Logo
Logo
×

জাতীয়

সিটিটিসি’র সংবাদ সম্মেলন

৫০ শতাংশ জমিতে তৈরি করা হয় উগ্রবাদ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৩, ০৮:৪৭ পিএম

৫০ শতাংশ জমিতে তৈরি করা হয় উগ্রবাদ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

মৌলভীবাজারের পাহাড়ি অঞ্চল কুলাউড়ায় ৫০ শতাংশ জমি কিনে গড়ে তোলা হয়েছিল উগ্রবাদ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। কথিত ইমাম মাহমুদের আহ্বানে উদ্বুদ্ধ হয়ে ‘ইমাম মাহমুদের কাফেলা’ নামে সংগঠিত হয়ে উগ্রপন্থিরা সেখানে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল। 

শনিবার কুলাউড়ার কর্মধা ইউনিয়নের টাট্টিউলি গ্রামের দুর্গম আস্তানায় অভিযান চালিয়ে সশস্ত্র জিহাদের প্রস্তুতি নেওয়া ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রোববার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান।

আসাদুজ্জামান বলেন, কথিত এই ইমাম মাহমুদ, ইমাম মাহাদীর অগ্রবর্তী হিসাবে অবতীর্ণ হয়েছেন বলে তারা বিশ্বাস করে। আর এ ইমাম মাহমুদ ভারতীয় উপমহাদেশে জিহাদে নেতৃত্ব দেবেন। গ্রেফতারদের উদ্বুদ্ধ করতে ইমাম মাহমুদ বলেছেন, যারা এ জিহাদে অংশ নেবেন, তারা সবাই পরকালে পুরস্কার পাবেন। জিহাদের প্রস্তুতির প্রথম ধাপ হলো গৃহত্যাগ তথা হিজরত। তাই জিহাদের প্রস্তুতির উদ্দেশে তারা সবাই ঘটনাস্থলে মিলিত হয়েছিল।

সিটিটিসি প্রধান বলেন, গ্রেফতার ব্যক্তিরা জানিয়েছে জামিল নামে কথিত ইমাম মাহমুদের এক অনুসারী কুলাউড়ার টাট্টিউলি গ্রামে প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের জন্য জমি কেনেন। 

সাম্প্রতিক সময়ে যশোর, সিরাজগঞ্জ, জামালপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন বয়সিদের নিখোঁজের তথ্য অনুসন্ধান শুরু করে সিটিটিসি। 

নিখোঁজদের মধ্যে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরের ডা. সোহেল তানজীম রানা, নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী ফাহিম (যশোর থেকে নিখোঁজ), জামালপুর থেকে এরশাদুজ্জামান শাহিনসহ আরও অনেকের বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়। 

এসব তথ্যের ভিত্তিতে অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে গত ৭ আগস্ট রাজধানীর দারুসসালাম থানাধীন গাবতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঝিনাইদহ, মেহেরপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সপরিবারে গৃহত্যাগ করে আসা ৬ নারী, ৪ পুরুষসহ ১০ জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়। 

এ সময় তাদের সঙ্গে থাকা ৮ শিশুকে হেফাজতে নেওয়া হয়। গাবতলী থেকে গ্রেফতার ব্যক্তিরা জানায়, কথিত ইমাম মাহমুদের আহ্বানে উদ্বুদ্ধ হয়ে তারা মোট ৬টি পরিবার হিজরতের জন্য গৃহত্যাগ করেছে। এদের মধ্যে মেহেরপুরের ৫টি পরিবার এবং ঝিনাইদহের একটি পরিবার রয়েছে।

সিটিটিসি জানায়, গত ১২ আগস্ট মধ্যরাতে রাজধানীর মিরপুর মডেল থানাধীন মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ এলাকায় অভিযান চালিয়ে একই গ্রুপের সদস্য মো. ফরহাদকে গ্রেফতার করা হয়। 

সিটিটিসির জিজ্ঞাসাবাদে ফরহাদ জানায়, মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় লোকচক্ষুর আড়ালে কথিত ইমাম মাহমুদের নেতৃত্বে বেশকিছু অনুসারী আস্তানা গেড়েছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে আমরা ‘অপারেশন হিলসাইড’ অভিযান চালিয়ে ৪ পুরুষ এবং ৬ নারীসহ মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করি। তারা সেখানে সশস্ত্র জিহাদে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। 

অভিযানে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক, ৫০টি ডেটোনেটর, রামদাসহ বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র, কমান্ডো রুট, পাঞ্চিং ব্যাগ ও বিভিন্ন প্রশিক্ষণ সামগ্রী, উগ্রবাদী বই, নগদ তিন লাখ ৬১ হাজার টাকা এবং স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি বলেন, মিরপুর মডেল থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে রোববার আদালতে পাঠানো হয়। 

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিটিটিসি প্রধান বলেন, ইমাম মাহমুদ বলে যার কথা বলা হচ্ছে তিনিসহ এ সংগঠনের অন্য সদস্যরা আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। আমরা তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছি। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম