ছেড়ে সপরিবারে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসে আশ্রয় নেন এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া।