বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপে ঢাবি শিক্ষক সমিতির উদ্বেগ
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ৩১ আগস্ট ২০২৩, ০৯:১৮ পিএম
বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার ওপর হস্তক্ষেপে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
বৃহস্পতিবার ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা স্বাক্ষরিত এক প্রতবাদলিপিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
প্রতবাদলিপিতে বলা হয়- ২৮ আগস্ট বেশ কয়েকজন নোবেল বিজয়ী, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী এবং সুশীল সমাজের সদস্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একটি খোলা চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে তারা বাংলাদেশের শ্রম আইনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান মামলা স্থগিত করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের বিচার ব্যবস্থার ওপর এমন অযাচিত হস্তক্ষেপের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।
এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৪ (৪) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাংলাদেশের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণরূপে স্বাধীনভাবে বিচারকার্য পরিচালনা করে থাকে। কাজেই এ ধরনের চিঠির মাধ্যমে তারা অনৈতিক, বেআইনি ও অসাংবিধানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার ওপর হস্তক্ষেপ করেছেন বলে আমরা মনে করি। আরও উদ্বেগের বিষয় যে, চিঠিতে স্বাক্ষরকারী ব্যক্তিরা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের স্বার্থরক্ষায় আগ্রহী হলেও শ্রমিকদের মানবাধিকার ও আইনি সুরক্ষার বিষয়ে সম্পূর্ণভাবে নিশ্চুপ থেকেছেন। এ ধরনের বিবৃতি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং বাংলাদেশের আইনে শ্রমিকদের অধিকার সংক্রান্ত বিধানাবলীর সম্পূর্ণ পরিপন্থি।
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়- শ্রম আইন ২০০৬-এর ধারা ২৩৪ অনুযায়ী গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে শ্রমিক কর্মচারী কল্যাণ তহবিল গঠন না করা এবং ধারা ৪ (৭) ও ৪ (৮) অনুযায়ী শ্রমিকদের চাকরিতে স্থায়ী না করার অভিযোগ করেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরাই। অধিকন্তু অন্য একটি মামলায় বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ চূড়ান্তভাবে প্রমাণিত হয়েছে। আমাদের জানামতে, খোলা চিঠিতে যেসব সম্মানিত ব্যক্তির নাম রয়েছে, তাদের দেশেও শ্রমিকদের অধিকার ও রাষ্ট্রীয় বিধিবিধানকে সর্বোচ্চ সম্মান ও গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। তাছাড়া একই চিঠিতে বাংলাদেশের গণতন্ত্র এবং নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে যে ধরনের মন্তব্য করা হয়েছে, তা স্বাধীন সার্বভৌম একটি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সরাসরি হস্তক্ষেপের শামিল।
মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশের জনগণ এ ধরনের অবমাননাকর, অযাচিত ও বেআইনি হস্তক্ষেপ কোনোভাবেই মেনে নেবে না। এ ধরনের বিবৃতির পেছনে গোপন কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়।